‘আরাকানের পথে’ বার্মার জাতিগত নিধনের কাহিনি

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : মার্চ ০১, ২০১৮

মায়ানমার থেকে দল দলে তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। তাদের ওপর চালানো হচ্ছে নানা রকম দমন-পীড়ন। এ নিয়ে গণমাধ্যমগুলোতে লেখালেখি হচ্ছে। আন্তজার্তিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা আমাদের চোখে পড়ছে না।

এদিকে রোহিঙ্গাদের ওপর এই দমন-পীড়নকে পরিকল্পিত গণহত্যা বলে মন্তব্য করেছেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী তিন নারী। তারা বলেছেন, এ অবস্থায় সু চি চুপ করে থাকতে পারেন না। তাকে নীরবতা ভাঙতে হবে। গণহত্যায় জড়িতদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি জানান তারা। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও জনগণের প্রশংসা করেন।

 

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণের এ ঘটনা নতুন কিছু নয়। এর আগেও তাদের ওপর চালানো হয়েছে নির্যাতন। তার প্রামাণ্য কাহিনি ধরা আছে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ডক্টর আলীম আল-রাজীর কালজয়ী উপন্যাস ‘আরাকানের পথে’ উপন্যাসে।

সম্প্রতি কাশবন প্রকাশনী ডক্টর আলীম আল-রাজীর কালজয়ী উপন্যাসটি পূনঃমুদ্রন করেছে। এটি সম্পাদনা করেছেন মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম। বইটির ফ্ল্যাপে আল-রাজীর একমাত্র মেয়ে শিরিন আল-রাজী লিখেছেন, “আমার বাবা ডক্টর আলীম আল-রাজী আজ থেকে প্রায় সত্তুর বছর আগে তার বিখ্যাত উপন্যাস ‘আরাকানের পথে’ রচনা করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন তৎকালীন বার্মায় (বর্তমানে মিয়ানমার) যে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ঘটে, তারই এক হৃদয়স্পর্শী কাল্পনিক কাহিনি নিয়ে রচিত হয় এ উপন্যাসটি। ভূমিকা লিখেছিলেন বরেণ্য সাহিত্যিক ও আইনজীবী এস. ওয়াজেদ আলী এবং এর প্রচ্ছদ আঁকেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন।”

শিরিন আরও লিখেছেন, “বর্তমানে মিয়ানমারে চলছে জাতিগত নিধন। সেখানে আবারও নেমে এসেছে মানবিক বিপর্যয়। সেখানকার সামরিক জান্তার পশুবৃত্তি ও নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে বিশ্বের বিবেকবান মানুষ নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত আইনবিদ, বহু ভাষাবিদ ও ব্যতিক্রমধর্মী রাজনীতিবিদ যে একজন প্রতিভাধর সফল সাহিত্যিকও ছিলেন, কালজয়ী এ উপন্যাসটি পড়ে পাঠক তা সহজেই উপলব্ধি করতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।”

‘আরাকানের পথে’ উপন্যাসটির ভূমিকায় এস. ওয়াজেদ আলী লিখেছিলেন, “তরুণ লেখক রাজী সাহেবের ‘আরাকানের পথে’ পড়ে সত্যই আনন্দ লাভ করলুম। ভাষা প্রাঞ্জল, প্রকাশভঙ্গি আবেগময় এবং প্রাণবন্ত। রাজী সাহেব তারাশঙ্করের মতো সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে উপন্যাস রচনা করতে অগ্রসর হয়েছেন দেখে আশান্বিত হলুম। সমসাময়িক ঘটনার মধ্যেই খুঁজতে হবে আমাদের দুঃখ কোথায় এবং কিসের। আর তার মধ্যেই পাব আমরা ভবিষ্যৎ কর্মপদ্ধতির নির্দেশ। তরুণ লেখকের সাহিত্যিক ভবিষ্যৎ যে উজ্জ্বল আমি তা অসঙ্কোচেই বলতে পারি। রাজী সাহেবের সাহিত্যিক উচ্চাশা পূর্ণ হোক, তার সাধনা সার্থক হোক, এই আমার অন্তরের প্রার্থনা ও কামনা।”

একুশে বইমেলা ২০১৮