‘হৃদয় ছোঁয়ার দিন’ যুদ্ধদিনের সিনেমা

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ২২, ২০১৭

পটভূমি ১৯৭০। ঢাকা শহর। আর্ট কলেজের ছাত্রী শর্মি রোজ সাইকেল চালিয়ে ক্লাসে যায়। চিন্তায় ও পোষাকে আধুনিক শর্মিকে সমাজের প্রচলিত বাধার মুখে পড়তে হয়। রাস্তাঘাটে তরুণরা তাকে উত্যক্ত করে। এজন্য মেয়েটি পকেটে একটা ছুরি রাখে। চলতি পথে তার সঙ্গে পরিচয় হয় সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দ্যাখা এক তরুণের। নাম, ভিকি। দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। কিন্তু এর মধ্যে একটু দূরত্ব রাখে শর্মি।
একই সময়কালের এক মফস্বল শহরের দুই তরুণ আবিদ ও আমান। দেশ ও বিশ্বরাজনীতি যাদের নখ দর্পনে। শহরের প্রেক্ষাগৃহে আসে ‘জীবন থেকে নেয়া’ চলচ্চিত্রটি। এ চলচ্চিত্র দুজনকেই দারুণ নাড়া দেয়। একজন হতে চায় বিপ্লবী, আরেকজনকে পেয়ে বসে চলচ্চিত্র পরিচালক হবার ভূত।
এভাবেই এগোতে থাকে ‘হৃদয় ছোঁয়ার দিন’ সিনেমার কাহিনি। এতে অভিনয় করেছেন, আশিক, ইমন, এমদাদ, সুস্মিতা, অঞ্জলি, মন্টি, রানা প্রমুখ। কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও পরিচালনা করেছেন, সাজ্জাদ হায়দার। ক্যামেরা পরিচালনা করেছেন যৌথভাবে, হাবিব রাজা ও কবির। সঙ্গীত আয়োজনে সাগরিকা।
সিনেমাটি নিয়ে ছাড়পত্রকে পরিচালক বলেন, ‘হৃদয় ছোঁয়ার দিন’ অবশ্যই ডিরেক্টর’স্ মুভি। এই চলচ্চিত্রে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের স্টার’স ভ্যালু বিবেচনা করা হয়নি। প্রায় প্রতিটি চরিত্রকে সমান গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রের সব চেয়ে বড় সমস্যা হলো, সেই সময়ের উপকরণ। এ কারণে কিছুটা হলেও এ সমস্যার সাথে আপোষ করতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একাত্তরের ঢাকার সাথে এখনকার ঢাকার কোনও মিল নেই। রাজপথ তো বটেই, প্রতিটি অলিগলি পাল্টে গেছে। পাল্টে গেছে যানবাহন, মানুষের পোষাক-আষাক। একই অবস্থা ঢাকার বাইরের শহরগুলোতে। এ কারণে ইচ্ছা থাকলেও একাত্তরের ঢাকা শহরকে মনের মতো করে উপস্থাপন করা যায়নি। হয়তো বিপুল অর্থ ব্যয় করতে পারলে এই অভাব পূরণ করা যেত।
সাজ্জাদ হায়দার বলেন, সেই সময়ের ভিন্ন ভিন্ন পেশা ও শ্রেণিকে টুকরো টুকরো গল্পে উপস্থাপিত করে মূল গল্পে মেশানো হয়েছে। এই চলচ্চিত্রে একাত্তরের বিদ্রোহী তারুণ্যের পাশাপাশি সেই সময়ের সুবিধাবাদী দ্বিধাগ্রস্ত মানুষদেরও দেখানো হয়েছে। এছাড়া সত্তর দশকের বিশ্বযুব বিদ্রোহের ছোঁয়া দেয়া হয়েছে এ চলচ্চিত্রে।

গ্রন্থনা: ফারুক ইমন