দিন যায় কথা থাকে

পর্ব ৮

হামিদ কায়সার

প্রকাশিত : অক্টোবর ২৫, ২০১৮

তারা কেউ গান শুনিয়েছেন। কেউ লিখেছেন হিরন্ময় কবিতা। কেউ আবার গল্প-উপন্যাসের মালা গেঁথে সাজিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের ঢালি। কেউ বা নিরলস জ্ঞানচর্চায় যোগ করেছেন বুদ্ধিবৃত্তির নতুন মাত্রা। তাদের সেই দিন আজ আর নেই, কেউ হারিয়ে গেছেন মহাকালে, কেউ বা এক পা বাড়িয়ে রেখেছেন সেই পথে। তবে তাদের কথা আছে; তাদের কর্মে আর সৃজনশীলতায় তো বটেই, আমার কাছেও— কাগজের ভাঁজে ভাঁজে, শব্দগুচ্ছের আড়ালে, বিভিন্ন সময়ে গৃহীত সাক্ষাৎকারে। হয়তো সেই কথাগুলো আবারো জেগে ওঠতে পারে আপনার মননস্পর্শ পেলে। চলুন পাঠ নেয়া যাক।

ফিরে দেখা: প্রিয় লেখক প্রিয় বই ৩

বই পড়ার আনন্দ অন্য কিছুতে পাওয়া যাবে না: আবুল হোসেন
শামসুর রাহমানের কবিতার বিষয় হবার গৌরবেই কিনা, মেঝের উপর ড্রইংরুমের কোণে বিশালকায় পিতলের বকটা কেমন অহংকারী ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে গ্রীবা উঁচিয়ে— আর তারই পাশে একটু উঁচুয় কাঠের পুরনো টেবিলের উপর জোড়াসীন গৌতম বুদ্ধ গভীর ধ্যানে মগ্ন। একদিন কবি আবুল হোসেনও মেয়ের মৃত্যু-শোকে স্তব্ধ হয়ে পিতলের বকটার পাশে এমনই বসেছিলেন পাথর-মূর্তির মতো আর সেই দৃশ্য-মুহূর্তটি গভীরভাবে অনুরণন তুলেছিল কবি শামসুর রাহমানের হৃদয়ে। হৃদয়-আলোড়নের সেই সিম্ফনী’ই ‘পিতলের বক’ কবিতা। আর বিশাল ড্রয়িংরুমটির চার-দেয়ালই শোভিত বাংলাদেশের প্রখ্যাত-সুখ্যাত চিত্রশিল্পীদের ছবিতে ছবিতে। সোফাসেটে পরিপাটি সজ্জিত এ ড্রয়িংরুমটিতে বসে কথা বলতে যেন স্বস্তি পাচ্ছিলেন না নিভৃতচারী মৃদুভাষী কবি আবুল হোসেন। উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে শুধু আহ্বান জানালেন ‘আসুন’। ছোট্ট যে রুমটিতে তিনি ঢুকলেন, সে এক আশ্চর্য প্রশান্তির জগৎ। এ ঘরে ড্রয়িংরুমের মতো দামি বিলাসী দ্রব্য নেই, আছে তিন তিনটি বিপুল আয়তনের শেলফ। সেসব জুড়ে অজস্র বই, রাশি রাশি বই, অধিকাংশ বই-ই বিদেশি মহৎ কবি-সাহিত্যিকদের ক্ল্যাসিক সম্পদ, সঙ্গে দেশের কবি-সাহিত্যিকদের বই সমান মর্যাদায় স্থান পেয়েছে। যে ঘরে বইয়ের মতো সম্পদ রয়েছে, সে ঘরে কি আর অন্য কিছুর প্রয়োজন আছে? নেই, কবি যে চেয়ারটিতে আসীন হলেন তাও অতি পুরনো একটি কাঠের চেয়ার। জানতে চাইলা, কি বই পড়ছেন এখন?
আবুল হোসেন: আমি আসলে কখনই নির্দিষ্ট করে একটি বই পড়ি না, ধরে বেঁধে ওভাবে পড়তেও পারি না। একসঙ্গে অনেক বই পড়ি। নতুন বইও পড়ি, পুরনো পড়া বইও পড়ি। কিছু কিছু বই শোবার ঘরে আমার মাথার কাছে সব সময়ই থাকে। সেসব বই যে নিয়ম বেঁধে পড়ি, তাও নয়, যেকোনো জায়গা থেকেই পড়তে শুরু করি।
হামিদ কায়সার: আপনার সব সময়ের সাথি এই বইগুলো সম্বন্ধে জানতে চাচ্ছি।
আবুল হোসেন: আমার শিয়রের কাছে সব সময় যেসব বই রেখে দিই, তার মধ্যে আমার প্রিয় কবি রবার্ট ফ্রস্টের কোনো না কোনো কবিতার বই থাকবেই। তেমনি থাকে ডব্লিউ বি ইয়েটসের ‘কমপ্লিট ওয়ার্কস’— এ রকম বইগুলো আমার চিরসঙ্গী। দর্শনের একটি ইতিহাস উইল ডুরান্টের ‘দি হিস্ট্রি অফ ফিলসফি’ বইটি আমি পড়ি রেফারেন্স বুকের মতো, ডিকশনারির মতো। কারো সম্বন্ধে কিছু জানতে ইচ্ছে হলো তো সঙ্গে সঙ্গে ‘ডুরান্ট’ খুলে বসলাম। সেখানে পলিটিসিয়ানদের পাই, সোশাল সাইনটিস্টদেরকে পাই— বইটি অফুরন্ত এক ভাণ্ডার, আমার সবসময়ের সঙ্গী।

হামিদ কায়সার: সবসময়ের সঙ্গী বইয়ের বাইরে সম্প্রতি আপনি কি কি বই পড়েছেন?
আবুল হোসেন: সম্প্রতি অনেকগুলো বই পড়েছি। পড়লাম অরুন্ধতি রায়ের উপন্যাস ‘দ্য গড অফ স্মল থিংস’। পড়েছি জেমস গ্রেগারির লেখা, ‘গুডবাই বাফানা’। খুব ভালো বই; এ বইতে গ্রেগারী তার নিজের জীবনের কথা বললেও আসলে এটি হয়ে উঠেছে নেলসন ম্যান্ডেলার কারাজীবনের অসামান্য দলিল। এই জেমস গ্রেগারি ছিলেন ম্যান্ডেলার প্রধান কারারক্ষী। তার দায়িত্ব ছিল নেলসন ম্যান্ডেলাকে দেখাশোনার। প্রায় আড়াই যুগ ম্যান্ডেলা তার রক্ষণাবেক্ষণে ছিলেন। মজার ব্যাপার, ম্যান্ডেলাকে বন্দি করে রাখতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ভদ্রলোক ম্যান্ডেলার বন্ধু হয়ে গিয়েছিলেন এবং ম্যান্ডেলার প্রতি খুবই সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিযোদ্ধার উপর, বিশেষ করে নেলসন ম্যান্ডেলার উপর যে কি অমানুষিক নির্যাতন করা হয়, তার মর্মস্পর্শী বর্ণনা দিয়েছেন গ্রেগারি নিখুঁত ভাষায়। তার লেখায় ফুটে উঠেছে ম্যান্ডেলার চরিত্র— তার মনোবল, চারিত্রিক দৃঢ়তা, জ্ঞানের পরিধি, প্রজ্ঞা, মানবিকতা। এটিই আসল বিষয় বইটির।

 

