কবিতা: অমীমাংসিত শিল্পের আত্মদর্শন

আবু তাহের সরফরাজ

প্রকাশিত : মে ১৯, ২০১৮

কবিতা এক প্রকার আত্মদর্শন। ব্যক্তি নয়, মানুষের চিরাচরিত অভিজ্ঞতার সারাৎসার চিত্রিত হয় ভাবরূপে কবিতার খেরো খাতায়। মানুষকে চিনে নিতে হয় সেইসব অমীমাংসিত সত্যের রূপকল্প। কবি নিমিত্ত উপাদান। তবে সামগ্রিক জীবনচর্চায় মানুষের আত্মস্থ অনুভূতিকে সংক্রামিত করেন তিনি। এইরূপে একজন কবির বেঁচে থাকা। জীবনকে ভালোবাসা একজন মানুষের জন্যে জরুরি। কবিকে ওই জীবনসৌন্দর্যের ব্যূহ নির্মাণ করতে হয়। বেঁচে থাকার এই যে রঙ, মানুষের মুখ, প্রাত্যহিক ঘটে যাওয়া কত তুচ্ছ ঘটনা এইসব মিলিয়ে একটা জীবন কী যে সাংঘাতিক মূল্যবান পাওয়া! খুবই সাদামাটা আটপৌরে ভাষায় প্রতেদিনকার নানা অনুষঙ্গ নিয়ে কবিতা এক একটি চলমান জীবন হয়ে যেতে পারে। হেঁটে বেড়াতে পারে আমাদের চারপাশে। সকালে ঘুম ভেঙে জানলার দিকে চেয়ে যদি দেখা যায় চকচকে রোদ উঠেছে কিংবা বারান্দার রেলিঙের ওপর ঝুঁকে দাঁড়িয়ে আছে একটি শালিক মুহূর্তে এক প্রকার ভালোলাগা স্পর্শ করে কিছু সাহস জুগিয়ে যায়। মনে হয় এই রকমে আরও কিছু দিন বেঁচে থাকা যায়। ব্যবহারিক যাপিত জীবনের এইসব টুকরো টুকরো দৃশ্যময়তা কী উপায়ে কবিতার মতো করে শব্দপুঞ্জিত হয় সেটা খুঁজে দেখতে হবে সম্ভাবনাময় কবিকেই। কবিতার সজ্ঞায়ন নিয়ে নানা জটিলতা থাকতে পারে কিন্তু নতুন কবিদের জন্যে ভেবে দেখা দরকার মানে সময় এসে গেছে ভেবে দেখার যে, আমাদের আগামী কবিতার ভাষাগত ইঙ্গিত কী হতে পারে। কবিতা আকাশ থেকে পাওয়া কোনও দৃশ্যকল্প কিংবা প্রকরণ নয়, সে এই পৃথিবীরই আমাদের চেনাজানা সাংসারিক খুঁটিনাটি বিষয়গুলোকে নিয়ে আলাদা অর্থ খুঁজে বের করার এক প্রকার কৌশল।

