শ্রেয়া চক্রবর্তীর ৩ কবিতা

প্রকাশিত : অক্টোবর ০৬, ২০১৮

আমি এবং গাছ

যে মানুষ একা,
তার সাথে গাছেদের সখ্য হয়।
গাছের ভিতর এক অপরূপ আছে
একটি মানুষ এলে পাশে
গাছটি কেবল তাকে ইশারায় ডাকে!
কবে তার সূর্যাস্থ দেখা ছিল বাকি?
সূর্যমুখীর পাশে বসে
দু-কথা বলতে চাওয়া পানকৌড়ি পাখি—
পাখি নয়, একটি মেয়ের কাছে
পৃথিবীর গূঢ় কথা জানতে চেয়েছে সেও
একটি বন্ধুহীন গাছ।

পুরনো বন্ধুকে

পুরনো বন্ধুর সাথে কথা হলে ভালো লাগে
জানলা দিয়ে ঢুকে পড়ে প্রাচীন হাওয়ারা
বৃষ্টিগন্ধ মেখে ঘরটিও ওড়ে, খুব ওড়ে
আর ওড়ায় আমাকে ততদূর—
যেখানে বন্ধুর চোখদুটি ফুটে আছে পতঙ্গের মতো
তার দুই হাত থোকা থোকা ফুল
আর হাওয়ার ভিতর তার ঘোরলাগা শব্দেরা
ঝরে পড়ে।

কেবল এই সুরঙ্গের থেকে দূরে
বন্ধু আমায় নিয়ে যায় অনন্তের দিকে
আর আমি তার সাইকেলে বসে
শিস দিয়ে গেয়ে উঠি অমৃতের গান।

সেইসব চলে যাওয়া

তোমার বাড়ির ঠিক পাশ দিয়ে যেতে যেতে
মনে হয়, তুমি কি জেনেছ এই সেকেন্ডের চলে যাওয়া?
যদি-বা জেনেছ, তাতে এনেছ কি হৃদয় জানলায়
এক খুব জোর বসন্ত হাওয়া? এমন উদাস করা যাতায়াত
লেগে থাকে। পৃথিবীর ধ্যানবিন্দু কিছুতে সরে না।
তবু ভাবি যেতে যেতে যদি ফের আসো তুমি
একটু দাঁড়াও এই বারান্দায় ঝুঁকে,
সূর্যও গলে যাবে ত্রিকালবিলাসী কোনো ঝরোখার নিচে।
এমনই বাতাস তুমি এখনই মুখর.
হয়তো বা পড়শির ডাকে, কিংবা
টবের ফুল তোমার হাতের তিলে রেণুটি মাখাবে!

এসবের ফাঁকে ফাঁকে দেখবে কি তুমি
টলে যাচ্ছি আমি ফের ভ্রাম্যমাণ শীতে—
কীই-বা করার আছে হৃদয়ের, চলে যাওয়া ছাড়া?