হামিদ কায়সার: আপনি আত্মজীবনী পড়তে ভালবাসেন?
আবুল হোসেন: হ্যাঁ, আত্মজীবনী পড়তে আমার খুব ভালো লাগে— আমি প্রচুর আত্মজীবনী পড়েছি। সেই রুশো থেকে শুরু করে বাদ কে? একটি ভালো আত্মজীবনী তো শুধু একজন ব্যক্তির কথা নয়, তার সময়েরও ছবি। সম্প্রতি পড়া আত্মজীবনীগুলো ভালো লেগেছে। ড. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্তের লেখা ‘তে হি ন দিবসা:’ (সেই দিনগুলো আর ফিরে আসবে না) পড়ে অন্যরকম আনন্দ পেয়েছি, কারণ সুবোধ বাবুর কাছে পড়েছি, কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি আমার শিক্ষক ছিলেন এবং যাদের সম্পর্কে তিনি লিখেছেন তাদের অনেককেই আমি জানি। যে সময়ের কথা লিখেছেন তাও কিছুটা চেনাজানা। তিনি খুব মন খুলে কথা বলেন। এরকম আরেকটি বই প্রফেসর হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের ‘তরী থেকে তীরে’। হীরেন মুখার্জি খুব নামকরা কমিউনিস্ট এবং ইনটেলেকচুয়াল। যখন ভারতীয় পার্লামেন্টে কমিউনিস্ট পার্টির বেশি সদস্য ছিল না, তখনই তিনি প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে একাধিক্রমে ভারতীয় পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন। আরেকটি সুলিখিত আত্মজীবনী আবুল মনসুর আহমেদের ‘আত্মকথা’, যার কথা কেউ বলেন না। আমাদের সমাজে যারা আত্মজীবনী লিখেছেন, কোনোটিই এ বইয়ের ধারে কাছে আসে না— এ বইটিই সেরা। আবুল মনসুর আহমদ এমনই একজন লেখক তার যতটুকু পাওয়ার কথা তিনি তা পাননি। তিনি খুব চৌকস লোক ছিলেন। তার পেশা ছিল ওকালতি, কিন্তু করতেন রাজনীতি ও সাংবাদিকতা। প্রথম যৌবনে আমি তার সঙ্গে খানিকটা যুক্ত ছিলাম, তখন তিনি দৈনিক কৃষক-এর সম্পদাক ছিলেন এবং আমার ধারণা, তার চেয়ে ভালো খবরের কাগজের সম্পাদক আমাদের আর হয়নি। তিনি নিজে যে শুধু ভালো লিখতেন, তাই নয়, সাংবাদিক তৈরি করতেন। তার আসল কাজ আমি বলব সাহিত্য-ক্ষেত্রে তার ছোট দুটি বই ‘আয়না’ ও ‘ফুড কনফারেন্স’। ব্যঙ্গ রসের বই, ব্যঙ্গ রসের গল্প। একই সময়ে পরশুরাম (রাজশেখর বসু) ‘গড্ডালিকা’, ‘কজ্জলী’ বইয়ের গল্পগুলো লিখেছিলেন। পরশুরামের সফিস্টিকেশন আবুল মনসুর আহমদের মধ্যে ছিল না— তার গল্পগুলো একটু মোটা দাগের, তবু এখনও যদি পড়ে দেখেন, দেখবেন সে লেখাগুলো কতটা প্রগ্রেসিভ ছিল। আবুল মনসুর আহমদের ‘আত্মকথা’ বইটি এ কারণেই সেরা, ধর্মের কথা, রাজনীতির কথা যেভাবে বর্ণনা করেছেন, এভাবে আর কারো লেখায় মুসলমান সমাজকে পাই না। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দুই তিন দশকের, মুসলমান সমাজের নানাবিধ সমস্যার চালচিত্র এমনভাবে আর কোথাও নেই। বিশেষভাবে আকর্ষণ করে তার বিশ্লেষণ ক্ষমতা। তার নিজের ভাবনা-চিন্তার পাশাপাশি ধর্মবিশ্বাস, নিজের ধর্মের সঙ্গে অন্য ধর্মের বিশ্লেষণ, এসব কিছুই খুব অসাধারণ মনে হয়েছে আমার কাছে।

