অঙ্কনঃ রিফাত বিন সালাম

অঙ্কনঃ রিফাত বিন সালাম

ভোরের কাক

নাঈমুল হাসান হিমেল

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮

ঘরের চালে একটি কাক খুব জ্বালাতন করে। ভোর থেকে শুরু হয় চালজুড়ে তার ধুপধাপ হুটহাট।  ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে ঘুম থেকে উঠি। স্কুলে যাই। বেশ কয়েক মাস ধরেই এভাবে চলছে কাকের অত্যাচার। কত গালি দিয়েছি কত তাড়িয়েছি বজ্জাত কাকটাকে। তাও টিনের চালে এসে কর্কশ ডাক ছাড়ে। চালজুড়ে চলে লম্ফ-ঝম্ফ। আবার মাঝে মাঝে বন্ধুও জুটিয়ে নিয়ে আসে দুই একটা।

কী তাদের উল্লাস! আর আমার আক্রোশ। আমার রাগ দেখে যেন তারা আরও মজা পায়, আর আরও জোরে চেঁচায়। যেন আমার আক্রোমে তারা বিদ্রুপের হাসি হাসে!

আজ সোমবার। স্কুলে আমার উপস্থিতির রেজাল্ট দিয়েছে। আবাক করার বিষয়, এ সেমিস্টারে আমার উপস্থিতির হার ৮৫ শতাংশ। স্যাররাসহ সবাই খুব অবাক। এমন তো কখনও হয় না। গতবার তো পরীক্ষাতেই বসা হলো না এই উপস্থিতির জন্য। পিতামাতা ছাড়া একা একজন ছাত্রের জন্য ভোরে উঠে স্কুলে যাওয়াটা কী খুব সহজ?

আজও কাকের ডাকে ঘুম ভাঙল। কী জানি, আজ আর তেমন বিরক্ত হলাম না। কলতলায় দাঁড়িয়ে ভাবছি, মা-বাবা থাকলে কি এভাবে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিত? তাদের সাথেও কি রাগ করতাম? রাগ করলেও কি তারা প্রত্যেক দিন ঘুম থেকে জাগিয়ে দিত?

কাকটার দিকে আজ মমতা মাখা চোখে তাকাচ্ছি। অপরিচিত কাকটাকে আজ বড্ড বেশি আপন লাগছে।