মাপকাঠিতেই যত গলদ

উম্মে রায়হানা

প্রকাশিত : নভেম্বর ০৪, ২০১৯

একটু আগে মজার একটা ছবি শেয়ার করছি। ওয়েস্টার্ন একটা ফেনোমেনা, একশ বছর আগে সবার ঘোড়া থাকতো, শুধু বড়লোকদের মোটর গাড়ী থাকতো। এখন সবার গাড়ী থাকে, শুধু অনেক ধনীদের ঘোড়া থাকে।

 

এখানে ঘোড়া কিম্বা গাড়ী বিষয় না, বিষয় হইলো টাকা। টাকা যখন মাপকাঠি তখন সেই টাকা দিয়া কী কেনা হইলো সেটা ঘটনাই না।

 

একটা নিউজ দেখলাম ইন্ডিয়ার এক মুসলিম মেয়ে মোহরের টাকা না নিয়া বরের থেকে বই নিছে, অ্যাজ ইফ বই কিনতে টাকা লাগে না! যে মেয়েটা গয়না বা টাকা নিছে তার চেয়ে সে কোন দিক দিয়া আলাদা হইলো? যদি কিছুই না নিতো তাইলে একটা আলাদা কিছু হইতো।

 

আমি এমন কাপল চিনি যারা ১০১ টাকা মোহরে বিয়ে করছেন। যেহেতু বিয়ের অন্য উপায় নাই তাই সবচেয়ে কম টাকার লেনাদেনা কইরা তাঁরা ফরজ আদায় করছেন।

 

একই জিনিস দেখি রেসিযম আর বডি শেমিং এর বিষয়েও। ব্ল্যাক ইয বিউটিফুল, ফ্যাট ইয বিউটিফুল - এই জাতীয় আলাপ শুনলে মাথা গরম লাগে। আরে ভাই, মাপকাঠি তো একই থাকলো, শারীরিক কিছু বৈশিষ্ট্য। একশ বছর পরে যদি কালো মানুষ শক্তিশালী হয়, সাদাদের ধইরা ধইরা মারে, ফর্শা মেয়েদের কালি মাইখা কিম্বা রোদে পুড়ায়া কালো বানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়, সেটা কি ভালো হবে!

 

টাকা দিয়া মানুষের মান শরীর দিয়া মানুষের গুণ নির্ধারণ করার মাপকাঠি বদলাইতে হবে। নাইলে কোন লাভ নাই।

এখন সমাজে কালো কিম্বা খাটো মেয়েদের যেমন লজ্জা দেওয়া হয়, কালো না, খাটো না এবং সামাজিক মাপকাঠিতে সুন্দর মেয়েদেরও কিন্তু কম দেওয়া হয় না।

 

আমার এক প্রাক্তন ফ্ল্যাটমেট এবং প্রাক্তন প্রেমিক বিউটি শেমিং করতে করতে আমার মানসিক অবস্থা এমন পর্যায়ে নিয়া গেছিলেন যে আমি সামান্য সাজগোজ করতে, গয়না পরতে ও প্রেজেন্টেবল হইয়া থাকতে হইলে শেকি হইয়া যাইতাম। মনে হইতো, আয়হায়, কেউ যদি মনে করে সৌন্দর্য দিয়া কোন সুবিধা আদায় করতেছি! থাকগা, ফকিন্নি সাইজাই থাকি, সেফ!

এইসব সুন্দর বান্দর নিয়া পইড়া থাকলে এরকমই হবে। মাপকাঠি বদলাইতে হবে, ঠিক কিনা ভাবী!!