মমির সিটি স্ক্যান করা হচ্ছে (বামে), মমি পুরোহিত নেসিয়ামান (ডানে)

মমির সিটি স্ক্যান করা হচ্ছে (বামে), মমি পুরোহিত নেসিয়ামান (ডানে)

তিন হাজার বছরের পুরনো মমি কথা বলে উঠল!

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৭, ২০২০

তিন হাজার বছরের পুরনো মমি কথা বলে উঠল! মৃত্যুর সময়ে তার শেষ কথা শুনেছেন বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। বুধবার সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্র এ তথ্য দিয়েছে।

মিশরের প্রাচীন শহর থিবসের কারনাকে এক মন্দির থেকে উদ্ধার হয় তিন হাজার বছর আগের এক মমি। মমিটি সেই মন্দিরের পুরোহিত নেসিয়ামানের। তিনি প্রাচীন মিসরীয় দেবতা আমুনের ওই উপাসনালয়েই থাকতেন। তিন হাজার বছর আগে মন্দিরেই তার মৃত্যু হয়।

গবেষক দল জানান, ব্যাপারটি এমন নয় যে, জীবিত মানুষের মতো মমিটি কথা বলে উঠেছে। মমিকে কথা বলাতে নানা পরীক্ষা-নীরিক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। এজন্য থি ডাইমেনশন প্রিন্টার ভোকাল বক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা জানান, মানুষের ল্যারিংসে শব্দ তৈরি হয়। আর ভোকাল ট্র্যাক প্যাসেজে সেই শব্দ ফিল্টার হয়ে অর্থপূর্ণ শব্দ তৈরি করে। এই পুরো বিষয়টাকে একসঙ্গে মানুষের ভয়েস বক্স বলা হয়। প্রথমে বিজ্ঞানীরা ওই মমির ভোকাল ট্র্যাকের ডাইমেনশন থি-ডি প্রিন্টারে কপি করেন।

গবেষক দল জানায়, পুরোহিত নেসিয়ামানের মমি এত সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছিল যে, তিন হাজার বছর পেরিয়ে গেলেও তার ভোকাল ট্র্যাকের কোষগুলো অক্ষত রয়েছে। সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে প্রথমে সেটা পরীক্ষা করা হয়। এরপর থিডি-প্রিন্টারে ওই মমির ভোকাল ট্র্যাকের কপি করে ল্যারিংসে কৃত্রিমভাবে তার কণ্ঠস্বর তৈরি করেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষকরা জানান, তিন হাজার বছর আগের ওই মমি ক্ষীণ কণ্ঠে ‘বেড’ বা ‘ব্যাড’ জাতীয় কিছু শব্দ উচ্চারণ করে। এটাই ছিল তার শেষ শব্দ। আরও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে নেসিমিয়ানের শেষবাক্য জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এদিকে, মমি নেসিয়ামানের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন ঐতিহাসিকরা। তারা জানিয়েছেন, ৫০ বছর বয়সে কিভাবে মৃত্যু হয়েছিল তার।

ইতিহাসবিদরা জানান, শেষজীবনে মুখে অ্যালার্জির দেখা গিয়েছিল নেসিয়ামানের। এই অ্যালার্জির মাত্রা এতই বেড়ে যায় যে, দাঁত, মাড়ি ক্ষয়ে যেতে শুরু করে সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। মুখের সংক্রমণের কারণে শেষজীবনে তিনি ঠিক মতো কথা বলতে পারতেন না। খুব কষ্টে তিনি যা উচ্চারণ করতে পেরেছেন, তিন হাজার বছর পর তা-ই আবিষ্কার করল বিজ্ঞানীরা। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান