রেজা রাজার ৫ কবিতা

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯

অয়োময়

বিমুখ প্রান্তর—
এখানে শিউলিমালার হৃদয়
গনগনে অগ্নি পাথরে ছাই
চৌচির শুকনো জমিনে;
নিদারুণ শ্বাসকষ্টে মীনপ্রাণ
ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ অথৈ অর্ণবে ক্লান্ত বিদ্ধস্ত নিরুপায়
প্রবল নিঃসঙ্গতা, কোথাও কেউ নেই
নেই কোনো বাড়িয়ে দেয়া হাত।

আর কেউ না,
শুধু আকাশটাই চেয়ে থাকে
আমার বিষণ্ণ মনের নির্জন নৈঃশব্দ্যে
চোখে তার হিমরাত্রির মায়া বিভ্রম।

রাত্রির মায়া হরিণ

রাত্রি এক নিবিড় নৈঃশব্দ্যের প্রাণ
স্তব্ধ শীতল
শায়িত
অথচ তাও
যেন মহাকালের নির্মোহ প্রবাহ।

মাতাল চোখে আঁকা
ধ্রুব নক্ষত্রের চিত্রল ক্যানভাস।

এদিকে পাঁড় মাতালের পায়ে পায়ে গড়ায়
নিদ্রিত নাগরিক রাজপথ
দুলে ওঠে রাত্রির মায়াবী পল্লব।

নিমগ্ন নৈঃশব্দ্যের চূড়ায়
খসে পড়ে অজস্র নক্ষত্রের গভীর গোপন বেদনার গান
থমকে দাঁড়ায় নির্মোহ প্রয়াস।

ঘুমিয়ে যাওয়া পাখিপ্রাণ
স্বপ্ন দ্যাখে, গলিত স্বপ্নের
ছায়া দেখে যায়।

অনন্য অদ্রিশিখর

নয় কোনো বশ্যস্রোত
অগণন ইতিহাসের তামাটে পাতায়
যার উপর চিত্রিত বিচিত্র চিত্রকলা;
নয় তার অন্বিষ্ট—
শিল্পগুরুর ছায়াঘেরা যুৎসই ছায়াবীথি
বরং জন্মাবধি বিবিক্ত বিপন্ন চরাচরে
একাগ্র ধ্যানী যোগীর চূড়ায় মনিদীপ
যদিও নয় মোটে বকধার্মিক।

হন্তারক সময়ের বিপুল
বিশাল কোলাহল ঠেলে সে অনন্য,
অভিলাষের উপর আলো ঠিকড়ানো শিশিরের দ্যুতি
একক সূর্যালোকে নিঃসঙ্গ প্রাণ।

জোছনা ও অন্ধকার

তার খুলির জোছনায় আঁধার কাটে
ভোর নামে জমিনের বুকে
অথচ, কী ভীষণ প্রবঞ্চনা
মূঢ় স্বার্থের সন্ধিতে সন্ধিতে
জলের গভীরে, স্থলে, অন্তরীক্ষে;
যৌনকেশের অন্ধকার—
গ্রাস করে সোনালি রোদ
যুক্ত হয় দাঁতাল গ্রহণ।

তবুও অন্ধকার ঘষে ঘষে মশাল জ্বালাবার
দুর্নিবার কামনা জাগে
বিবিক্ত লুব্ধকের সরল করোটিতে।

এন্টি কবিতা

এত রাইতে আমার পড়ার ঘরের জানালার ফাঁসা দিয়া
একটা লাল চান দেহা যাইত্যছে
শ্যাষ যৈবনের মন খারাপ করা মুখ বেজার করা চান
দুখি চান— রাত্রির চাকায় চাকায় চলা চান্দের পরাণ!

কিন্তুক অখন আমি তারে কবিতা বানাইতে অপারগ
দুখ্যু হয় আমার
তয় আমার এই অক্ষমতাও কম সুন্দর লয়
আহা চান আহা চান ভাইডি আমার
আহা আহা আহা!