সংগৃহীতঃ মার্ক অশেকানাজি

সংগৃহীতঃ মার্ক অশেকানাজি

বীতশোক ফিরে এসো

জুয়েল মাজহার

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮

১.

বিকেলের করোটিতে সন্ধ্যারাগ ঢেলেছে আগুন; জ্যোতিরথে চোখ রেখে চেনা পথ শান্ত পায়ে হেঁটে নিজেকে শুনিয়ে কোনো গূঢ়কথা, গোপন মর্মর বীতশোক, চলে গেছে। পশ্চিমের প্রত্যন্ত প্রদেশে। আমার ‘সামান্য ক্ষতি’?– বিপর্যয়! খসে পড়ে ফল! বহুঘুম-রাত্রিব্যেপে অনৃত ঢেউয়েরা!— তরী ডোবে!

 

২.

পুরাতন বিষণ্নতা, গোপনে যে আঙুরলতায় ফল রূপে পেকে ওঠে, সারারাত তস্করের ভয়ে, শুষ্ক তৃণে ঢেকে তারে সযতনে দিয়েছে প্রহরা।

 

৩.

প্রত্যহের দুঃখ-দৈন্য বেদনা ও ক্লেশে–- হয়তো সে– বসন্ত-রুধির এনে চেয়েছিল কিছুটা মেশাতে; –যেন নীল প্রজাপতি এসে তার কাছে চায় মদ; অধীর মক্ষিকা শুধু দ্রাক্ষা মেগে উড়ে উড়ে চলে।

 

৪.

সন্তর্পণে একা বসে পানপাত্রে দিল সে চুমুক; লম্বা ঢোঁক গিলে নিয়ে স্তনলোভী শিশুর নিয়মে আলগোছে মৃগনাভী ভরেছে উদকে– স্বার্থপর!! ‘শিশির-চোঁয়ানো রাতে, মধ্যদিনে দহনের শেষে’ অন্যরা ঘুমিয়ে ছিলো?— এ-সুযোগে হলো সে কর্পূর?

 

৫.

হেমন্তের মঞ্চ থেকে গরুড়ের ছড়ানো ডানায় অতর্কিতে চড়ে বসে শরীর সারাতে গেছে– দূরে। কত দূরে? কাউকে বলেনি; শুধু উপশমহীন অনন্ত গোধূলিপথ ছেয়ে আছে হলদে পাতায়! –এই তবে গূঢ়লেখ? বৃথা তব নর্তকী ও মদ ?

 

৬.

বীতশোক, তুমি আছো! অনন্ত পশ্চিমে নাকি পূবে? অসম্ভব ভুলে থাকা; লিথিজলও স্মৃতিসমুজ্জ্বল! অফুরান দ্রাক্ষা থেকে অন্ধকার প্রশীর্ণ আঙুলে নিজের ভিতরে, চুপে, শমদায়ী পেড়ে আনো ফল?

 

৭.

বিকেলের করোটিতে সন্ধ্যারাগ! জ্বলছে আগুন! ফিরে এসো সেই পথে;– ঝরাপাতা-মুখর সরণি– কিছুটা যবের মোহে, কিছু প্রেমে, শর্করার টানে।

 

৮.

উপশম হলো ব্যথা? পিঞ্জিরার ভেতরে পাখির? দ্রুত তবে চলে এসো, পরিত্যক্ত আঙুরের বনে; অনন্ত গোধুলিপথ ভরে দিয়ে পাতায়, মর্মরে।