অলঙ্করণ: রিফাত বিন সালাম

অলঙ্করণ: রিফাত বিন সালাম

জায়েদ হোসাইন লাকীর তিনটি কবিতা

প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৫, ২০১৮

খুব কাছে থেকেও, তুমি দীর্ঘশ্বাস

আমি মরে গেলে সে আমার লাশ দেখবে না
জীবিতাবস্থায় দেখবে না পোড়া মুখ
এটাকে সত্যিই কী প্রেম বলে?

তোমার কুরিয়ার ঠিকানা যদি জানতাম
তাহলে, কফিনে করে পাঠিয়ে দিতাম
আমার সকল শুভাশিস, সব লেনদেন
আর ভালোবাসা

বাড়ির পাশের স’মিল থেকে প্রায়শই
কাঠ চেরাইয়ের শব্দ শুনে ভাতঘুম থেকে জেগে
দেখি, এ আমার পাঁজর ভাঙার গান
আমি মন দিয়ে শুধু শুনি; কাঁদি না

এ শহরের করাতকলের মালিকরা সবাই নারী
তাদের করতলে লুকিয়ে রাখা সুতিক্ষ্ণ
কাঁটাচামচে কাটা পড়ে রোজ যুবক বৃক্ষের বাকল

আমি তো অর্জুনের ছাল বৈ অন্যকিছু নই।

আজ জ্যোছনা রাতে কিছু ঘটে যেতে পারে

এমন মোহনীয় আততায়ী রাতে
কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলতে পারি।
যেমন, তোমার চুলের বেণি ধরে
টেনে হিঁচড়ে এনে আমার বুকের ওপরে
সারারাত তোমাকে শুইয়ে রাখতে পারি।

নয়তো, আপেল কাটা চাকু দিয়ে
আমার হাতের অনামিকা আঙুল কেটে
সে রক্ত দিয়ে তোমার দু’পায়ে
আলতার আলপনা এঁকে দিতে পারি।

এমনও হতে পারে, তোমার ঠোঁটে চুমু খেতে খেতে
খুশিতে আমি চারতলার ছাদ থেকে
লাফিয়ে পড়ে মরে যেতে পারি।

এমন প্ররোচিত রাতে তুমি যদি কাছে না আসো
তাহলে আমি তোমাকে হাসতে হাসতে খুনও করে ফেলতে পারি।

চুমোর বায়োগ্রাফি

লিউনা,
চুমোকে পাপ ভাবছ যখন
তখন, আমি কী করে তোমাকে
চুমোর শৈল্পিক বিবৃতি
মুখস্ত করাই, বলো?

একটি গল্প শোনো-
কারো কামরাঙা ঠোঁট যখন
কাউকে চুমো খাওয়ার জন্য
খুব উসকে দেয়,
তখন প্রেমিক মানে না কোনো
চুমোর সংবিধান বা
পাপের নিয়ম।

তোমার উষ্ণ ঠোঁটে
আমার মেহগনি ঠোঁট রাখলে-
ভরে যায় ফুলে ফুলে
পৃথিবীর সব গোলাপের গাছ

একটি গোলাপ গাছের জীবন
বৃত্তান্তের ভেতরেই লুকিয়ে আছে
অজস্র চুমোর শৈল্পিক বায়োগ্রাফি