সাঈফ ইবনে রফিকের সুফিকবিতা

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ০৬, ২০১৮

আগুন

একটা কাগজে বড় বড় করে সুন্দর হস্তাক্ষরে লিখলাম, আগুন!
প্রবল বিশ্বাসে অক্ষরগুলো
আঙুল চেপে ধরলাম।
কিন্তু আঙুল পুড়ল না।
এর মানে কী আমার বিশ্বাসে ঘাটতি আছে?

`অসাম্প্রদায়িক!`

সৈকতে যতবারই লিখলে, ‘অসাম্প্রদায়িক!’
ততবারই ঢেউ এসে মুছে দিয়ে যাচ্ছে
বালির অক্ষর। হাইড্রোলিক
গবেষণায় লবণ বেশি পড়ে গেছে।
তারারাও মিটিমিটি হাসে,
‘ধর্মনিরপেক্ষ’ নামের
স্থির আলোয় উজ্জ্বল কোনো গ্রহ নেই!

রমজানে লালসালু মোড়ানো চায়ের দোকান।
যত না আল্লাহর ভয়,
এর চেয়েও ঢের বেশি লোকলজ্জা
প্রগতি প্রগতি বলে ধূমায়িত কাপে
তুমি ধর্ম লুকাও, অথবা জিরাফ!

কাবার গিলাফে নাকি
তোমার সত্য আটকে আছে।

গোপন পাখি

কী আশ্চর্য,
তুমি বুঝতে পারছো না
আমি কী লিখছি!
স্বর্গ-নরকের গোপনীয়তা ফাঁস করতে
একটা পাখি ছেড়ে দিলাম।

শেষপ্রান্তে, যখন আমি
পৃথিবীর হৃদস্পন্দন মাপছি;
এক ফোঁটা অশ্রু পালিয়ে বাঁচে—
কারণ, দুনিয়া আমার আখিরাত
বুঝবে না

`আউজু বিল্লাহে মিনাশ-শয়তানের রাজিম`

মহামান্য শয়তান এলেন
আস্তিনে লুকানো ছুরিটা বের করলেন
আমার করোটি কাটলেন
মাথার ওপরের চামড়াটা খুলে
মগজটা চুলকে দিলেন।
ফেবিকল দিয়ে আটকে দিলেন সব আগের মতো।
সব কিছু নতুন করে দেখতে লাগলাম
লালকে আরও লাল, নীলকে আরও নীল
সবুজকে আরও সবুজ!

মগজের চুলকানিটা এতই আরামদায়ক যে
ওখানে চুলকেও এত মজা পাইনি।
মগজের আরামে
ঘোষণা দিয়ে শান্তির ধর্ম ইসলাম ত্যাগ করলাম।
আমাকে কি তোমরা শান্তিতে একটা নোবেল দেবে?

কল্পনা

তুমি বলছো, ‘এক সর্বজ্ঞানী আমাদের তৈরি করেছেন’
এটা সত্য হতে পারে, আমরা সম্মতও হতে পারি।
‘স্থান-কালের বাইরে’ তোমার দাবি।
তাহলে বলছো না কেন—
এটা একটা অলীক রহস্যের প্রস্তাব
যা আমাদের কল্পনার বাইরে?