স্বকৃত নোমান

স্বকৃত নোমান

‘বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাব গ্রামে খুব বেশি পড়ে না’

প্রকাশিত : মে ১৮, ২০২০

বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে খুবই পরিচিত দুই কথাকার স্বকৃত নোমান ও মেহেদী উল্লাহ। সম্প্রতি দুজন ফেসবুক চ্যাটিংয়ে কথাসাহিত্য ছাড়াও সমকালীন নানা বিষয়ে কথাবার্তা বলেন। ছাড়পত্রের পাঠকদের উদ্দেশে তাদের কথোপকথন ধরা রইল এখানে—

মেহেদী উল্লাহ: বাংলাদেশে সংস্কৃতি নিয়ে যে বইপত্র ও সম্পাদিতগ্রন্থ পাওয়া যায় সেগুলোর কিছু কিছু নিশ্চই আপনি পড়েছেন? নাকি বেশিরভাগ?
স্বকৃত নোমান: সংস্কৃতির প্রতি আমার আগ্রহ বিপুল। এ নিয়ে অনেক বইপুস্তক আছে। বেশিরভাগ না হলেও মোটামুটি গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো পড়েছি।

মেহেদী: আচ্ছা। কখনো কি এমন মনে হয়েছে, সেসব বই বা সম্পাদিতগ্রন্থে যেসব প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে সেগুলো ঐতিহাসিক উপকরণ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা, যা কেবল লিখিত ইতিহাসেরই পরম্পরা, সমাজে এমন সংস্কৃতির চর্চা নেই, স্পষ্ট করে বললে, বইয়ের বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির বলার মতো পার্থক্য রয়েছে?
স্বকৃত নোমান: ঐতিহাসিক উপকরণ থেকে লেখা বইগুলো পড়লেই বুঝতে পারি। এ ধরনের বই পড়েছি বটে। একটি বইয়ের কথা ধরা যাক। বইটির নাম না বলি। সেখানে বাংলাদেশের বিবাহ-সংস্কৃতি সম্পর্কে যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে তার সঙ্গে বর্তমানের বিয়ের কোনো মিল নেই। অর্থাৎ তিনি ঐতিহাসিক পরম্পরা থেকে লিখেছেন। ফিল্ডে গিয়ে খোঁজখবর করে লেখেননি।

মেহেদী: ঠিক, আপনিও বিষয়টি নিয়ে ভেবেছেন, ভালো লাগছে শুনে। কিন্তু এটা একটা বিরাট সমস্যা তাহলে, আমাদের দেশের সংস্কৃতি চলছে একদিকে, সংস্কৃতি বিষয়ক লেখা চলছে আরেক দিকে?
স্বকৃত নোমান: ঠিক নির্দিষ্ট করে এটা বলা যাবে না। এই ধরনের বইপুস্তকের সংখ্যা তো আর বেশি নয়। ভালো কাজ তো নিশ্চয়ই হচ্ছে, যেগুলো প্রতিফলিত হচ্ছে বাংলাদেশের সংস্কৃতির সঠিক চিত্র। ধানের মধ্যে চিটা তো থাকবেই। প্রাকৃতিক নিয়ম। চিটার কারণে তো ধানকে চিটা বলে সাব্যস্ত করা যায় না।

মেহেদী: আচ্ছা, আরেকটি বিষয় আমার কাছে মনে হয় প্রায়ই, সংস্কৃতির ভিন্ন ভিন্ন বিষয়-আশয় নিয়ে লেখার চেয়ে সংস্কৃতির সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও ধারণামূলক লেখার সংখ্যাই বেশি এখানে। ফিল্ডওয়ার্ক করা কঠিন, সেজন্যই কি এটা ঘটেছে? নাকি আপনার ভিন্নমত আছে?
স্বকৃত নোমান: খুব একটা ভিন্নমত নেই। সংস্কৃতি নিয়ে লেখকের সংখ্যাটা তো আসলে কম। আমাদের এখানে অনেকেরই সংস্কৃতির সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। কোনটা সংস্কৃতি আর কোনটা নয়, তারা অনেক সময় গুলিয়ে ফেলে। ধর্মীয় সংস্কৃতির সঙ্গে জাতিগত সংস্কৃতি গুলিয়ে ফেলে। যে অল্প কজন সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করছেন, তাদের বেশিরভাগই টোকাটুকি করেন। অর্থাৎ পূর্বজ সংস্কৃতি গবেষকরা যা গবেষণা করে লিখে গেছেন, সেখান থেকে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে নিজের মতো করে লেখেন। ফিল্ডে গিয়ে গবেষণা খুব কমই করেন। এ বিষয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েরও খুব বেশ উদ্যোগ নেই। বাংলা একাডেমি একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি গ্রন্থমালাগুলো করে। এটা ভালো কাজ।

