স্ত্রী এবং রক্ষিতা

পর্ব ৪

সরদার মেহেদী হাসান

প্রকাশিত : অক্টোবর ১২, ২০১৮

মাসির কড়া নাড়ার শব্দ কানে এলেও তা আমলে না নিয়ে বাদল তার পশুসুলভ আচরণে মেয়েটির শরীর ক্ষতবিক্ষত করে চললো। অন্যদিকে মাসি চিৎকার করে ঘরের দরজা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করতে থাকলো।

এই শুয়োর, দরজা খোল। তোর হাত-পা ভেঙে দেব... শুয়োর... মাসির এমন খিস্তিখিউর শুনে বাদল এবার নিজেকে কিছুটা সংযত করে ঘরের দরজা খুলে দিল। দরজা খুলতেই মাসি দৌড়ে গিয়ে মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরে। শুয়োরের বাচ্চা তুই কি করেছিস? তুই কি মানুষ? না জানোয়ার? মেয়েটাকে তুই শেষ করে ফেলেছিস? ঘর থেকে বের হ... বের হ শুয়োরের বাচ্চা।

বাদল হাঁপাচ্ছে। তার হিতাহিত জ্ঞান নেই। সে কী করবে, কী বলবে কিছুই বুঝছে না। আজকে তার শরীরের পশুটা নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পড়েছিল। মাসির মুখের খিস্তিখিউর শুনে বাদল হাঁপাতে হাঁপাতে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। মেয়েটি হাউমাউ করে কেঁদে চলেছে। মাসি তাকে সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করছে।

আকাশে প্রচণ্ড মেঘের গর্জন না থাকলেও বাদলের মনের ভিতর কী যেন গর্জন করে চলেছে। সে নিজেকে স্থির করবার জন্য বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরিয়ে অনর্গল টানটে শুরু করলো। নিমেষেই বারান্দা সিগারেটের কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে গেল। অধিক উত্তেজনায় বাদল যে কখন তার প্যাকেটের সব সিগারেট শেষ করে ফেলেছে, ভুলেই গেছে। বাদল কোনোভাবেই নিজেকে স্থির করতে পারছে না। আজকের ঘটনাকে সে তার জীবনের সাথে মেলাতে পারছে না। সে এর আগে বহু মেয়ের সঙ্গে মেলামেশা করেছে কিন্তু এত ছোট বয়সের মেয়ের সাথে মেলামেশা করেনি। কীভাবে যে নিজের শরীর শয়তানি চক্রে আবদ্ধ হয়ে পড়লো তা টেরই পেল না। ছোট্ট মেয়েটার উপর আজ সে অমানবিক অত্যাচার করেছে। তার ঘরেও মেয়েটির বয়সের কন্যা সন্তান রয়েছে। তার কন্যাটি যদি এই মেয়েটির মতো অন্যকোনো পুরুষ দ্বারা এভাবে নির্যাতিত হয়! এটি ভাবতেই বাদলের শরীর নড়েচড়ে উঠলো।

আবারও বাদলের সিগারেটের নেশা পেয়ে বসলো। সে সিগারেটের প্যাকেটটি নেড়েচেড়ে দেখলো, সেগারেট নেই। প্যান্টের দু পকেটে হাত দিয়ে দেখলো কোনো সিগারেট পাওয়া যায় কিনা। সিগারেট নেই, দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে বাদল মেয়েটির ঘরের দিকে এগুলো। মেয়েটি তখনও ডুকরে ডুকরে কাঁদছে। কান্নার শব্দটা বাদলের মনটাকে কেমনজানি দুমড়ে মুচড়ে ফেলতে লাগলো। সে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মাসিকে ডাক দিল, মাসি?
মাসি কিছুটা সময় পেরিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলো, কী হয়েছে বলো?
বাদল: মেয়েটার শরীর এখন কেমন?
মাসি: ধুর মিয়া, এডা কি ঠিক করলা? মেয়েডারে এক্কেবারে ছিঁইড়া খাইছো। ছোড শরীর, দেইখা শুই না খাইবা... মিয়া, তুমি আমার ব্যবসার বারোডা বাজাইছো। যদি মাইয়াডা মইরা যাইতো?
বাদল: না-না, আসলে আমি একটু বেশিই উত্তেজিত হয়ে পড়ছিলাম।
মাসি: তোমরা পুরুষরাই এমন, মাইয়া মানুষ দেখলে মাথা ঠিক থাকে না। দাও টাকা দাও। ৫০ হাজারে হবে না, একটু বেশি দিতে হবে।
বাদল: আচ্ছা ঠিকাছে, এই নাও ৫০ হাজার টাকা, বাদবাকি আগামীকাল দিয়ে যাব। তবে মাথায় রাখবে, মেয়েটির ঘরে যাতে অন্যকোনো পুরুষ না ঢোকে। আজ থেকে তার দায়দায়িত্ব আমার।
আচ্ছা ঠিকাছে, বলে মাসি মেয়েটির ঘরের দিকে পা বাড়ায়।

চলবে