হামিদ কায়সার: সাম্প্রতিক তো দেখছি, শুধু গদ্যই পড়েছেন, কবিতা...?
আবুল হোসেন: কবিতাও পড়েছি। সম্প্রতি অসম্ভব ভালো একটি কবিতার সংকলন আমার হাতে এসেছে। বইটি হলো উইলিয়াম হারমন সম্পাদিত একটি কবিতার সঙ্কলন— বইটি আমি দারুণভাবে আস্বাদন করছি। এটি বেরিয়েছে কলাম্বিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে। এই বইয়ে বিগত সাড়ে সাত’শ বছরের সেরা ইংরেজি ও মার্কিন কবিতাগুলো স্থান পেয়েছে। সাড়ে বারো’শ সাল থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত সময়ের সেরা কবিতাগুলো রয়েছে বইটিতে, সিলভিয়া প্লাথ সর্বশেষ কবি, প্লাথ অবশ্য মারা গেছেন ১৯৬৩ সালে। সেরা কবিতার নির্বাচনটা অন্য রকমের। ওরা সেরা বলেছেন সেই কবিতাকেই, যে কবিতাগুলো সবচেয়ে বেশিবার সংকলিত হয়েছে। ভারি মজার একটি ব্যাপার হলো, পাঁচশ কবিতার এই সংকলনে যে কবিতাটি ১নং সেরা কবিতা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে, অর্থাৎ পাঁচ’শ বার বিভিন্ন সময়ে সংকলিত হয়েছিল সেই কবিতাটি হলো উইলিয়াম ব্লেকের ‘দ্য টাইগার’।

হামিদ কায়সার: অরুন্ধুতি রায়ের ‘দ্য গড অব স্মল থিংস’ পড়ে কি মনে হলো? এ বইটি সম্বন্ধে কিন্তু কিছু বললেন না—
আবুল হোসেন: হ্যাঁ, এটা একটি অসাধারণ ব্যাপার যে, ভারতীয় একজন লেখিকার বই নিয়ে আজ সবখানেই হৈ চৈ পড়ে গেছে। লাখ লাখ ডলার নাকি আয় হচ্ছে বইটি থেকে। কিন্তু আমার কাছে ততটা অসাধারণ মনে হয়নি। শুনেছি, ইংরেজি প্রকাশকরা অরুন্ধুতি রায়কে অগ্রিম টাকা দিয়ে লিখিয়েছেন। ইংরেজরা যখন ভারতীয়দের লেখা প্রকাশ করেন, তখন তারা সেইসব লেখা বেছে নেন, যে-সব লেখায় উপমহাদেশের চারিত্রিক দুর্বলতা আছে। ভাবটা হচ্ছে এই, ইংরেজ আমলে কি রকম সুশাসন ছিল, তারপর কি হয়েছে? সমাজের অবক্ষয়, দুর্নীতি যে যত বেশি করে দেখাতে পারবে সেই তত বেশি করে আদরণীয় হবে। এবং এটা রুশদি খুব ভালো করে বুঝেছেন। রুশদি পড়তে গেলে আমার যেমন গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের কথা মনে পড়ে যায়, অরূন্ধুতি রায়ের বেলাও তাই হয়েছে। রুশদি, অরুন্ধুতিরা মার্কেজ, কুন্ডেরার ধারায় ম্যাজিক রিয়েলিজমের ফর্মে উপন্যাস লিখেছেন। আমি চিরন্তনতার পক্ষে, তাই রুশদি অরুন্ধুতির লেখা আমাকে টানে না। কারণ, এরা সামান্য ব্যাপারকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে বড় করেন। কিন্তু, এই ভারতেই ইংরেজিতে যারা লিখছেন, তাদের মধ্যে আরও বড় মাপের লেখক আছে।
হামিদ কায়সার: যেমন?
আবুল হোসেন: আর কে নারায়ণ, বিক্রম শেঠ।

 