বাংলাদেশ নামের একটি ভূখণ্ডের নিজস্ব ভাষায় মাটির কাছাকাছি দাঁড়িয়ে শেকড়ের রূপময়তায় শামসুর রাহমানই মূলত আধুনিক এক কাব্যপ্রচেষ্টা দাঁড় করান যা ওই সময়ে বাংলাদেশে জরুরি ছিল। এর আগে ঘটে গেছে দেশবিভাগ। বাংলাদেশের আঙ্গিকগত যে রূপকাঠামো তার ভেতর থেকে কবিতার আধুনিক কোনও মডেল তৈরি হয় নি। অথচ রাষ্ট্রীয় কিংবা আমাদের জাতীয়তায় ওই রকম একটি মডেল থাকা দরকার, বুঝে গেছিলেন তিনি। শিল্পের সারকথা আমরা জেনে গেছি নিরন্তর সৌন্দর্য। কবিতা সেই সৌন্দর্যকে যাপিত জীবনের সৌষ্ঠবে নির্মাণ করে। কল্পপ্রবণতা একজন কবির স্বাভাবিক নিয়তি। তবে সেই কল্পপরিধি কবির আন্তঃঅভিজ্ঞতারই সারাৎসার। কবিকে পৃথিবীর কাছ থেকে পাঠ নিতে হয় এবং সত্যিকার অর্থেই মেনে নিতে হয় সময়ের চূড়ান্ত কোনও ব্যাখ্যা নেই। যাপিত জীবনের নানা অনুষঙ্গে মানুষের শ্বাশত অনুভুতিকে টোকা দিয়ে যাওয়াই কী একটি কবিতার আন্তরিক আয়োজন নয় ? সৃষ্টির আরম্ভ থেকে মানুষের যাপিত জীবন কিংবা প্রাত্যহিক উপকরণ একজন কবি টেক্স পড়ে জেনে নিতে পারেন। কিন্তু কেবল শক্তিশালী কবিই তার অভিজ্ঞতায় ধারণ করতে পারেন ওই সময়ের কোনও প্রেমিক তার প্রেমিকার খোলা নাভির দিকে চেয়ে কী তাড়নায় মাতাল হয়ে উঠতে পারে। সেই মাতাল চোখে বর্তমান প্রেমিকের বুকে ঝড় তুলে কবি তার কবিতার আটপৌরে বয়নে।

শেষপর্যন্ত মনেই হবে, নতুন দশকের বাংলা কবিতা-শিল্পীদের বুকে শামসুর রাহমান এঁকে দিতে পেরেছেন আগামী কবিতার রূপময়তা। আমরা দেখেছি তিনি কবিতাকে আকাশ থেকে নামিয়ে আনেননি। আমাদের গার্হস্থ্য আবহে একটু একটু করে নির্মাণ করে দিয়েছেন পৃথিবীর বয়েসি মানুষের যাত্রাকে। ষাটের দশকে আমাদের কবিতার যে নির্মাণ আরম্ভ হয়েছিল স্বীকার করে নিতেই হবে, বাংলা কবিতায় ওই মেকআপ দরকার ছিল। একটি পরাধীন রাষ্ট্র, আন্দোলন চলছে নানা দিক থেকে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষদের ভেতর থেকে। রাষ্ট্রীয় অনিশ্চয়তা মূলত গণমানুষের অনিশ্চয়তা। বদলে যেতে বাধ্য ধারাবাহিক জীবন-যাপনের সবল চিত্র। আর কবি তো জাতির ভেতর সবচেয়ে স্পর্শকাতর নাগরিক। সেও একটু একটু করে টের পাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে কিছু একটা। ইঙ্গিত পাচ্ছে ঈন্দ্রিয়গ্রাহ্য শব্দে সব কিছু ভেঙে পড়ার। ওই সময়ের একজন শক্তিশালী কবি রফিক আজাদ এক কবিতায় লেখেন, সাবধান নাগরিকগণ, সময় আসছে ধেয়ে খারাপ সময়! ওই সময়ের আরেক কবি শহীদ কাদরী আমাদের কাব্যভাষায় এক চমকপ্রদ নতুনত্বের আস্বাদ এনে দিয়েছিলেন। নাগরিক ক্লেদ কিংবা বেঁচে থাকার টুকরো টুকরো সংকীর্ণতা তিনি শিল্পের মহৎ প্রকরণে বেঁধে ফেলতে চেয়েছিলেন।
এর পর পরই তো ভাষা আন্দোলন।
বিক্ষোভ। অসন্তোষ। গুলি। রক্ত।

সময়কে ধারণ করে কবিতা হয়ে উঠলো শ্লোগানমুখ। শক্তিশালী গীতিকবি আবু হেনা মোস্তফা কামাল লিখলেন,
অপমানে তুমি জ্বলে উঠেছিলে সেদিন বর্ণমালা
সেই থেকে শুরু দিন বদলের পালা।

