বাঁশখালীতে নিহতদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে দিতে এস আলমকে নির্দেশ

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : মে ০৪, ২০২১

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে নিহত শ্রমিকদের ‘আপাতত’ পাঁচ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে এস আলম গ্রুপকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পৃথক রিটের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

একই সঙ্গে জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন তলব করেছেন আদালত। ৪৫ দিনের মধ্যে এ রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবি সমিতিসহ (বেলা) পাঁচটি সংগঠনের আলাদা দুটি রিট আবেদনের শুনানিতে এ আদেশ দেয়া হয়।

এস আলম গ্রুপের আইনজীবী মো. আরশাদুল রউফ শুনানিতে বলেন, “নিহতদের পরিবারকে এরই মধ্যে তিন লাখ টাকা করে দেয়া হয়েছে।” তখন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, “তিন লাখ টাকা করে দিয়েছেন, আরও দুই লাখ টাকা করে দেন।”

রুলে এ ঘটনার তদন্তে বিচারিক অসুন্ধান কমিটি কেন গঠন করা হবে না এবং নিহত শ্রমিকদের পরিবার প্রতি তিন কোটি এবং আহতদের পরিবার প্রতি দুই কোটি টাকা করে কেন ক্ষতিপূরণ প্রদান নয় তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও সৈয়দা নাসরিন।

এর আগে আইন ও সালিস কেন্দ্রসহ মোট ছয়টি সংগঠন রিট দুটি দায়ের করে। অন্য পাঁচটি সংগঠন হলো, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), নিজেরা করি, সেফটি অ্যান্ড রাইটস এবং অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রির্ফম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি)।

এর আগে ১৮ এপ্রিল এ বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন নোটিশ পাঠান। ১৭ এপ্রিল সকালে বাঁশখালীর গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়। আহত হয় অনেক শ্রমিক। এ ঘটনায় বাঁশখালী থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়।

নিহতরা হলেন— শুভ (২৩), রাহাত (২৪), আহমদ রেজা (১৯), রনি হোসেন (২২) ও রায়হান (২০)। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল মো. শিমুল (২৩) নামের আহত শ্রমিক মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত শ্রমিকদের ভাষ্য, বকেয়া বেতন ও রোজায় কাজের সময় পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ থেকে সেদিন সেখানে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল কবীর জানান, শনিবারের ঘটনায় পুলিশ ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমন্বয়ক ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। পুলিশের মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই থেকে আড়াই হাজার জনকে এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সমন্বয়কের করা মামলায় ২২ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়।