মঙ্গলবার থেকে দেশজুড়ে ফের ৩৬ ঘণ্টার অবরোধ

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ১১, ২০২৩

সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে দেশজুড়ে ফের ৩৬ ঘণ্টার অবরোধ ডেকেছে বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো। একই কর্মসূচি ডেকেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই অবরোধ চলবে।

আজ রোববার বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আলাদাভাবে একই কর্মসূচি ঘোষণা করে সমমনা দলগুলো।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “৭ জানুয়ারি নির্বাচন করার জন্য সরকার দেশব্যাপী গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে। নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। তারা কবরস্থানের মতো নিস্তব্ধতা জারি রাখতে চায়। লোক দেখানো প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়। তবে সরকার এবার প্রহসন ও জালিয়াতি করে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। আজকে গণতান্ত্রিক বিশ্ব ও দেশের জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে।”

তিনি আরও বলেন, “মানবাধিকার দিবসের কর্মসূচি ঘিরে দেশের বিভিন্নস্থানে বিএনপির ওপর সরকার পরিকল্পিত হামলা করেছে। তারা (আওয়ামী লীগ) ভেবেছিল হামলা মামলা ও গ্রেফতার জাতীয়তাবাদী শক্তিকে স্তব্ধ করে দেবে। কিন্তু না, জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বুক চিতিয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছে। তারা সব ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সারা দেশে মানবাধিকার দিবসে মানববন্ধনে জড়ো হয়েছে। জনগণ ‘জালিয়াতি, সিলেকশান ও প্রহসনের ইলেকশন’ মানে না।”

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “রোববার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে পুলিশ হবিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে অনেককে আহত করেছে। সারা দেশে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিচ্ছে। নেতাকর্মীদের আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছে। যাতে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া যায়। আজকে সরকার দ্বিতীয় বাকশাল কায়েম করতে চায়।”

জাতিসংঘে পাঠানো চিঠির প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে বলুন, তিনি যখন বিরোধী দলের নেত্রী থাকেন তখন বিদেশিরা আপনার কাছে ভালো থাকে। নিজেকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য উনি সবকিছু করতে পারেন। এখন বিদেশিরা বাংলাদেশে যখন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চাচ্ছেন, তখন আওয়ামী লীগের গা জ্বলে যাচ্ছে। নিজের স্বার্থে বিদেশিদের সাথে কথা বলতে পারে ক্ষমতাসীন দল।”

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, “মঙ্গলবার থেকে ৩৬ ঘণ্টার সর্বাত্মক রাজপথ-রেলপথ-নৌপথে অবরোধ কর্মসূচি সফলে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানাচ্ছি। সরকারের একতরফা নির্বাচন দেশের জনগণ হতে দেবে না। আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটানো হবে।”

এদিকে পৃথক বিবৃতিতে অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম। তিনি বলেন, “জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল, একতরফা তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদ এবং সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে ১২ ডিসেম্বর সকাল ৬টা থেকে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টানা ৩৬ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে।”

পৃথক বিবৃতিতে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদও অবরোধ কর্মসূচি সফলের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও একই কর্মসূচি পালন করবে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ ধারায় আন্দোলনরত ১২ দলীয় জোট, এলডিপি, নুরুল হক নুর নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ, ড. রেজা কিবরিয়া নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ, গণফোরাম (মন্টু), পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টিসহ আরও বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।