অলঙ্করণ: রিফাত বিন সালাম

অলঙ্করণ: রিফাত বিন সালাম

নোনা বাতাস

রিফাহ সানজিদা

প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৫, ২০১৮

কত ঘৃণা করি তারে, কত দূরে তাড়াই তারে, তবু তৃষ্ণা পায় মাঝরাতে। তারে ডাকি আকুল আর্তনাদে। তার ছায়া হয়ে ফিরে আসে সমুদ্রের নোনা বাতাস। কখনো কখনো আসে মিছিলের সেই রাস্তার ধুলো। একবার বেড়াতে গেলে সেই সবুজের পাহাড়ের রাস্তা ধরে, সে আক্ষেপে বলে, ভালো লাগেনি?
লাগবে না তো। ভালো লাগার মানুষ যে নেই তোমার।
আমি সেইদিন শুধু দুপুরের লিলুয়া বাতাসে বলতে চেয়েছিলাম, তুমি সেই ভালোলাগা।
তারপর কত রাত দীর্ঘ আক্ষেপে বয়ে গেছে বাতাস। আমি আর ফিরতে পারিনি এই শহরে। পাহাড়ের ভেতরে সেসব রাস্তা ধরে আর বেড়াতে যাওয়া হয়নি। তারপর কত মিছিলে গেছি, কেউ আমার ছিঁড়ে যাওয়া সেন্ডেল হাতে নেয়নি। জানো? কেউ বলেনি বিরক্তমুখে, মেয়েটা বড় জ্বালায়। আজকাল আমি আবার সেসব রাস্তায় যাই, কুয়াশার মতো হিম ঠাণ্ডায় জমে যায় সব স্মৃতি। খুব শীত শীত করে বাতিঘরের রাস্তায়।
একদিন যেখানে দাঁড়িয়ে তুমি আমি আর আমরা তর্ক করতাম। আমি সমুদ্রে যাই। সাথের মানুষজনেরা অবলীলায় জানায়, তারা ভালোবাসে আমাকে। অথচ কেউ তোমার মতো করে বিদ্রোহ ঘোষণা করে না যে, সমুদ্রের পানিতে সে নামবে না, রাতে জ্বর করবে।
আমিও মুখ ফুলিয়ে কান্না কান্না চোখে তাদের দিকে তাকাই না। শুধু কোনও কোনও রাতে যখন হুমায়ূন পড়ে আকাশে তাকাই, একরাশ কালো মেঘ ভেসে বেড়ায় পুরোনো হলুদ চাঁদের ভেতর। একটা ভাঙা গলায় মৃতকান্না ধরে বাতাস। জামগাছের ভেতর একটা অজানা পাখি কাঁদে তার হারানো সঙ্গীর জন্য বোধয়।
আমার কেবলি মনে হয়, এমন দীর্ঘ সুন্দর রাতে আমি একলা এই অপার্থিব পৃথিবীতে বেঁচে আছি কেন?