যৎসামান্য নিজের কথা

আবু হাসান শাহরিয়ার

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭

চিন্তাশীল কথা বলো, আছি। স্বভাষা-বিভাষার কালজয়ী কবিতা নিয়ে আলোচনা করো, আরও বেশি আছি। পকেটে কবিতা থাকলে শোনাও; ভালো লাগলে আরেকটা শুনতে চাইব। না লাগলে থামিয়ে দিয়ে চা বানিয়ে খাওয়াব। বাড়ি বয়ে বদমায়েশি করতে এলে ভিন্নমূর্তি দেখবে। ঠ্যাং ভেঙে হাতে ক্রাচ ধরিয়ে দেব। বিনে পয়সার ক্রাচ হলেও বেশ মজবুত। জানো তো, আমি ঠাকুরপাড়ার ছেলে। ওই পাড়ার ছেলেরা ধারে আর ভারে সমান কাটে। কুমিল্লার মায়েরা আজও ঠাকুরপাড়ার নাম বলে শিশুদের ঘুম পাড়ায়। পাড়াটির কারণে কৈশোরে আমার প্রথম মারামারিতে হাতেখড়ি। প্রথম তারুণ্যে হকিস্টিক হাতে ঘোরাঘুরি করেছি শহরে। মাথায় বুদ্ধিসুদ্ধিও কিছু ছিল বলে স্কুলে-কলেজে শিক্ষকরা ভালোছাত্র জানতেন। একবছর মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনার সুবাদে শরীরের দুইশ ছয়খানা হাড়ের কুষ্ঠি-ঠিকুজি ও শবব্যবচ্ছেদ সম্পর্কেও একটু-আধটু ধারণা রাখি। একাত্তরে কিশোর-মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। একসময় সব ছেড়েছুড়ে কবিতার সন্ন্যাসী হয়েছি। তবে, চুলটা এখনও গুণ্ডা-ক্যাডারদের মতোই আছে। কী যেন একটা প্রবাদ আছে না, "বৃক্ষ তোর...?" ওটাকেই আমি চিরুনবিন্যস্ত করে বলি-- "কবি তোর নাম কী, চুলে পরিচয়।" আর, বদলোক দেখলে এখনও কৈশোরে-প্রথম তারুণ্যে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে। আমি হেজিপেজি কবি নই। খালিপায়ে হাঁটি বটে, মাথায়ও যৎকিঞ্চিৎ ঘিলু আছে। ভিক্ষার লোটাহাতে ঘুরি না। অতএব, অপ্রস্তুত কর্মবীর হয়ে আমার সঙ্গে কুতর্ক করতে এসো না। মাথায় কিছু থাকলে সাধুবাদ।