প্রথমবারের মতো নভোচারী দল মহাকাশ স্টেশনে পাঠালো চীন

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জুন ১৭, ২০২১

পৃথিবীর কক্ষপথে নিজেদের নতুন মহাকাশ স্টেশনে চীন প্রথমবারের মতো পাঠিয়েছে তিন নভোচারী। চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় গোবি মরুভূমির জিকুয়ান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ২২ মিনিটে শেনঝু-১২ ক্যাপসুল নিয়ে লংমার্চ টু এফ রকেটের উৎক্ষেপণ সম্পন্ন হয়।

মিশনটি পাঁচ বছরের মধ্যে চীনের প্রথম স্পেস ফ্লাইট যা কোনো মানুষ বহন করছে। দীর্ঘমেয়াদি এ মহাকাশ অভিযানে নেই হেইশিং, লিউ বোমিং এবং টাং হংবো ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৮০ কিলোমিটার ওপরে স্থাপিত মডিউলে তিন মাস কাটাবেন। তিয়াংগং মহাকাশ কেন্দ্রের মূল অংশে গিয়ে ভিড়বে শেনঝু-১২ নভোযানটি, যার নাম তিহানহি। যেটি মহাকাশে স্থাপন করা হয় গত ২৯ এপ্রিল।

এ অভিযানের মাধ্যমে মহাকাশে আধিপত্য বিস্তারে সক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল চীনের। চীনা মহাকাশ সংস্থা চায়নিজ স্পেস এজেন্সির তথ্যমতে, মহাকাশে পৌঁছার পর শেনজু-১২ মহাকাশ স্টেশন তিয়ানগংয়ের প্রধান সেকশন তিহানহির সঙ্গে নোঙর করবে। দুই মাস আগেই এটাকে মহাকাশের কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে। যাতে করে নভোচারীদের জন্য আগেই জ্বালানি, খাদ্য ও অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। তিহানহিতে নভোচারীদের থাকার জন্য ঘরও রয়েছে।

চীন ছয় মাসের মধ্যে একাধিক অভিযানে সফল হয়েছে। চাঁদ থেকে পাথর ও বালির নমুনা নিয়ে ফিরেছে একটি যান। এছাড়া মঙ্গলে সফলভাবে অবতরণ করেছে রোবোট। দুটি অভিযানই ছিল জটিল ও চ্যালেঞ্জিং। নতুন এ মহাকাশ স্টেশনে প্রত্যেকে নভোচারীর থাকার আলাদা মডিউল রয়েছে। তবে বাথরুম, ডাইনিং, ডাউনিং এরিয়া ও যোগাযোগ কেন্দ্র ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে হবে।

মিশনটি পরিচালিত হচ্ছে নেই হেইশিংয়ের নেতৃত্বে। আরও দুটি মহাকাশ ফ্লাইট মিশনে অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা তার রয়েছে। তিনি পিপলস লিবারেশন আর্মির একজন এয়ারফোর্স পাইলট। অন্যরা চীনা সামরিক বাহিনীর সদস্য।

এক থেকে দেড় বছরে মহাকাশে আরও ১১টি মিশন চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে চীন। তাদের তৈরি মহাকাশ কেন্দ্রটিতে সোলার প্যানেল ও দুটি ল্যাবরেটরি মডিউল স্থাপনা করার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, কানাডা, ইউরোপ ও জাপানের যৌথ প্রচেষ্টায় তৈরি আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র (আইএসএস) চীনের ব্যবহারে বাধা দেয় ওয়াশিংটন। আর এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নিজেই মহাকাশ কেন্দ্র তৈরি করেছে চীন।

২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। যদিও নাসা বলছে, একে ব্যবহার করা যাবে ২০২৮ সাল পর্যন্ত। এদিকে তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনটির নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতেই এগিয়ে চলেছে। আইএসএসের চেয়ে অনেক ছোট তিয়াংগং আগামী ১০ বছর তার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে। ২০২২ সালের মধ্যেই স্টেশনটি কার্যকর হবে বলে মনে করছে চীনা মহাকাশ সংস্থা চায়নিজ স্পেস এজেন্সি। সূত্র: বিবিসি