প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত

লিটন নন্দী

প্রকাশিত : এপ্রিল ১৩, ২০১৮

সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের বক্তব্য দায়িত্বহীন অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। কোটা বাতিল নয়, সংস্কারই সংকটের সমাধান। দেশব্যাপী ৮ এপ্রিল থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেয়ার সময় আন্দোলনকারীদের প্রতি উষ্মা ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “যেহেতু কোটা নিয়ে এত আন্দোলন। এত কিছু। যেহেতু ছাত্ররা চায় না, তো ঠিক আছে, কোনো কোটাই থাকবে না। বিসিএস থেকে শুরু করে সব সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা থাকবে না। সব বাতিল। এখন থেকে শুধু মেধায় চাকরি হবে।” এহেন বক্তব্য প্রদান করে চলমান আন্দোলনের সুষ্ঠু সমাধান বা স্পষ্ট বক্তব্য প্রদান থেকে তিনি বিরত থাকলেন। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন প্রধানমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেছে।

 

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিলানী শুভ ও সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দি যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক জাতীয় সংসদে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে যে বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে তা দায়িত্বহীন, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘদিন থেকে রাষ্ট্রের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পরীক্ষায় বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মূল দাবি কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের সাথে সামাঞ্জস্যপূর্ণ, প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন যা স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে এর আগে করা হয়েছে। তিনি কোটা সংস্কারের পথে না হেঁটে কোটা বাতিলের বক্তব্য দিয়ে সংকটকে আরো গভীর করলেন এবং আন্দোলনের যৌক্তিকতা অনুধাবনে অক্ষমতা প্রকাশ করলেন। একইসঙ্গে তার বক্তব্য সংবিধানের মৌল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। প্রচলিত কোটা পদ্ধতিতে আদিবাসী, নারী ও প্রতিবন্ধী কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি বয়ে আনবে। আমরা প্রত্যাশা করি সরকার অবিলম্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে কোটা পদ্ধতির সংস্কার সাধনের মাধ্যমে চলমান সংকটের একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু সমাধান নিশ্চিত করবেন। একই সাথে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাই, কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলন অগ্রসর করার।