বাংলাদেশে এখন হলমুখি দর্শকের সংখ্যা বেড়েছে: তিশা

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জুন ২৫, ২০১৮

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে টিভি চ্যানেলের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি সেসব চ্যানেলে নাটক প্রচারের সংখ্যাও বেড়েছে। বিশেষ করে ঈদের সময় নাটক তৈরির হিরিক দেখা যায়। কিন্তু এত নাটক হলেও ভিনদেশি সিরিয়ালগুলো এখনো দর্শক জনপ্রিয়তার শীর্ষে।

এ বিষয়ে কথা বলতে বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত অভিনয়শিল্পী নুসরাত ইমরোজ তিশা এসেছিলেন বিবিসি বাংলার স্টুডিওতে। বিবিসি বাংলা তার দেশীয় টিভি নাটক ও চলচ্চিত্র নিয়ে তার সঙ্গে মেতে ওঠে গপসপে।

বিবিসি বাংলা: ভিনদেশি সিরিয়ালগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশীয় নাটক দর্শকদের কতটা কাছে টানতে পারছে?
তিশা: দর্শক দেখছে বলেই এতো নাটক তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে। আর দর্শক না দেখলে তো এত নাটক তৈরি হতো না। বর্তমানে টেলিভিশন চ্যানেলে দর্শক যতটা নাটক দেখছে তার চেয়েও বেশি দেখছে ইউটিউব চ্যানেলে। তার কারণ হচ্ছে, ইউটিউবে নাটকটা থাকছে দর্শকের যখন ভালো লাগবে সেখান থেকে দেখে নিতে পারবে। বর্তমানে বাংলাদেশে সব ধরণের নাটকের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি দর্শকের সংখ্যাও বাড়ছে।

বিবিসি বাংলা: দেশে সর্বোচ্চ টপ লেভেলে যেসব টিভি চ্যানেলগুলো রয়েছে দর্শক যেগুলো দেখে। সেখানে ভারতীয় চ্যানেলগুলো প্রথম সারিতে রয়েছে বলা যেতে পারে। কলকাতার সিরিয়ালগুলো বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। অনেক সময় বাংলাদেশের নাটকের থেকে সেখানকার চ্যানেলগুলো দর্শকরা বেশি দেখছে। এর পেছনে কি কারণ থাকতে পারে?
তিশা: এখানে আমি দ্বিমত পোষণ করছি। কারণ এটা হতে পারে কয়েক মাস বা কয়েক বছর আগে এটা বেশি হয়েছিল। কিন্তু এখন বাংলাদেশের মানুষ বিশেষ করে ইয়াং জেনারেশন যারা রয়েছেন পাশাপাশি গ্রামে যারা রয়েছেন তারা বাংলাদেশের নাটককেই অগ্রাধিকার দেয় বেশি।

বিবিসি বাংলা: কিন্তু বিভিন্ন জরিপে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। সম্প্রতি বাংলাদেশের কলাকুশলীরা একটি আন্দোলনও করেছিলেন বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলো বন্ধ করার জন্য। তাহলে তারা সে আন্দোলনটা করলো কেন?
তিশা: অবশ্যই আন্দোলন হয়েছে। আসলে যে কোনো কিছুরই তো একটা প্রতিক্রিয়া থাকে। যখন কোনো কিছু অতিরিক্ত মাত্রায় হবে যাবে তখন তো আন্দোলন হবেই। তাই আন্দোলনের ফলে এখন পরিবর্তন হয়েছে। এখন নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে হলে এটা বলতে পারবে টিভি চ্যানেলের সাথে যারা জড়িত রয়েছেন তারা। মোটকথা ক্যামেরার পেছনে যারা কাজ করছেন তারা। কিন্তু একজন শিল্পী হিসাবে আমি বলবো, এখন অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও আরও পরিবর্তন হবে।

 

বিবিসি বাংলা: বর্তমানে x y z (প্রতীকি নাম) এরকম তিন থেকে চারজন শিল্পীর প্রতি নির্মাতারা বেশি ঝুঁকছে। মনে হয়, এদেরকে ছাড়া নাটক চলবেই না। তাদের নাটকই হতে হবে। নির্মাতাদের এই ধারণার কারণটা কি?
তিশা: এখানে নির্মাতাদের দোষ না। চ্যানেল থেকে বলা হচ্ছে তাদেরকে x y z নিয়ে কাজ করতে হবে। বা অনেক ক্ষেত্রে পরিচালকরা মনে করছে যে স্ক্রিপ্টে যাকে নিয়ে ভাবা হচ্ছে তাকে নিয়েই কাজ করতে হবে বা x y z নিয়ে চিন্তা করেছি তাদেরকে নিয়েই কাজ করতে হবে। আবার বেশিরভাগ পরিচালক আছে যারা খুব অল্প সংখক শিল্পী রয়েছে যাদের সাথে কাজ করে তারা বেশি সাচ্ছন্দবোধ করে। তার বাইরে আর কোনো শিল্পীকে নিয়ে কাজ করতে চায় না। এখানে অনেকে অনেক মন্তব্য করে কিন্তু তাদের নাটক আবার তারা দেখেও।

বিবিসি বাংলা: আপনি তো বর্তমানে নাটক এবং চলচ্চিত্র দুটোতেই কাজ করছেন? আপনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ভবিষ্যতের দিকে যদি তাকান তাহলে সেখানে কি দেখেন?
তিশা: বাংলাদেশে এখন হলমুখি দর্শকের সংখ্যা বেড়েছে। তারা সিনেমা হলে তাদের পরিবার নিয়ে যাচ্ছে। ভালো ভালো সিনেমা দেখছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে সিনেমার সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। সিনেমার লুক পরিবর্তন হয়েছে। পরিচালক, শিল্পী থেকে শুরু করে সবকিছুতেই পরিবর্তন এসেছে। এখন আমি খুবই আশাবাদী, আজ থেকে পাঁচ বছর পরে সিনেমার সংখ্যা বাড়বে, সিনেমা হল বাড়বে। পাশাপাশি হলমুখি দর্শকের সংখ্যাও বাড়বে। তখন পরিবেশটা আরও বেশি ভালো হবে। বিবিসি বাংলা