জয়গুন ও আনোয়ারের সাইনার্জি

চয়ন খায়রুল হাবিব

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ০২, ২০১৮

ফটোগ্রাফার আনোয়ার হোসেন শ্রদ্ধাভাজনেষু

ক্যামেরার পেছনে একটা তীব্র চোখ থাকলে মেঘলা এনভেলাপে
আজিমপুর গোরস্থানের সাথে বনানী গোরস্থানের সোল্লাস সাইনার্জি

১৯৭১ এর বাংলাদেশ জেনোসাইডের ফসিল ফুয়েল
জ্বলে জ্বলে ২০১৮ পহেলা ডিসেম্বারের ফ্রান্সে
জ্বালানি মূল্য বাড়ার প্রতিবাদে দফায় দফায় টিয়ার গ্যাসের শেল
একজোড়া স্তন ফুলেফেপে একটা বোঁটা বঙ্গোপসাগরে
আরেকটা বোঁটার আলতো হেলানে প্রগাঢ় প্যারিসের আইফেল

চল্লিশ দশকি পুরান ঢাকার আগানবাব দেউড়িতে বেড়ার সব ঘর
তার মধ্য দিয়ে সরু সরু চিপাগলি পরপর
এতটাই সরু দুটো সাইকেল পাশাপাশি যেতে পারে না
এখানেই কেটে গেছে আনোয়ারের শৈশব গায়েবানা

ভো্রে উঠে পড়তে পড়তে পাড়ার ছেলেরা আসতো
হাফপ্যান্ট  খালি গা-খালি পা সাথে খালি বস্তা
হাটে গিয়ে চেরাই কাঠের ছোট টুকরাতে বস্তা ভরো
বস্তা প্রতি দাম আট-ন আনা
এইটুকু রান্নার লাকড়ি ৩-৪ টাকার কমে হবে না
কাঠকুড়ানি থেকে ফিরে বাজার করে তবে ইস্কুলের ঠিকানা

আরমানিটোলা ইস্কুলে সাদা শার্ট প্যান্ট ইউনিফর্ম তখন
ইউনিফর্ম ছাড়া বিশেষ বৃত্তির কয়েকজন যাদের নাম ডাকা হয় না
নামগোত্রহীন ছাত্রদের একজন কিভাবে কিভাবে
ইংলিশ বাংলা উর্দু ছবি দেখতে দেখতে
উড়াজাহাজের উপর টারজান আঁকতে আঁকতে
নটরডেমের চৌহদ্দি থেকে বুয়েটের আর্কিটেকচার
এবং সব ছেড়েছুড়ে মাঝ সত্তুরে পুনেতে শুরু ক্যামেরার ক্যারিয়ার

জয়গুন তাকে ডাকে পুকুরে আধডোবা শাড়িভেজা আদুলা
নাকি জয়গুন সাজে ভু্তুমে রঙ্গিলা এক নাগরিক পুতুলা

বাজে ক্যামেরায় আনোয়ার কসরত করে প্রাণপন
আরো বাজে সম্পাদনায় বোঝা যায় না জয়গুনের গ্রামীণ ক্রন্দন
জয়গুন অভিনেত্রী ও ক্যামেরাম্যান শুরু করে দাম্পত্য
সেটের সাথে সাথে ভাঙে অভিনেত্রীর আগের সম্পর্কের স্থাপত্য

২০০৭ এ নিরুদ্দিষ্ট নির্বাসন শেষে
সিলভিয়া প্লাথ কবিতায় নিলাম ডলি আনোয়ারের নাম
টেক্সট করে আপনাকে জানাতে
বলেছিলেন, `কবিতাটায় তুমিতো আমার কথা বলো নাই।’

আরে আনোয়ার ভাই আপনিতো আত্মঘাতী হন নাই!
আপনার কপালে ছিল ঢাকার হোটেল ঘরে ঘুমঘোরে হার্ট স্ট্রোক
ঢাকার ছেলে চয়ন চ্যানেল পারে বসে লিখলো আপনার মরণস্লোক
মেঘলা এনভেলাপে মেঘ ছাপায় শীতের সাগর কাঁপে দুরুদুরু
লেন্সের স্বপ্নিল পেটে লাগে লেন্সের পেছনে দাঁড়ানো স্বাপ্নিকের আলতো ঊরু

চ.খা.হা
২/১২/২০১৮
ব্রিটানি