এই জ্বলে ওঠা সময়ের দাবি। কবিতা জনগোষ্ঠীর বাইরের কোনও দর্শন নয়। কিন্তু কেউ কেউ বলে থাকেন শ্লোগানসর্বস্বতা কোনও অর্থেই কবিতা নয়। মুশকিল হচ্ছে তারা ভেঙেও বলেন না কবিতা তবে কী রকম। তার কী কোনও সর্বজনীন চেহারা আছে? বৈশ্বিক কোনও সংজ্ঞা আছে? বিনীত উচ্চারণ আমার, কবিতা আর কিছুই নয় কেবল বুকের ভেতর একটু জ্বলে ওঠা কিংবা চিরাচরিত অনুভূতিকে আক্রান্ত করা। বঙ্গবন্ধুর সাত মার্চের ভাষণ আমার ধারণায় একটি কিংবদন্তির কবিতা। কবিতা হয়ে ওঠার মতো কোনও বিধিবদ্ধ ছক হয়তো তাতে নেই কিন্তু যে শক্তিশালী শব্দ ব্যবহার তিনি করেছিলেন এবং তার যে মারাত্মক প্রভাব বাঙালির ভেতর পড়েছিল, এই তো একটা ঘোর, এক অবস্থা থেকে আরেক অবস্থায় পেীঁছে দেয়া। এই পরিবর্তনকে কী আমি কবিতা বলবো না?

সত্তর দশক পর্যন্ত সময়ের প্রেক্ষিত ছিল কবিতার বিষয়-আশয়। আশির দশকে এসে কবিতার স্বরূপ একটা আলাদা চেহারা নিল। তারপর নব্বই এবং দু’হাজার পরবর্তী নতুন দশক। বিজ্ঞাপিত সময়। ইন্টারনেট। বিশ্বায়ন। কবি এখন আর নিজের মানচিত্রের ফ্রেমে বন্দি নন, তাকে জানতে হচ্ছে বিশ্ব কবিতার অন্তর্নিহিত বোধ কিংবা উপকরণ। নিজেকে ভেঙে ভেঙে পুননির্মাণের সময়ের মুখোমুখি সে। সংকীর্ণ অর্থে নয়, আমার চোখে ব্যাপারটা নিজেকে ঋদ্ধ করার কৌশল হিসেবে চিহ্নিত। উৎপলকুমার বসুর একটা উক্তি উল্লেখ করা যেতে পারে। তিনি বলেছিলেন, আমরা প্রতিদিন মৃত কবিতা লিখে চলেছি। ব্যাপারটা আরেকটু ভেঙে বলি, পৃথিবীতে কবিতা সৃষ্টির বয়েসের কোনও গাছপাথর নেই। আজকের সময় পর্যন্ত কত কোটি কবিতা লেখা হয়েছে তার সঠিক হিসাব কেউ দিতে পারবে না। তারপরও আমরা লিখছি। নতুন করে লেখার আর বাকি কী আছে? কী কথা বলতে পারি যা এর আগে কেউ বলেননি? হয়তো আলাদা করে কিছুই আমাদের কবিতার ফ্রেমে ধরা পড়ে না। আপাতদৃষ্টিতে এ রকমই শাদা ব্যাপারটা।

কবিতা লেখা হচ্ছে। হবেও। সেই একই ভাষা, একই মানুষ এবং একই চেতনা বিষয়ে-প্রকরণে। আমার ব্যক্তিগত ধারণা বাঙালির জীবনের এমন কোনও যাপিত-মুহূর্ত বাদ পড়েনি যা রবীন্দ্রনাথের কবিতায় উঠে আসেনি। চলমান জীবনের নানা প্রেক্ষিতে বিচিত্র ঢঙে রবীন্দ্রকাব্য প্রতিভাত হয়েছে। কী উৎসব, কী প্রেম কিংবা বিরহ, রাষ্ট্রীয় নানামুখী বাঁক পরিবর্তনে; কেবল তাই নয়, প্রতিটি বাঙালিই যাপিত জীবনের যে কোনও মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বিস্ময়ে উচ্চারণ করেন, আরে এতো আমারই কথা! আমরা যত আধুনিক হচ্ছি মনে হচ্ছে রবীন্দ্রকাব্যও এগোচ্ছে সময়ের সাথে সাথে। তাহলে আমরা আর লাগি কোথায়?

