জাতীয় জাদুঘরে চলছে চলচ্চিত্রের মহাযজ্ঞ!

বেলায়েত হোসেন মামুন

প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৮, ২০১৮

বাংলাদেশে তিনটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হয়। এর একটি দ্বিবার্ষিক এবং দুইটি প্রতিবছর হয়। তিনটি উৎসবই হয় স্বেচ্চাসেবীদের আয়োজনে। এর মাঝে দুইটি উৎসবের আয়োজক দুইটি ফিল্ম সোসাইটি বা চলচ্চিত্র সংসদ। এই উৎসবগুলো আয়োজনের পেছনে অনেক কষ্টের গল্প থাকে। সে গল্প হয়তো খুব বেশি মানুষ কখনো অনুভব করে না। কিন্তু আমিও একজন সংগঠক। আমি জানি কাজটি মোটেও সহজ নয়। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন শুধুমাত্র শ্রমের বিষয় নয়। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন চলচ্চিত্র সংগঠন, চলচ্চিত্রকার, প্রযোজক ও চলচ্চিত্র সমালোচকদের সাথে যোগাযোগ যখন আস্থায় আনা সক্ষম হয়, তখনই কেবল এমন একটি উৎসব আয়োজন সম্ভব হয়।
অনেক মেধা-শ্রম-সময়-অর্থ বিনিয়োগ করে এই উৎসব মূলত কেন আয়োজন করেন একদল প্রায় `পাগল` মানুষ? পাগল কারণ, এমন স্বেচ্ছাশ্রম বুদ্ধিমান মানুষেরা করে না। এ কেবল আত্মবিনাশী মানুষের পক্ষেই সম্ভব। তো এই কঠিন কাজটি বছরের পর বছর করে যাওয়ার কারণ কী?
কারণটা আমরা সবাই জানি। বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের চর্চাকে শক্তিশালী করার জন্যই এই কর্মযজ্ঞ। কিন্তু এই কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণের ব্যাপারে ঢাকা শহরের মানুষের এত অনাগ্রহ কেন! প্রতিবছর প্রতিটি উৎসবে মানুষের অংশগ্রহণ আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। খুব পরিচিত দুই একটি ছবির প্রদর্শনীতে হলভর্তি দর্শক হলেও উৎসবের শতকরা নব্বইভাগ প্রদর্শনীতে মিলনায়তনগুলো খা-খা করে। এটা দেখতে খুব কষ্ট হয়। একজন চলচ্চিত্র সংসদকর্মী হিসেবে এই দৃশ্য আমাকে বেদনাহত করে। এত মানুষের সম্মিলিত কষ্টের আয়োজন কেন উৎসবমুখর হবে না? এর কারণগুলো আমাদের খুঁজে দেখা দরকার।
আমরা Rainbow Film Society কে অভিনন্দন জানাতে চাই... Dhaka International Film Festival আয়োজনের এই ধারাবাহিকতা বাংলাদেশের সকল চলচ্চিত্র সংসদকর্মীর জন্যই গর্বের... আজও বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় উৎসবগুলো চলচ্চিত্র সংসদকর্মীদের স্বেচ্ছাশ্রমভিত্তিক উদ্যমের অবদানেই সমৃদ্ধ হচ্ছে... এই দৃশ্য অবশ্যই আনন্দদায়ক!
আসুন ঢাকাবাসী... শাহবাগে পাবলিক লাইব্রেরি এবং জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আসুন... এখানে চলচ্চিত্রের মহাযজ্ঞ চলছে.. চলবে আরও তিন দিন।