বুড়া মিলিটারি!

আশিকুজ্জামান টুলু

প্রকাশিত : মে ২৯, ২০১৮

যাকে চাই তাকে পাই না
যাকে পাই তাকে চাই না

কেমন যে লাগে! বুল্লেই তো বলবেন বুইলছে। বউকে নিয়ে আমার ব্লাড টেস্টের জন্য ড্যানফোরথ আর মেইন (এখানকার) ডায়গোনস্টিক সেন্টারে গিয়েছি। আমাদের বয়সী এক ভদ্রলোক হঠাৎ করে আমার সাথে এমন খাতির করা শুরু করলো যে, প্রথমে সন্দেহ এবং পরে লজ্জা লাগতে থাকলো। পারলে আমার গায়ের ওপর আইসা পড়ে।

বউ বাংলায় বললো, মনে হয় উনি সমকামী। টোরান্টোতে সমকামী একেবারেই নরমাল একটা বিষয়। আমি শালা লজ্জায় শেষ। প্রথমে আমি ভদ্রতা করে কথা বলেছি এবং সেটাই হয়েছে আমার কাল। একসময় উনি আর দূরে থাকলেন না, ঠিক আমার পাশের সিটে এসে বসলেন। ওনারে তো থামানো যাচ্ছে না, উনি অস্থির হয়ে কী করছে আর কী বলছে, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

আমি যতই ওনার কথা না শোনার ভাব করছি, উনি ততই আমাকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন কথা বলে চলেছে। বউ সাথে আছে, এরপরও এরকম করছে। আর বউ না থাকলে আইজকা গেছিলাম। উ আমারে লইয়াই ছাড়তো। কোনোরকমে টেস্ট করাইয়া নাকে-মুখে ভাগছি। গাড়িতে আইসা দেখি, উনি আবার বাইরে আইসা দেখতেছে, কই যাই। কন, এই বয়সে এই আদিখ্যেতা সহ্য হয়? তাও আবার আমারে? আই কিচ্চি?

একটা জোক মনে পড়ে গেল। একবার স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় এক গ্রামে পাকিস্তানি মিলিটারি আসবে বলে গ্রামের সব ইয়াং মেয়ে গ্রাম থেকে লাইন ধরে পালিয়ে যাচ্ছে। ওদের পিছু পিছু এক বুড়িও যাচ্ছে। দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণরত এক উৎসাহী গ্রামবাসী বুড়িকে জিজ্ঞাসা করলো, ওরা পালাইতেছে কারণ ওরা হইলো জোয়ান, তোমার কি হইলো? তুমি পালাও কেন?

বুড়ি জবাব দিল, হোনলাম বাবা বুড়া মিলিটারিও আইবো।

জোকটা বলার কারণ হচ্ছে যে, আমাদের জন্য এখানে বুড়া মিলিটারির ব্যবস্থাও আছে।

লেখক: সঙ্গীতশিল্পী