কিউবার সাহিত্যিক লিওনার্দো পাদুরার সঙ্গে গপসপ

ভাষান্তর: এমদাদ রহমান

প্রকাশিত : নভেম্বর ০৭, ২০১৮

কিউবার সাহিত্যিক, সমালোচক এবং সাংবাদিক লিওনার্দো পাদুরা তার চারখণ্ডের গোয়েন্দা উপন্যাস `হাভানা ব্লু`, `হাভানা গোল্ড`, `হাভানা রেড` ও `হাভানা ব্ল্যাক`-এর জন্য বিখ্যাত। রুশ বিপ্লবের নেতা ট্রটস্কি ও তার হন্তারককে নিয়ে লিখেছেন `দ্য ম্যান হু লাভড ডগস` নামের ঐতিহাসিক উপন্যাস, ২০০৯ সালে। উপন্যাস ছাড়াও তিনি ছোটগল্প, প্রবন্ধ এবং চলচ্চিত্রের জন্য স্ক্রিপ্ট লিখে থাকেন। ২০১২ সালে তিনি কিউবার সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার `ন্যাশনাল প্রাইজ ফর লিটারেচার` লাভ করেন। ২০১৫ সালে হিস্পানিক ভাষাবিশ্বের সম্মানিত `প্রেমিও আস্তোরিয়াস` পুরস্কারে ভূষিত হন। লাতিন আমেরিকার প্রখ্যাত উপন্যাসিক আলেহো কার্পেন্তিয়ের ও গিগের্মো কাব্রেরা ইনফান্তে`র যোগ্য উত্তরসুরী পাদুরা কিউবার শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে স্বীকৃত। সংলাপ রচনায় তার দক্ষতা সমালোচকদের দৃষ্টি কেড়েছে। তার এই ছোট্ট সাক্ষাৎকারটি ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসে ছাপা হয়েছিল ২০১৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সংখ্যায়।

সাক্ষাৎকারী: আপনার আদর্শ পাঠক কে?
লিউনার্দো পাদুরা: আমার স্ত্রী। তিনি সব সময়ই খুব তীক্ষ্ণ আর নিষ্ঠুর। যখন লিখি তখন পাশে ঠিক এরকমই একজন কঠোর পাঠককে আমি চাই।

সাক্ষাৎকারী: খাটের পাশের টেবিলে এখন কোন বইগুলি আছে?
লিউনার্দো পাদুরা: আমার কিন্ডল ইবুক রিডারে এখন পর্যন্ত সাতশো উপন্যাস আছে, সুতরাং এই প্রশ্নটি অর্থহীন। এই মুহূর্তে আমি জর্জ পেলিক্যানাসের একটি উপন্যাস পড়ছি, তার আগে পড়ে শেষ করেছি আর্নেলদো এন্দ্রিয়াদসোনের একটি উপন্যাস।

সাক্ষাৎকারী: কোন বইটি আপনার জীবনকে অনেকখানি বদলে দিয়েছে?
লিউনার্দো পাদুরা: হ্যাঁ, দ্য কাউন্ট অব মন্টে ক্রিস্টো`র অবদান আমার জীবনে অনেকখানি। এই বইটি আমাকে সত্যকার এক পাঠকে পরিণত করেছিল।

সাক্ষাৎকারী: কখন বুঝলেন যে লেখক হতে চলেছেন?
লিউনার্দো পাদুরা: যখন উপলব্ধি করলাম, বেসবল খেলোয়াড় হিসেবে আমি কোথাও যেতে পারব না।

সাক্ষাৎকারী: আপনার প্রতিদিনকার লেখার রুটিন কেমন?
লিউনার্দো পাদুরা: সকাল ৭টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রতিদিন টানা ছয় ঘণ্টা লিখতে থাকি, এমনকি রবিবারেও একই নিয়ম চালু থাকে, যদি ঘরে থাকি।

সাক্ষাৎকারী: কোন লেখকরা আপনার লেখায় প্রভাব ফেলেছেন?
লিউনার্দো পাদুরা: প্রভাবের প্রশ্নে তো অনেক, অনেক লেখকের নাম বলতে হবে! জে. ডি. স্যালিঞ্জার, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, জন আপডাইক, মানুয়েল ভাস্কেস মুন্তালবা, গিগের্মো কাব্রেরা ইনফান্তে, মারিও বার্গাস ইয়োসা...

সাক্ষাৎকারী: কোনোদিন কারও পাশে বসে রাতের খাবার খেতে হলে, কাকে বেছে নেবেন?
লিউনার্দো পাদুরা: আমাকে জে. ডি. স্যালিঞ্জারের পাশের আসনে বসতে হবে। তাকে জিজ্ঞেস করার মতো কত কথাই না আমার আছে!

সাক্ষাৎকারী: আপনি কিসে ভীত হন?
লিউনার্দো পাদুরা: বহুকিছুতেই আমার ভয়, তবে উন্মত্ততা (ম্যাডনেস) সবচেয়ে বেশি ভীত করে।

সাক্ষাৎকারী: কী আপনাকে সারারাত জাগিয়ে রাখে?
লিউনার্দো পাদুরা: মানুষের স্টুপিডিটি আমাকে ঘুমোতে দেয় না।

সাক্ষাৎকারী: কখন নিজেকে খুব মুক্ত লাগে?
লিউনার্দো পাদুরা: যখনই একটি উপন্যাস লিখে শেষ করি। লেখার পর নির্ভার লাগে।

সাক্ষাৎকারী: যদি কোনও চিত্রকর্মের মালিক হতে চান তাহলে কোনটিকে বেছে নেবেন?
লিউনার্দো পাদুরা: রেম্ব্রান্টের আঁকা ডাচ ভূচিত্রাবলির যে কোনও একটিকে।

সাক্ষাৎকারী: কোন বইটিকে মনে হয়েছিল যদি নিজে লিখতে পারতেন?
লিউনার্দো পাদুরা: এরকম কিছু বই আছে। ভাসিলি গ্রসমানের `লাইফ এন্ড ফেইট` বইটিকে আমি নিজে লিখতে চাই।

সাক্ষাৎকারী: লেখালেখি ছেড়ে দিলে কীভাবে বেঁচে থাকবেন?
লিউনার্দো পাদুরা: কিউবার মার্কেটগুলোয় বিক্রেতা হয়ে যাব।

সাক্ষাৎকারী: সবচেয়ে প্রিয় স্থান কোনটি?
লিউনার্দো পাদুরা: আমার ঘর থেকে জায়গাটি ১৩০ কিলোমিটার দূরের ভারাদেরো সমুদ্র সৈকত, কিউবার উত্তর উপকূলে।   

সাক্ষাৎকারী: কার উপন্যাসটি প্রথম পড়েছিলেন, মনে আছে?
লিউনার্দো পাদুরা: না, তবে এমিলিও সালাগারির কোনও একটি বই অবশ্যই হবে।