প্রতিভাকে আর দাবায়া রাখতে পারবা না

নওশাদ জামিল

প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৫, ২০২০

বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ ভাষণ অনুকরণ করে বলি, `সত্যিকার প্রতিভাকে আর দাবায়া রাখতে পারবা না!’ হ্যাঁ, এ কথা সত্য। ক্ষুদ্রজীবনে ১৪ থেকে ১৫ বছরের সাংবাদিকতা, ১৮ থেকে ১৯ বছরের সৃজনশীল লেখালেখির অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, বারবার প্রমাণ পেয়েছি যে, শেষপর্যন্ত হলেও সত্যিকারের সাফল্য, মানুষের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সম্মান পান প্রকৃত মেধাবীরাই। জীবনের নানা ক্ষেত্রে সাফল্যের প্রকৃত দাবিদার অদম্য ও সাহসী মেধাবীরাই। ইতিহাসের সব গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় ও সাফল্য রচনা করেন তারাই।

আমার কেবলই মনে হয়, দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষই মেধাবী। কেউ প্রকৃতিপ্রদত্ত মেধাবী, কেউ আবার নিজের পরিশ্রমে তুলনাহীন মেধাবী। তাই আপনার মেধার জায়গাটুকু আবিষ্কার করেন। নিজেকে অনুসন্ধান করেন। খুঁজে বের করেন আপনার গহীনগভীর, অতলঅসীম মেধারমাধুরী। তারপর প্রতিনিয়তই চর্চা, পরিশ্রম, অধ্যবসা করেন। একনিষ্ঠতার সাথে সাধনা করেন। আপনি জয়ী হবেন। সাফল্য পাবেন, পাবেনই।

প্রকৃতিপ্রদত্ত মেধাবী আর পরিশ্রমী মেধাবী এক নন। দুটোর মধ্যে খানিক তফাৎ রয়েছে। প্রকৃতিপ্রদত্ত মেধাবীদের ফোয়ারা অবিরল ঝরে, অল্প সময়েই তারা পান নানা সাফল্য। আবার তাদের প্রাকৃতিক ফোয়ারা একটানা ঝরতে ঝরতে হঠাৎ থেমেও যায়। তখন কমে যায় তাদের পরিধি, বন্ধ হয়ে যায় তাদের অবিরলঅবিরাম ধারা, শুকিয়ে যায় তাদের স্বর্ণালি সরোবর।

পরিশ্রমী ও অদম্য মেধাবী যারা, তারা পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের মধ্য দিয়ে পাহাড়পাথর খুঁড়তে খুঁড়তে বের করেন ঝরনাধারা। প্রতিনিয়ত চর্চা আর সাধনার মধ্য দিয়ে তারা সচল রাখেন ফোয়ারা। তাদের ঝরনাধারা শুকিয়ে গেলেও ভয় নেই। কেননা অদম্য ও সাহসী মেধাবীরা আবার নতুন করে খুঁজে বের করেন পাহাড়প্রতীক, ধীরেধীরে প্রস্ফুটিত করেন সোনার সরোবর।

আমার অনেককিছু আছে, আবার অনেককিছুই নেই। দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, আমার মধ্যে সামান্য প্রতিভা আছে। মাঝেমধ্যে পলকেই টের পাই সেই যৎকিঞ্চিত প্রতিভার ঝলক। অবশ্য সেটা অতুলনীয় কিছুও নয়। তারপরও খানিকটা প্রতিভা আর অনেকটা পরিশ্রম নিয়ে আমার সংগ্রাম, অদম্য লড়াই। বিশ্বাস করি যার ভেতর লড়াই করার মানসিকতা আছে, পরিশ্রম করার মতো সাহস ও স্বপ্ল আছে, প্রতিনিয়ত নিজেকে উন্নতি করার প্রবল শক্তি আছে, তাকে কেউ `দাবায়া রাখতে পারবা না’!

 

লেখক: কবি ও গণমাধ্যমকর্মী