মেহেদী: ঠিক বলেছেন। অনেকেরই পছন্দ লোকসংস্কৃতি গ্রন্থগুলো, অঞ্চলভিত্তিক ভালো কাজ। বাংলাদেশে বিরাজমান বর্তমান সংস্কৃতিকে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
স্বকৃত নোমান: বাংলাদেশে বহু জাতিগোষ্ঠীর, বহু সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী এই শ্যামল ভূখণ্ডে কেবল বাঙালি জাতি, বাঙালি মুসলমান বা বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরাই বসবাস করে না, বসবাস করে নানা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীও। সাঁওতাল, ওঁরাও, মুণ্ডা, রাজবংশী, কোঁচ, খাসিয়া, মনিপুরী, টিপরা, গারো, হাজং, মার্মা, চাকমা, ম্রো―এরা এ দেশেরই নাগরিক। এ বিশাল জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি এক নয়, প্রত্যেকেরই রয়েছে আলাদা আলাদা নিজস্ব সংস্কৃতি। একই ভূখণ্ডের বসিন্দা হলেও একটি জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির সঙ্গে অন্য জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। এটাই হচ্ছে সংস্কৃতির বৈচিত্র্য বা সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য।

বাংলাদেশে বসবাসরত জনোগোষ্ঠীর চলমান সংস্কৃতিকে তিন ভাগে ভাগ করতে পারি: নগরসংস্কৃতি, লোকসংস্কৃতি ও আদিম সংস্কৃতি। নগরসংস্কৃতি আধুনিকতার আলোকপ্রাপ্ত, পাশ্চাত্য সংস্কৃতি প্রভাবিত। নগরসংস্কৃতি স্বরূপে সংস্কারধর্মী এবং সঙ্করধর্মী। এখানকার চাকরি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনকে কেন্দ্র করে দেশ-বিদেশের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ ও মেলামেশার ফলে প্রভাব খুব দ্রুত পড়ে। শিক্ষিত নাগরিকরা সহজেই সংস্কৃতির এসব উপকরণ রপ্ত করে নেয়। অপরদিকে গ্রামীণ সংস্কৃতি কিছুটা রক্ষণশীল। গ্রামবাসী তাদের অভ্যস্ত জীবনধারা সহজে ত্যাগ করতে চায় না, হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তারা আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। ফলে বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাব এতে খুব বেশি পড়ে না। ফলে তাদের সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটে খানিকটা ধীর গতিতে।

এদিকে আদিম সংস্কৃতি বা ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীদের সংস্কৃতি পুরোমাত্রায় রক্ষণশীল ও সনাতনপন্থী। বাইরের জগতের সঙ্গে ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী জীবনের সম্পর্ক প্রায় বিচ্ছিন্ন। তারা নিজ নিজ ধর্ম, আচার, বিশ্বাস এবং জীবনরীতিতে শ্রদ্ধাশীল ও নিষ্ঠাবান। তাদের জীবিকা চাষ, শিকার এবং ফলমূল সংগ্রহ। তারা আধুনিক শিক্ষাদীক্ষা, জ্ঞানবিজ্ঞানের বাইরে আদিম বা পুরনো বা সাবেকি জীবনসাধনায় রত। ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীরা পূর্বপুরুষের সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে বহন করে চলেছে। গ্রহণ-বর্জনের রীতি না থাকায় ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতির তেমন কোনো বিকাশ ও বিস্তার ঘটছে না।

