আফরিদা তানজিম মাহির চিত্র প্রদর্শনি থেকে

আফরিদা তানজিম মাহির চিত্র প্রদর্শনি থেকে

মাহি এখন একটা নাম

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৫, ২০১৮

"আমার মেয়ে, ছোট্ট সুন্দর একটা পরির মতো মেয়ে, ছিল, ছিল মানে ছিল, এখন আর নাই, আমার একমাত্র গর্ব, আমার একমাত্র আশ্রয়কে এইমাত্র আমি নিজ হাতে ফ্যানের মধ্যে ঝুলতে থাকা অবস্থা থেকে নামালাম।"

 

কথাগুলো কবি ও কথাসাহিত্যিক রহিমা আফরোজ মুন্নীর ফেসবুক ওয়াল থেকে পাওয়া। আজ সোমবার সন্ধ্যা থেকে মুন্নী তার ওয়ালে একের পর এক এধরনের স্টেটাস দিতে থাকেন, যেগুলো পড়ে ধারণা করা হয় কন্যা বিয়োগ ঘটেছে এই লেখিকার। 

 

মুন্নী লেখেন:"আমার বাচ্চাটা আর নাই, ও বেঁচে গেছে, এইবার সত্যি বেঁচে গেছে, সোনামণি তুই স্বার্থপর, আমাকে একা কষ্ট পাওয়ানোর জন্য রেখে গেছিস? এইমাত্র সত্যি সত্যি ঘটল এটা, আমার মেয়েটার ঠাণ্ডা শরীরের কোমর ধরে ছিলাম আমি, বাহাদুর কেঁচি দিয়ে ওর গলার ফাঁসটা কেটে দিল। আমি ওকে শোয়ালাম, ইচ্ছামতো গালি দিলাম, ওঠ শয়তান, বদমাইশ তুই, এমন করতে পারবি না তুই... আচ্ছা, আমার বানান ভুল হচ্ছে না তো, খুব লজ্জার হবে ব্যাপারটা।"

 
"ওর এক্সিবিশন চলছে। সামনের মাসে অস্ট্রেলিয়া যাবে আর্টস নিয়ে পড়তে, স্কলারশিপও পেয়েছে, সব সুন্দর সাজানো গোছানো, কিন্তু ওর এসবে সুখ নাই, শয়তান একটা, বেশি পাকনা, সবেতেই উনি বেশি বুঝে, আমার জান খেয়ে এখন কেন গেলি?" মুন্নী আরো লেখেন। "ওহ, ২০টা বছর ধরে তোকে একটু একটু করে বড় করেছি না আম্মু? বল? শয়তান তুই একটা, কেন গেলি বাচ্চাটা? ও বাবুরে কেন গেলি?"


মুন্নীর আকুতি: "আফরিদা তানজিম মাহি এখন একটা নাম, শরীর নাই, মন নাই, নাম আছে খালি। আমার সাথে ঠিক করেন নাই আপনি, এইরকম কথা ছিল না, আপনি আমি এত ভাল বন্ধু তাহলে কিসে আটকাল আপনাকে? কালরাতেও অনেকক্ষণ আপনাকে বুঝিয়েছি, আপনি এই প্রথম শান্ত হয়ে বিনা আর্গুমেন্টে আমার কথা শুনলেন, আমি অবাক হচ্ছিলাম, আপনি আমি শুরু হলে কেউ কাউকে কথাই বলতে দেই না, কাল কি সুন্দর সব বুঝলেন, তাহলে?

 

"এটা ঠিক হলো না, আপনি আমি একসাথে যাবার কথা পার্থে, আপনার ক্যাম্পাস দেখব না আমি? আচ্ছা, না দেখলাম, কিন্তু কালকে কি বলেছিলাম বলেন তো? আপনার ট্যালেন্ট নিয়ে কথা বলছিলাম, আপনি একদিন হৈ চৈ ফেলে দেবেন ছবি আঁকিয়ে হিসেবে.. আজব, আপনার লোভ হলো না একটুও? কেন হলো না? কেন আপনি অন্যরকম হলেন? তাহলে নাইবা জন্মাতেন?"

 

পোস্টগুলো দেয়ার কিছুক্ষনের মধ্যে তার ফেসবুক বন্ধুদের নানা জিজ্ঞাসায় ভরে যায় মুন্নীর ওয়াল, মুহূর্তেই তৈরী হয় শোকের আবহ। অনেকেই কন্যাহারা মাকে সান্তনা দিতে থাকেন। 

 

মুন্নীর কাছ থেকে কোন প্রশ্নের উত্তর না আসায় ছাড়পত্রের পক্ষ থেকে তাকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জানা যায় না আসলে কি ঘটেছিল। 

 

পরবর্তিতে মুন্নীর ঘনিষ্ঠ বন্ধুর ফেসবুক স্টেটাস দেখে তার কন্যা বিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত হলেও এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছুই জানা যায় নি। 

 

তবে ঘটনা যেটাই হোক, ছাড়পত্রের পক্ষ থেকে মুন্নীর জন্য রইলো সমবেদনা।