রোজা সম্পর্কিত বোখারি শরিফের হাদিস

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : মে ২৩, ২০১৮

আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল বোখারি আল জুফি বোখারি শরিফের হাদিসগুলো সঙ্কলন করেন। তার সঙ্কলিত হাদিসগুলোকে বিশুদ্ধ হিশেবে মুসলিম বিশ্বে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করা হয়। এ সঙ্কলনের রোজা সম্পর্কিত অধ্যায় থেকে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করা হলো:
 
এক.
এলোমেলো চুলসহ গ্রাম্য এক আরব রাসুলের (স.) কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে বলুন, আমার ওপর আল্লাহ কত ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন? রাসুল বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত। তবে তুমি যদি কিছু নফল আদায় করো তা ভিন্ন কথা। গ্রাম্য আরব জিগেশ করল, এবার বলুন, আমার ওপর কত রোজা আল্লাহ ফরজ করেছেন? রাসুল বললেন, রমজান মাসের রোজা। তবে তুমি যদি কিছু নফল রোজা পালন করো তা ভিন্ন কথা। গ্রাম্য আরব জিগেশ করল, আমায় বলুন যে, আল্লাহ আমার ওপর কী পরিমাণ জাকাত ফরজ করেছেন? রাসুল তাকে ইসলামের বিধান জানিয়ে দিলেন। এরপর গ্রাম্য আরব বলল, ওই সত্তার কসম যিনি আপনাকে সত্য দিয়ে সম্মানিত করেছেন, আমার ওপর আল্লাহ যা ফরজ করেছেন আমি এর থেকে কিছু বাড়াবোও না, কমাবোও না। রাসুল বললেন, সে সত্য বলে থাকলে জান্নাত লাভ করল।

দুই.
রাসুল (স.) বলেছেন, রোজা ঢাল স্বরূপ। সুতরাং অশ্লীলতা ও মূর্খের মতো কাজ করবে না। যদি কেউ তোমার সঙ্গে ঝগড় করতে আসে, তোমাকে গালি দ্যায়, তবে দু’বার উচ্চারণ করো, আমি রোজা আছি। ওই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশকের চেয়েও উৎকৃষ্ট। আল্লাহ বলেছেন, রোজাদার আমার জন্যে আহার, পান ও কামাচার ত্যাগ করে। রোজা আমার জন্যে। তাই এর পুরস্কার আমি নিজেই দান করব। প্রত্যেক ভালো কাজের বিনিময় দশগুণ।

তিন.
হুযায়ফা (রা.) বললেন, আমি নবি মুহম্মদকে (স.) বলতে শুনেছি, পরিবার, ধন-সম্পদ ও প্রতিবেশীই মানুষের জন্যে ফিতনা। আর নামাজ, রোজা ও দান এর কাফফারা হয়ে যায়।

চার.
রাসুল (স.) বলেছেন, রমজান মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় এবং বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। আর শয়তানগুলোকে শৃঙ্খলিত করে রাখা হয়।

পাঁচ.
আয়েশা (রা.) নবি (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সঙ্গে সওয়াবের আশায় নিয়তসহ রোজা পালন করবে, কিয়ামতের দিন তাকে সেভাবেই তোলা হবে। কেননা কিয়ামতের দিন নিয়ত অনুযায়ীই লোকদের তোলা হবে।  

ছয়.
নবি (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ক্বদরের রাতে বিশ্বাসের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করে, তার পেছনের সব পাপ ক্ষমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি বিশ্বাসসহ সওয়াবের আশায় রমজান মাসে রোজা পালন করবে, তারও পেছনের সব পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

সাত.
নবি (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যে বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো দরকার নেই।

আট.
আদি ইবনে হাতিম (রা.) বলেন, যখন এই আয়াত অবতীর্ণ হলো, ‘তোমরা পানাহার করো কালো রেখা থেকে শাদা রেখা যতক্ষণ স্পষ্টভাবে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়’, তখন আমি একটি কালো এবং একটি শাদা দড়ি বালিশের নিচে রেখে দিলাম। রাতে আমি এগুলোর দিকে বারবার তাকাতে লাগলাম। কিন্তু আমার কাছে পার্থক্য প্রকাশিত হলো না। তাই সকালে রাসুলের (স.) কাছে গিয়ে বিষয়টি বললাম। তিনি বললেন, এই দুই লেখা হচ্ছে রাতের আঁধার ও দিনের আলো।

একুশে বইমেলা ২০১৮