বইমেলায় ‘ধর্মীয় অনুভূতির’ সুরক্ষায় তৎপর থাকবে পুলিশ

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জানুয়ারি ২২, ২০২০

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী বই বইমেলায় থাকতে দেয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। মঙ্গলবার ডিএমপি সদর দপ্তরে একুশে বইমেলার নিরাপত্তা বিষয়ক সভায় তিনি এ কথা জানান।

শফিকুল ইসলাম বলেন, “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে, এমন বই বইমেলায় থাকতে দেয়া যাবে না। বইমেলা বাংলা একাডেমি আয়োজন করলেও আমরা (পুলিশ) এর একটি অংশ হয়ে গেছি। বইমেলা ঘিরে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে বাঙালির প্রাণের মেলা সফলভাবে শেষ করতে পারব।”

বাংলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “৫৩৮টি প্রকাশনা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এবারের বইমেলায় অংশ নেবে। মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে ৪১১টি স্টল। আর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২৭টি স্টল বসবে। সব মিলিয়ে স্টল থাকবে ৮৭২টি। এছাড়া শিশু চত্বর, মসজিদ, টয়লেট, ফুড পার্ক ও প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র থাকবে বইমেলা প্রাঙ্গণে।”

সমন্বয় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোসাম্মৎ জোহরা খাতুন, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল ছাড়াও মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিরা।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে হামলায় নিহত হন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী লেখক অভিজিৎ রায়। ঘাতকদের কোপে আঙুল হারান তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা। ওই ঘটনার পর থেকে বইমেলায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি বাড়ানোর পাশাপাশি বইয়ের বিষয়বস্তুর দিকেও নজরদারিতে নামে পুলিশ।

২০১৬ সালে বইমেলায় আসা ‘ইসলাম বিতর্ক’ নামের একটি বইয়ে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ হানার উপাদান রয়েছে দাবি করে প্রকাশনা সংস্থা ব-দ্বীপের স্টল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পাশাপাশি ‘ব-দ্বীপ’র মালিক ও বইটির সম্পাদক শামসুজ্জোহা মানিক, এক বিপণনকর্মী এবং বইটির ছাপাখানার মালিককে গ্রেফতার করা হয়।

মানিকের মুক্তি আন্দোলনে সামনের কাতারে থাকা রবিন আহসানের প্রকাশনা সংস্থা শ্রাবণ প্রকাশনীকে পরের বছর বইমেলায় নিষিদ্ধ করে বাংলা একাডেমি। পরে সমালোচনা-প্রতিবাদের মুখে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে তারা।

গতবছরও বাংলা একাডেমির সারভেইলেন্স টিম ও পুলিশের গোয়েন্দারা এ বিষয়ে নজরদারি করে। কোন স্টলে কী বই প্রকাশ হচ্ছে, সেই খোঁজ খবর নিতে দেখা যায় তাদের।

জানা গেছে, বইমেলায় আসা বই ‘মনিটরিং’ করতে এবারও থাকবে ‘মনিটরিং কমিটি’। মেলার নিরাপত্তায় তিনশোর বেশি সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। বাঁশ ও টিন দিয়ে মেলা প্রাঙ্গণ ঘিরে শক্ত বেষ্টনি দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি বুক স্টলে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে একুশে বইমেলা এবার এক দিন পিছিয়ে গেছে। ২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করবেন।