বলা দরকার মনে করছি আবারও, কবিতা আত্মদর্শন। একজন কবি মূলত তার সারা জীবনে একটি কবিতাই লেখার চেষ্টা করেন। যা তার সত্তাকে ভেঙে ভেঙে একটি মডেল হিসেবে দাঁড় করায়। কবিতার বিষয়-অনুষঙ্গ যেহেতু আকাশ থেকে নেমে আসা কোনও অলৌকিক ধারণা নয়, সে হিসেবে সময়ের প্রারম্ভিক সরল রেখাটি ধরে আজতক মানুষের এই যে যাত্রা, এই পথেই তো কবিতা তার শরীর নিয়ে আমাদের সঙ্গে হেঁটে আসছে। কল্পনা বলে যে বায়বীয় একটা জগৎ আছে সেটা কিন্তু মোটেও বায়বীয় নয়, বরং অনেক বেশি গ্রাহ্য। অনেক বেশি ইন্দ্রিয় সচেতন। মানুষ, এই প্রাণীটি পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক, সময়ের যে ব্যাবধানেই তার জীবন-যাপন হোক; শেষ পর্যন্ত কিন্তু সে মানুষ। আর মানুষের রাসায়নিক গঠন একই রকম। দুঃখ পেলে সে কাঁদে, খিদে পেলে খায়, রাতে বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে রতিক্রীড়ায় ঝড় তোলে। এমন তো কখনও শোনা যায়নি, সঙ্গম করে কোনও মানুষ ব্যথিত হয়েছে। এমন তো শোনা যায়নি রাতে উঠেছে সূর্য আর দিনে চাঁদ। সেই যে পৃথিবীর আদি থেকে একটা নিয়মের ভেতর দিয়ে মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে এটাই তো মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। সে যা দেখছে তা খুবই নিয়মতান্ত্রিক। সে যে জীবনযাপন করছে তাও আলাদা কোনও জীবনযাপন নয়। আলাদা কেবল এই টুকুই সময়ের প্রেক্ষিত আর ব্যাবহারিক উপকরণ। মৌলিকত্বের প্রশ্নে সব মানুষই মূলত একটা জীবন কাঁধে নিয়ে সময়ের একটা রেখা ধরে আদি-স্থিতি-অন্ত এই তিনটে স্তরের ভেতর দিয়ে এগিয়ে যায়। মিশরীয় সভ্যতার মানুষ সম্বন্ধে আমরা ধারণা পাই টেক্স থেকে। কিন্তু আমাদের থেকে তাদের পার্থক্য খুব বেশি ছিল না। পার্থক্য কেবল সময়ের প্রেক্ষিত আর প্রাত্যহিক জীবন-যাপনে ব্যবহৃত উপকরণ। জীবনানন্দ দাশ যখন তার কবিতায় মিশরীয় সভ্যতার কথা বলেন তখন আমাদের থেকে আলাদা কোনও মানুষ মনে হয় না তাদের। আমরা সেই সময়কে কল্পনা করে নিতে পারি। কল্পনা আর কিছুই নয়, আমাদের আত্মঅভিজ্ঞতার সারাৎসার। পৃথিবীর শুরুতে একজন মানুষ প্রবল বৃষ্টির ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কী অনুভূতি দ্বারা তাড়িত হতো সেই তাড়না প্রত্যেক সময়ে প্রতিটা মানুষেরই আছে। এই তো সেই সরলরেখা ধরে এগিয়ে যাওয়া। এই তো অভিজ্ঞতার প্রকৃত চেহারা। তরে এর ভেতরও একটা কথা থেকে যায় কিন্তু। এক একজন মানুষ এক এক রকম। বৈচিত্র্য মূলত মানুষের এক আদিম কাঠামো। একজন কবি তার আত্মঅভিজ্ঞতার শিল্প নির্মাণ করবেন, সেটা পৃথিবীতে আর কেউ লেখেননি এরকম দিব্যি কেউ দিতে পারেন না। লেখার প্রভাব বলে যে কথা প্রচলিত আছে তা নেহায়েত কথার কথা। লেখালেখির বিষয় যখন এই পৃথিবী আর তার অঙ্গসৌষ্ঠব তখন তো আলাদা রকমের কোনও কথা বলার জায়গা আর থাকে না।

