রিফাত চৌধুরীর ‘একটি দীর্ঘশ্বাসের কবিতা’

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯

কবি ও কথাসাহিত্যিক তানিম কবির। প্রিয়বরেষু—

কল্পিতা, কেমন আছো? কেমন আছো, কল্পিতা?
তোমার সঙ্গে অনেক কথা আছে, কল্পিতা।
আমি একেবারে বদলে গেছি।
তোমাকে ছেড়ে আমি থাকতে পারছি না।
রাতগুলি আমাকে হা করে গিলতে আসে।
কল্পিতা প্লিজ। আমার কথাটা শোনো একবার—
তোমার সঙ্গে অনেক কথা আছে,
তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারছি না।

কল্পিতা কেমন আছো? কল্পিতা কথা বলছো না কেন?
তোমার সঙ্গে আমার অনেক কথা আছে।
একটিবার তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাই
কল্পিতা... কল্পিতা... প্লিজ,
একবার আমাকে কথা বলার চান্স দাও—

কল্পিতা। আমি তোমাকে ফোন করলে কে কী মনে করবে?
আফটার অল আমি তোমার স্বামী।
তোমাকে আমি প্রায়ই ফলো করি, তুমি টের পাও না
অফিসের আর পাঁচটা লোকের সঙ্গে হৈ-হুল্লোড়
ফুর্তি করতে করতে আমার কথা তুমি একেবারে ভুলেই গেছো
তোমাকে আমি দূর থেকে রোজ দেখি
আর নতুন করে ভালোবাসায় পাগল হয়ে যাই—

কল্পিতা, কেমন আছো?
তোমার সঙ্গে অনেক কথা আছে, কল্পিতা।
তোমাকে ছেড়ে আমি ভীষণ কষ্টে আছি।
এতদিন এ-কষ্ট টের পাইনি, কিন্তু এখন টের পাচ্ছি।
তুমি আমার কাছে ফিরে এসো।
আমার ফাঁকা জায়গাটা ভরে দাও।
নইলে আমি মরে যাব... বিশ্বাস করো।
তুমি আমার বাড়িতে, উঁহু্, আমার বাড়িতে নয়,
তোমার বাড়িতে ফিরে এসো, তোমাকে অনেক কথা বলব।
আমাকে তুমি ক্ষমা করতে পারো না, কল্পিতা?
মানুষের কি ভুল হয় না?
অনুতাপে-অনুতাপে আমি জ্বলেপুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছি।
আমার অবস্থাটা একবার ভেবে দ্যাখো—

—তোমার সন্তান এখনো আমাকে ‘বাবা’ বলে ডাকতে চায়।
আর আমি ‘বউ’ বলে ডাকতে চাই,
প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতে চাই।
এখনো সময় আছে—ফিরে এসো।
তা না হলে ফল খুব খারাপ হবে।
‘অ্যাকোয়া রিজিয়া’র নাম শুনেছো?
না সুলতানা রিজিয়ার কোনো আত্মীয় নন তিনি।
গাঢ় নাইট্রিক অ্যাসিড আর হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড
মিশিয়ে তৈরি এক মারাত্মক অ্যাসিড।
সোনাও গলিয়ে দিতে পারে অতি সহজে।
এই অ্যাসিড ভরা বাল্ব তোমার মুখে ছুড়ে মারলে
তোমার ওই সোনার মতো রঙের কী হাল হবে বুঝতে পারছো?
তাই তোমার পায়ে ধরে বলছি, কল্পিতা, ফিরে এসো।
আমাকে খারাপ হয়ে যেতে দিও না, লক্ষ্মীটি।

কেমন আছো, কল্পিতা?
আমার কষ্টটা তুমি কেন বুঝতে চাও না বলো তো।
আমি যে একা-একা শেষ হয়ে গেলাম—
কল্পিতা, একটিবার আমার সঙ্গে দেখা করো।
তুমি পাশে না থাকলে আমি কেমন করে সেরে উঠব?
কেমন করে আবার ভালোবাসব তোমাকে?
কল্পিতা, তোমাকে আমি অনেক চিঠি লিখেছি...
কল্পিতা, মুখটা তুলে আমার দিকে একবার তাকাও—
আমি তোমাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি, কল্পিতা।
তোমাকে ফিরে না পেলে আমি মরে যাব।
তোমাকে ফিরে না পেলে আমি শেষ হয়ে যাব, কল্পিতা...
তুমি ফিরে এসো। তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।
কল্পিতা , আমি তোমাকে কতবার বলেছি...
কল্পিতা—তোমাকে আমি ছাড়ব না, কিছুতেই ছাড়ব না।

কল্পিতা, তোমাকে আমি ছাড়ব না।
তোমার কাছে আমি মরমে মরে আছি।
অন্তরের অতল হতে আত্মপ্রকাশ করল দুটি মৃত শব্দ।
আমি মরেছি।
সব কথার প্রকাশ, সব আবেগের অনুরণন,
সব নীরবতার ঘনিষ্ঠতা সেই একটি ছাঁটে
কথার মধ্যে যেন সমাহিত হয়ে আছে।
তুমি... তুমি আমাকে...
কল্পিতা, আমার কল্পিতা...
সেইসব মন জমানো রাত আর রূপ কি ভােলার!
তুমি সেই দিনগুলির নায়িকা।
কল্পিতা, তুমি কি আমার কাছে আসবে,
এসো কল্পিতা। আমি যে একা থাকতে পারছি না।