অলঙ্করণ: পাপিয়া জেরিন

অলঙ্করণ: পাপিয়া জেরিন

আশিক আকবরের গুচ্ছ কবিতা

প্রকাশিত : জানুয়ারি ০৭, ২০১৮

স্টেশন

ভালো আছি।
রেল স্টেশনে আছি।

জেগে উঠে ঘরের বিছানাকেই রেল স্টেশন মনে হয়।

ট্রেন আসে ট্রেন যায়
শুয়ে শুয়ে দেখি
রেল স্টেশনেই থাকি।

স্টেশন,
যে যায় না কোথাও

ইবনে খালদুনের পরামর্শ মতে প্রতিক্রিয়া

সে নাকি আমাকে লইয়া
কি কি,
যাহা তাহা,
লিখিয়াছে,
দুই হিন্দু যুবক কবিদ্বয় এই সব বাতচিতে
আমাকেই খেপাইতে চাহিতেছে,
খেপি নাই।
আমরা মুস্লিম ভাই ভাই।
আমাদের কোনোই ঝগড়া ঝাগড়া নাই।
কবরে আমার লাশটারে নেবে তো এরাই!
সহোদরা লাশবাহী ভাইরা যখন দিয়াছে পলাই।

জ্ঞাত হইয়াছি,
তাহার নামের মধ্যে রহমত এবং যৌবন যুগপদে বিদ্যমান।
যে যৌবন যৌবনেই রহমত প্রত্যাশি,
তার কাছে কিইবা থাকতে পারে দরকার?
তারচে`,
তাহার পিতা লুলু আবদুর রহমানের সাথে কথা বলা যাক,
লুলু, বন্ধু মোর, জানের ইয়ার!
পুত্রদের পাকা পাকা,
হাহ্ হা, পাকা পাকা
কাঁচা কথা বুজছি না আর!
আমরা কি অনেক বড়ই হইয়া গেলাম।
বিখ্যাত মাছরা যে আমাদের মাথায় ভাত রাঁধতে পারছে না আর।
কি মুসকিল?
পূর্ববাংলাতেও মাথার জন্ম হচ্ছে আবার।

নিউট্রিনো

ব্রহ্মনাদ ধরিবার খায়েস নাই। নিউট্রিনো ধরিবারে চাই।

কবিতা।
আমার কবিতা।
শাদা ওয়ালে পড়ো।
কবিতাকে পড়ো।

আমিও তোমাদের মতোই কবিতা লিখতাম।
লিখি।
আমার কবিতা আমার মতো হইলেই,
ছাইড়া যাইও না।
ব্রহ্মাণ্ডের একেক কবিতা একেক রকম।
একেক কবিও একেক রকম। ঝাঁকের কৈ গো,
বিল জলাতেও বিরিক্ষের ছায়া পড়ে।
কোনো কবির ছায়াতেই কোনো কবি বাঁচে না।
কবিতা বাঁচে না।
কবিতা এ এক স্রোত
রক্তের উপর ভাসা সোনালি বুদ্বুধ।

বিড়ি

আমাদের
আমাদের হওয়াই হইলো না

প্রজাপতি ফুলেই বসলো না
উড়লোই শুধু,
উড়লোই।
উড়া,
আছড়ে পড়ার পূর্বশর্ত।

আমাদের উড়াউড়ি একা। একা,
দুইজন হইবার অবারিত সিঁড়ি,
আবার সামনে
দুইজনে খাইবার এক বিড়ি।

রক্ত

মিঠুন চাকমা নিহত হয়েছেন।
গুলিতে নিহত হয়েছেন। আমরা তাকে শহিদ বলবো।
আত্মদানকারী বলবো।
রাষ্ট্রকে রাক্ষস বলবো।

সমতলি হয়ে খুব লজ্জা লাগছে।
উদ্ভট উটের অন্ধকার লেজ কেটে ফেলতে,
হ্যাঁ কেটে ফেলতে ইচ্ছে করছে।
মাছিদের তাড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।
আর একটা রাষ্টীয় হত্যাকাণ্ড পার্বত্য অঞ্চলে ঘটলে,
সমতল থনে উদ্বাস্তু হইয়া ঐখানে যাইবো।
রক্ত দেইখ্যাই কাটাইবো তামাম জিন্দেগী।
জাতীয়তায় আলো জ্বালাইয়া হইবো আন্তর্জাতিক।
বলবো,
পাহাড় সমুদ্র সমতল শস্যজমি চাঁদ সূর্য বায়ূ ব্রহ্মাণ্ডের,
কারো নয়,
কোনো দেশের নয়।
মিঠুন চাকমাদের রক্ত মানচিত্রের সীমানা মুছে দ্যায়,
দিচ্ছে।
জয় জয় পাহাড়ের জয়, জয় প্রলেতারিয়েতের জয়।