
‘সেদিনেই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, ক্যান্টনমেন্ট থেকে তাকে বের করে দেব’
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : অক্টোবর ০৩, ২০২৩
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, ক্যান্টনমেন্ট থেকে খালেদা জিয়াকে বের করে দেব, বের করেছি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃটেনে স্থানীয় সময় সোমবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছিল বলেই তো এই ক্যান্টনমেন্ট। আমি এই ক্যান্টনমেন্টে ঢুকলে আমার বিরুদ্ধে মামলা…। সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যেদিন সুযোগ পাব এই ক্যান্টনমেন্ট থেকে তাকে বের করে দেব।”
তিনি বলেন, “আমি শুধু বললাম, আজকে আমাকে ঢুকতে দাও না। যখন জিয়াউর রহমান ঘরে তুলতে চায়নি প্রতিদিন তো আমাদের বাসায় যেয়ে কান্নাকাটি করতা। আমি তারপরও আজকে তাকে কারাগার থেকে বাসায় থাকতে দিয়েছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “তার ছেলে কোকো মারা গেছে। সে আমার বাবা-মা ও ভাই-বোনের মৃত্যু দিবসে উৎসব করে। কিন্তু আমি তো মানুষ। আমি তো একজন মা। আমি ভাবলামক, আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সব মানুষের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আমার।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি যাব, খালেদা জিয়াকে সহানুভূতি দেখাবো। আমার তরফ থেকে মিলিটারি সেক্রেটারি যোগাযোগ করলো। সময় ঠিক হলো। গুলশানে যেখানে ছিল, সেখানে গেছি। আমাকে মুখের সামনে তালা মেরে দিলো, আমাকে ঢুকতে দিলো না।”
তিনি বলেন, “কত বড় অপমান, আপনারা চিন্তা করেন। আজকে অন্যকোনো প্রধানমন্ত্রী হলে কী করতো? কী করতো, আপনারা চিন্তা করেন। আমাকে ঢুকতে দিলো না। আমি শুধু বললাম, আজকে আমাকে ঢুকতে দাও না, যখন জিয়াউর রহমান ঘরে তুলতে চায়নি প্রতিদিন আমাদের বাসায় গিয়ে কান্নাকাটি করতা। আমার বাবার বদৌলতে তুমি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতে পেরেছো।”
শেখ হাসিনা বলেন, “নাহলে বহু আগেই জিয়া ছেড়ে দিয়েছিল। জিয়ার আবার নতুন গার্লফ্রেন্ডও ছিল। তাকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। তার সংসারটা রক্ষা করে দিয়েছিলো আমার বাবা। আমাদের বাসায় গিয়ে তো মোড়া পেতে বসে থাকতো। সেখানে আমাকে ঢুকতে না দিয়ে কত বড় অপমান করেছো। আমি কিচ্ছু বলি নাই। আমার বলার কিছু নাই। আমি দেখতে পাচ্ছি, ভিতরে তাদের সব নেতা। আমি দেখতে পাচ্ছি, গেটে তালা। কিছু করার নেই তাদের।”
তিনি আরও বলেন, “জাতির পিতার কন্যা হিসেবে নিরাপত্তার একটা আইন করা হয়েছিল। সেই আইনের বলে রেহানাকে ধানমন্ডির ৬ নম্বর রোডে ছোট্ট একটা বাড়ি দেয়া হয়েছিল। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেই সেই বাড়িটা দখল করলো। আমাদের যারা ছিল, ওদের বের করে দিলো। বের করে দিয়ে ওটাকে পুলিশের ফাঁড়ি করা হলো। একটা প্রধানমন্ত্রী গেলো পুলিশ ফাঁড়ি উদ্বোধন করতে, লাল টুকটুকে শাড়ি পরে। সে এই পুলিশ ফাঁড়ি উদ্বোধন করলো যখন, তখনও সেই বাড়ি রেহানার নামে রেজিস্ট্রি করা।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রেহানা, আপনারা জানেন সে একটা ব্যক্তিত্ব নিয়ে চলে। পুলিশ ফাঁড়ি যখন করেছে সে বলে, ঠিক আছে ওটা পুলিশকেই দিয়ে দিলাম। সে আর ওই বাড়ি নেয় নাই।”
তিনি আরও বলেন, “ক্যান্টনমেন্টে আমি ঢুকবো, সেসময় কয়েকজনকে আহত করা হয়েছে। আমাকে ঢুকতে দেবে না। গেটে আটকালো। তখন আমি প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা। আমার পতাকাবাহী গাড়ি আটকালো। আমি ওখান থেকে নামলাম, নেমেই হাঁটা শুরু করলাম। আমি যখন হাঁটতে শুরু করেছি তখন অনেক লোক জমা হয়ে গেছে। চার কিলোমিটার হেঁটে আমি সিএমএইচ’এ গেলাম। সিএমএইচ’র গেট বন্ধ আমাকে ঢুকতে দেবে না। আমাকে ঢুকতে দেয়নি। ক্যান্টনমেন্টের রাস্তায় হাঁটলাম কেন! আামার সঙ্গে যারা ছিল সবার বিরুদ্ধে মামলা দিলো।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছিল বলেই না এই ক্যান্টনমেন্ট, আর মেজর জিয়া। আরে এই মেজর পদন্নতিটা তো আমার বাপেরই দেয়া ছিল। আর আমি ক্যান্টনমেন্টে ঢুকলে আমার বিরুদ্ধে মামলা…। সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, ওই ক্যান্টনমেন্টে আর বসবাস করা লাগবে না। যেদিন সুযোগ পাব বের করে দেব। বের করে দিছি।”