মেহেদী: আপনি সংস্কৃতির যে শ্রেণিকরণ করলেন, সেগুলোর একটি অপরটির সঙ্গে মিশ্রিত হচ্ছে কীভাবে? অর্থাৎ, লোকসংস্কৃতি নগরে আসছে, আবার নগরের মানুষ গ্রামে যাচ্ছে—
স্বকৃত নোমান: নগরে এসে লোকসংস্কৃতি টিকতে পারে না। খাপ খাওয়াতে পারে না। এই সংস্কৃতি গ্রামেই নিরাপদ। যেমন ধরুন, গ্রামের একটা সংস্কার আছে যে, যাত্রাপথে ভাঙা কলসি দেখলে অমঙ্গল হয়। নগরে তো কলসিই নাই। তাই এই সংস্কৃতি নগরে নাই। গ্রাম থেকে যারা নগরে আসে তারা ভাবে, গ্রামীণ সংস্কৃতি অচ্ছুৎ, একে ত্যাগ করতে হবে। ত্যাগ করে নাগরিক সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে। সব ক্ষেত্রে নয়, অধিকাংশ ক্ষেতেই এটা ঘটে। দেখবেন, গ্রামের অনেক ছেলে নগরের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে লুঙি পরা ছেড়ে দেয়। ভাবে, লুঙি পরলে নাগরিক হওয়া যাবে না, সভ্য হওয়া যাবে না। সে তখন ট্রাউজার পরে, হাফ প্যান্ট পরে। এই পরাটা নাগরিক হওয়ার জন্য। মানে সে গ্রামীণ সংস্কৃতিটাকে পরিত্যাগ করতে চাইছে হীনম্মন্যতাবশত। আবার গ্রামের কোনো সংস্কৃতিই যে নগরে এসে টিকতে পারছে না, ব্যাপারটা তা নয়। অনেক সংস্কৃতি খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। আবার নগরের সংস্কৃতিগুলো যোগাযোগ ব্যবস্তার উন্নতির ফলে দ্রুতই গ্রামে পৌঁছে যাচ্ছে। গ্রামের মানুষ নগর সংস্কৃতিকে গ্রহণ করে, তবে তা অত্যন্ত ধীরে। তাড়াহুড়ো করে না। ধীরে ধীরে রপ্ত করে নেয়। যেমন ধরুন নগরের খাদ্য সংস্কৃতির মধ্যে নুডুলস রয়েছে। গ্রামেও নুডুলস খাওয়া হয়। কিন্তু কদাচিৎ। বছরে ছ মাসে এক-দুবার। এভাবেই সংস্কৃতির মেশামেশিটা হচ্ছে আরকি।

মেহেদী: আপনার উপন্যাসে বাংলাদেশের মানুষের যে উপস্থাপন, চরিত্র নির্মাণ, প্লট—ইত্যাদি করতে গিয়ে আপনি কতটা সংস্কৃতির রাজনীতির মধ্যে এদেরকে ফেলেন?
স্বকৃত নোমান: প্রত্যেক ঔপন্যাসিককেই এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হয়। আমিও তাই থাকি। চরিত্রের ভূখণ্ডগত অবস্থান অনুযায়ী তাকে নির্মাণ করি। আবার কখনো কখনো ইচ্ছে করেই বদলে দিই। ওটা কল্পনা। মানে আমি চরিত্রটিকে এমনভাবে দেখতে চাই। কিন্তু সেই কল্পনা বাস্তবসম্ভূত।