হামিদ কায়সার: দুজন তো দুই সময়ের।
আবুল হোসেন: অবশ্যই। আর কে নারায়ণ প্রবীণ এবং বিক্রম শেঠ নবীন। ভারতীয় লেখকরা আজকাল যে হারে ইংরেজিতে লেখালেখি করছেন, আগে এতোটা ছিল না। হাতেগুণে বলা যায়। নীরদ সি চৌধুরীর আত্মজীবনীমূলক বইটি আমার খুব প্রিয়। তিনি জন্মকাল থেকে একুশ বছর বয়স পর্যন্ত তার জীবনের কথা লিখেছেন তার বইতে। কিশোরগঞ্জের সুন্দর বর্ণনা রয়েছে। এটি শুধু আত্মজীবনী নয়, সেই সময়কাল, ভারতীয় সমাজ রাজনীতি সাংস্কৃতিক জীবনকেও বিধৃত করেছে। এই নীরদ সি চৌধুরী প্রথমে ছিলেন গোড়া, এখন সাহেবের চেয়েও সাহেব হয়েছেন। এমন ইংরেজ প্রেমিক ইংরেজদের মধ্যেও পাওয়া যাবে না। তার লেখা বক্তব্য ও মন্তব্যের সাথে অনেকের মিল হবে না, কিন্তু তার লেখার ক্ষমতা সত্যিই অসাধারণ। পড়ে মুগ্ধ হয়েছি। যাকগে, আর কে নারায়ণ আর বিক্রম শেঠের কথা বলছিলাম। এরা চিরন্তন ধারার লেখক, বিক্রম শেঠ-এর ‘এ সুইটেবল বয়’, একটি অনন্যসাধারণ উপন্যাস। এ সুইটেবল বয় পড়তে গিয়ে দস্তয়েভস্কি বা টলস্টয়ের কথা মনে পড়ে যায়, যে কোনো মহান রুশ উপন্যাসের সঙ্গে এটির তুলনা করা চলে। কোনো ভারতীয় ভাষায় এর সমান মাপের একটি উপন্যাসও আছে বলে আমার জানা নেই। এর মধ্যে ভারতীয় সমাজ-হিন্দু আছে, মুসলমান আছে, প্রাদেশিকতা আছে, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশকেও খুঁজে পাওয়া যাবে এ উপন্যাসে। কলকাতার সঙ্গে উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মনোবৃত্তির তফাৎটা যে কত বড়, তা তিনি অসাধারণ দক্ষতায় প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে, ভারতীয় মুসলমান সমাজকে তিনি যে রকম সহানুভূতির চোখে দেখেছেন এবং তাদের বিভিন্ন সমস্যা বিশেষ করে দেশভাগের পর তাদের জীবনে যে সব সমস্যা দেখা দিয়েছিল সে সব নানাবিধ সমস্যা তিনি অসাধারণ দক্ষতার এঁকেছেন। ‘এ সুইটেবল বয়’ ছাড়াও তার আরও অসাধারণ কাজ রয়েছে। তিনি ‘এ গোল্ডেন গেট’ নামে সনেটে একটি উপন্যাস লিখেছেন। এ এক বিরাট ব্যাপার। বিক্রম শেঠের সাথে কারোর তুলনা হয় না। সনেট ফর্মে কবিতায় পুরো একটা উপন্যাস। ভাবা যায়! আর কে নারায়ণও ক্লাসিক্যাল ধারার লেখক। মানুষের জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, মানুষের আদিমতম ইনস্টিংক্টগুলো তার লেখায় এসেছে। এগুলো এক দুদিনের কোনো সাময়িক সমস্যা নয়— আবহমান কালের, চিরজীবনের। এই চিরন্তন জীবনের প্রতিফলন ঘটেছে তার মহৎ সাহিত্যে। তবে কি, আর কে নারায়ণ, বিক্রম শেঠ, সালমান রুশদি, অরুন্ধুতি রায় যারাই ইংরেজিতে লেখালেখি করছেন তাদের সবারই বাহাদুরি হচ্ছে, তারা সবাই চমৎকার ইংরেজি লেখেন। নারায়ণ ছাড়া এরা বেশির ভাগই মানুষ হয়েছেন দেশের বাইরে।

বাকি অংশ আগামী বেস্পতিবার