বলা দরকার যে, কবিতা যথার্থ অর্থেই ব্যাবহারিক। যাপিত জীবনের নানা অনুষঙ্গে তার শিল্পিত চেহারা প্রতিবিম্বিত। এ রকম যদি হয়, আমি লিখলাম, এক অন্ধকার রাতে কৃষ্ণ গহ্বরের ভেতর ঢুকে গেলাম; তবে হয়তো কিছু সমস্যা দাঁড়িয়ে যাবে। কৃষ্ণ গহ্বরের ব্যাপারটা আমরা স্টিফেন হকিন্সের টেক্স পড়ে জেনেছি। আমাদের অভিজ্ঞতার বাইরে সে। একটা স্তরে গিয়ে হয়তো ওই গহ্বরের মজা আমরা পেতে পারি, সেই স্তরটি হচ্ছে আমাদের মতো করে ভেবে নিয়ে। কিন্তু আমি যদি লেখি, এক অন্ধকার রাতে প্রেমিকার বাড়ির দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকলাম। আমার মনে হয়, এই ঢুকে যাওয়া অনেক বেশি প্রাত্যহিক, অনেক বেশি জীবন-বাস্তবতায় ঘনিষ্ঠ। যাই কিছু লেখালেখি হোক, আমি ভাবতে চেষ্টা কবি শিল্পের সারমজ্জা ওই সৌন্দর্যের নানা অনুষঙ্গ। একটা গল্প বলার চেষ্টা করি। এক বিকেলে ফরিদপুরের এক আবাসিক এলাকার গলি দিয়ে আমি হেঁটে যাচ্ছি। চোখ পড়লো এক ফ্ল্যাটের তিনতলায়। ফুটফুটে দেখতে এক কিশোরী বারান্দার রেলিঙ ধরে দাঁড়িয়ে আছে। আমার ভেতর মুগ্ধতা তৈরি হলো। এই রকম এক দৃশ্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমার কেবলই মনে হলো, মেয়েটি এই পৃথিবীর কোনও অংশ নয়। আলাদা কোনও জগতের, আলাদা কোনও রূপময়তার। কী সাংঘাতিক রকমের ভঙ্গি নিয়ে চেয়ে আছে মেয়েটা। আমার ভালো লাগলো। এই ভালো লাগার উংস কী? অবশ্যই সৌন্দর্য। একটু এগোতেই চোখ পড়লো রাস্তার পাশে ড্রেনের ওপর বসে এক পাগলী দিগম্বর হয়ে মলত্যাগ করছে। মুহূর্তে আমার ভেতর রি রি করে উঠলো। সৌন্দর্যের যে ব্যাপারটা এতক্ষণ আমার ভেতর ঝিরি ঝিরি হাওয়া দিচ্ছিল কোথায় মিলিয়ে গেছে তা। টের পেলাম আমার অনুভূতি এক অবস্থা থেকে আরেক অবস্থায় পৌঁছেছে।

আমি এখনও ভাবি, সৌন্দর্য শিল্প আর কবিতা কোথায় থাকে? আমাদের ভেতর আসেই বা কোথা থেকে?

লেখক: কবি ও কথাসাহিত্যিক