মেহেদী: শরীয়ত সরকার বয়াতির পক্ষে দাঁড়িয়ে ছিলেন আপনি। এখন তার কী অবস্থা? এই যে লোকসংস্কৃতিকে আইনের মধ্যে ফেলে দেয়া গেল, এলিট বা মধ্যবিত্তের সংস্কৃতিকে কি চাইলেই আইনের মধ্যে ফেলা যায়? রাষ্ট্র সাংস্কৃতিক বৈষম্য করছে কি?
স্বকৃত নোমান: শরীয়ত বয়াতির পক্ষে আমি দাঁড়িয়েছিলাম সংস্কৃতির রাজনৈতিক চেতনা থেকে। আমাদের দেশের অনেক বুদ্ধিজীবী বুঝতে পারে না এই দেশকে অসাম্প্রদায়িক রাখতে ভূমিকা রাখছে কারা। নাগরিক বুদ্ধিজীবীদের কেতাবি জ্ঞান গ্রামের সাধারণ মানুষের খুব একটা কাজে লাগে না। তাদের কথা খুব একটা শোনেও না। বিশাল বাংলার মানুষ শরীয়ত বয়াতী, রীতা দেওয়ানের মতো লোকদার্শনিকদের কথা শোনে, মানে। তাদের দর্শন দ্বারা পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে বহু আগেই জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়ে যেত, যদি না শরিয়ত বয়াতীদের মতো লোকদার্শনিকরা না থাকতেন। এরাই আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে জাগরুক রাখছে। কিন্তু আমদের সরকার সেটা বুঝল না। শরিয়ত বয়াতীকে গ্রেপ্তার করল। এটা আমাকে খুব আহত করেছে। তার মুক্তির জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু যেদিন সংসদে শরিয়ত বয়াতীর বিরুদ্ধে কথা বলা হলো, সেদিন থেকে তার জামিনের পথ রুদ্ধ হয়ে গেল। সম্ভবত এখনো তিনি জেলে। করোনা আসার পর আমি আর খোঁজ রাখতে পারিনি। আমি তার মুক্তি কামনা করছি। লোকসংস্কৃতির এই ক্ষেত্রটিতে হাত দিয়ে রাষ্ট্র অনেক বড় ভুল করছে। তারা বুঝতেই পারছে না এটা যে ভুল। বর্তমানের রাজনীতিকদের মধ্যে সংস্কৃতি বোঝেন, সংস্কৃতির ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা রাখেন, এমন রাজনীতিকের সংখ্যা কম। তাদের এই না বোঝার খেসারত দিতে হবে পরবর্তী প্রজন্মকে। নিশ্চিতভাবেই রাষ্ট্র সাংস্কৃতিক বৈষম্য করছে। আপনি দেখবেন, ওয়াজ মাহফিলে যারা উল্টাপাল্টা বকাবকি করে, তাদেরকে কিচ্ছু বলে না, অথচ বাউল-ফকিরদের উপর খগড় মারছে। একইভাবে এই খড়্গ এলিটদের উপর ফেলতে পারবে না। ফেললে খবর করে ছেড়ে দেবে।

মেহেদী: সব সংস্কৃতির সমান্তরাল এবং ক্ষেত্র বিশেষে সমন্বিতভাবে কীভাবে আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ পেতে পারি? নাকি সংকটের সংস্কৃতি থাকবে না, এটা ভাবা কল্পনামাত্র?
স্বকৃত নোমান: আপনি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের কথা ভাবুন। সেখানে চাকমা, তঞ্চঙ্গা, খুমী, খিয়াং, ত্রিপুরা, পাংখোয়া, বামসহ প্রায় তেরটি জনগোষ্ঠী বসবাস করছে। তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা সংস্কৃতি। তাদের কিন্তু কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কোনো সংস্কৃতি আধিপত্যবাদী মানসিকতা নিয়ে হাজির হচ্ছে না। একজনের সংস্কৃতি অপরজন নষ্ট করে দিতে চাইছে না। একইভাবে গোটা বাংলাদেশের বইমাত্রিক সংস্কৃতিকে সমন্বিত রাখার জন্য প্রথমে রাজনীতিকদের উদ্যোগী হতে হবে। রাজনীতি সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। দ্বিতীয় লেখক-বুদ্ধিজীবীদের সক্রিয় হতে হবে। কেবল শিল্পের জন্য শিল্প, এই তত্ত্ব বাদ দিয়ে সমাজ-সংস্কৃতি নিয়েও ভাবতে হবে। কথা বলতে হবে। তবেই আমরা একটি বহুত্ববাদী সংস্কৃতির বাংলাদেশ নির্মাণ করতে পারব।

মেহেদী: আপনার সঙ্গে কথা বলে খুব ভালো লাগল, নোমান ভাই। ধন্যবাদ সময় দেয়ার জন্য।
স্বকৃত নোমান: আপনাকেও ধন্যবাদ, মেহেদী। ভালো থাকবেন সবসময়। শুভ কামনা নিরন্তর।