আবু তাহের সরফরাজের ৫ ছড়া

প্রকাশিত : নভেম্বর ২৫, ২০১৮

ইচ্ছে

ইচ্ছে যদি
       মেলত পাখা  
             চোখের পাতায়
                     যেমন আঁকা  
                           উড়তে দ্যাখা চিল
                               আকাশ থেকে
                          চাঁদটা খসে
                   পড়ছে দেখে  
            লিখতে বসে  
দিতাম ছড়ায় মিল।

ঝাঁক বাঁধা ওই
          হাঁসের দলে
                 যেতাম আমি
                        খেলাচ্ছলে
                              কাপলা ফোটা বিল
                                     তেপান্তরের
                                মাঠ পেরিয়ে
                         দেশান্তরের  
                  দেশ বেড়িয়ে  
দিতাম ঘরে খিল।

ইচ্ছে হলো ঘুড়ির মতো

ইচ্ছে হলো ঘুড়ির মতো
আকাশ ছুঁতে চায়
ঘর পালিয়ে মনটা ছোটে
মেঘ-পাহাড়ের গাঁয়।

মেঘের দেশে ছবির মতো
ভাসতে থাকে মন
ইচ্ছে হলো কল্পনা, তার
নেই কোনো বন্ধন।

বইয়ের পড়া ছবির খাতা
কিংবা খেলার গাড়ি
ইচ্ছেগুলো সব ছাড়িয়ে
ভিনগ্রহে দ্যায় পাড়ি।

সূর্য ঘিরে নয়টি গ্রহ
ঘুরছে কীসের টানে?
ইচ্ছে হলো মুহূর্ত-যান
ছুটতে পারে ধ্যানে।

খেলা

ফড়িং ধরে লাভ কী বলো
উড়ুক সে তার মতো
ফিনফিনে তার ছোট্ট ডানা
কোরো না ভাই হত।

ঘাসবনে সে খেলছে, খেলুক
পিছ নিও না তার
খেলতে পারো তুমিও যে
খেলা তো সব্বার।  

ইচ্ছে হলে আঁকতে পারো
ওই ফড়িঙের ছবি
ফড়িং না হোক, হাবিজাবি
আঁকতে পারো সবই।

চারপাশে যা দেখছ সবই
খেলছে আপন খেয়ালে
শেয়াল যেমন চাটতে থাকে
মুরগি এঁকে দেয়ালে।

ভাইবোন

ঘাসের বনে ফুল ফুটেছে
ছোট্ট হলুদ ফুল
এই ফুলটা দেখতে যেন
একটি কানের দুল।

রোদের রঙে সবুজ বন
করতেছে ঝিলমিল
আপুর কানে খুব মানাবে
পরলে শাড়ি নীল।

লাল হলুদের নকশি ঘুড়ি
নীল আকাশের দেশে
ওই ঘুড়িটা দেখছে সবই
মেঘের পাহাড় ঘেঁষে।

মেঘপাহাড়ে ঘুড়ির সাথে
ছুটছে কেন মন?
ভাইটিকে সে সঙ্গে নেবে
ভাবছে বড় বোন।

বাই বাই

বাঁশি শুনে বাজখাঁই
বাঘ বলে, বাই বাই।

বাজারে বাকসো
বেচে কেনে একশো
জলপাই।

ঝাঁকা নিয়ে মাঝরাতে
বাঘ ফেরে বাড়ি
বাঘিনীর ঘুম ভেঙে
গেলে দ্যায় আড়ি।
আড়াআড়ি শুয়ে তারা
ফোঁসফোঁস করে
জলপাই খেতে এক
চোর এলো ঘরে।

টের পেয়ে হুংকার
ছেড়ে বলে বাঘ,
ঘাড় ভেঙে দেব ব্যাটা
এইবেলা ভাগ।
চোর হাসে ফিকফিক
বলে, আমি বাদশা
বাঘিনীর রাগ ওঠে
একি খেল তামশা?

শেষমেষ তিনজনে
জলপাই খায় গুনে।