Freedom by Sandy Tracey

Freedom by Sandy Tracey

যুদ্ধবিরোধী কবিতা

পর্ব ২

অনুবাদ: রথো রাফি

প্রকাশিত : মে ২৪, ২০১৮

২০১৪ সালে যখন ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েল জলস্থলআকাশ থেকে বোমাবর্ষণ করছিল, সারাবিশ্বে ইসরায়েলি বর্বরতার যখন ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছিল, সেসময়েই এ কবিতাগুলো ভাষান্তর করেছিলেন নব্বই দশকের মেধাবী কবি রথো রাফি। কিন্তু এরপর কবিতাগুলো কোথাও তিনি প্রকাশ করেননি। ছাড়পত্রের পাঠকদের জন্যে ধারাবাহিকভাবে কবিতাগুলো প্রকাশ করা হলো:

রুসলান কেরিমভ (আজারবাইজান, ১৯৩০)

দিনগুলো

দিনগুলো রাত হয় আর রাতগুলোও যে হয় দিন
আগুনেই জ্বলে ওঠে ছোট্ট উপত্যকা আবারো,
বধির ঈশ্বরও কান দেয় না প্রার্থনায় তোমার
আজকের দিনতো কালো, আগামীকাল ভয়াবহ আরো।

যুদ্ধ-পর্যটকরা নীরবে তোমার মরে যাওয়া দেখে,
কী ব্যতিক্রমী কী অপূর্ব দৃশ্য বলে আহা উহু করে!
রাজনৈতিক নেতারা, যেমন হয়, শুয়ে থাকে ঘরে,
আর দেখো তোমাকেও কিন্তু পাত্তা দেয় না কেউ!

সেই পুরানা কাসুন্দি ঘাঁটা, নতুন তো কিছুই নয়:
যুদ্ধবাজরা সারাক্ষণ যুদ্ধ করে বাড়িয়ে চলে আয়;
আর তোমার জন্য থাকে শুধু ঘৃণা, অন্যকিছু নয়:
তুমি আর স্বপ্ন দেখো না, ছাড়ো আশার কথাও!

একবার বড়ো হলে, তুমিও পাবে সন্ত্রাসী খেতাব
আর তাই তাদের ডাক পড়বে ডাক পড়বে আবার
গুঁড়িয়ে দিতে এই একটুকরো দেশটাকে তোমার
ভুলেছে যাকে আর-সবাই, আর করেছে প্রতারণা!


সামিহ আল কাসিম (ফিলিস্তিন:১৯৩৯)

আমাকে হত্যার দিন

যে দিন আমি নিহত হবো
আমার পকেটগুলো ঘেঁটে দেখো, হে হত্যাকারী আমার
ভ্রমণের কিছু টিকেট পাবে
একটা টিকেট পাবে শান্তির পথে ভ্রমণের
একটা পাবে জমিজমা আর বৃষ্টিবাদলার দিকে যাওয়ার
আর একটা টিকেট পাবে
মানবজাতির নৈতিকতার পথে ভ্রমণের।

হে প্রিয় হত্যাকারী আমার, করজোড়ে মিনতি করছি:
টিকেটগুলো ফেলে যেয়ো না, কিংবা করো না অপচয়।
সঙ্গে নিও তাদের, আর লাগিও কাজে।
আর মিনতি করছি অন্তত ভ্রমণ করার।


রাচেল টিভিয়া বাক (ইসরায়েল ১৯৬০)

ফিলিস্তিনের ধ্বংসস্তূপের ওপর বেঁচে আছি

ধীরেই বলতে হয় গভীর কথা
তবু সুপ্রাচীন ক্রোধে
তা লাফিয়ে ওঠে জিভের ডগায়
আর ভয়ে
কী দ্রুত শুকিয়ে যায়

 

একটি দেশের ধ্বংসস্তূপে
একটি রাতের গভীরে
প্রজ্জ্বলিত

মাত্র একটি
দগ্ধ ভাবনা
আর মাত্র
একটি স্ফুলিঙ্গ

দগ্ধ হাতের পাতায়
নিবিড় করে স্থাপিত
আকারপ্রাপ্ত পাথুরে স্বপ্নে
আর বাহিত সে ইতিহাস জুড়ে

অন্ধকারে চলমান
আমাদের নগ্ন পায়ের নিচে

সবই অচেনা
ফিলিস্তিনের এই ধ্বংসস্তূপের ওপর

জাকারিয়া মোহাম্মদ (ফিলিস্তিন, ১৯৫১)

পিঁপড়ে

প্রেম একটি পিঁপড়ে
একটা কাঠিতে

কাঠিটা এক শিশুর হাতে

অন্তহীনভাবে এদিক-ওদিক আর উপর-নিচ করছে সে কাঠিটাকে
পিঁপড়েটিরও আশা নেই কোথাও পৌঁছানোর