
কথাসাহিত্যিক আলাউদ্দিন আল আজাদের আজ জন্মদিন
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : মে ০৬, ২০২৫
কবি ও কথাসাহিত্যিক আলাউদ্দিন আল আজাদের আজ জন্মদিন। ১৯৩২ সালের ৬ মে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার রামনগর গ্রামে তার জন্ম। পিতা গাজী আব্দুস সোবহান, মা মোসাম্মাৎ আমেনা খাতুন।
নারায়ণপুর শরাফতউল্লাহ উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৭ সালে আজাদ প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে ১৯৪৯ উচ্চ মাধ্যমিক, এবং ১৯৫৩ ও ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন।
এরপর তিনি সরকারি কলেজের অধ্যাপনা পেশায় যুক্ত হন। তিনি নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজ (১৯৫৫), ঢাকা জগন্নাথ কলেজ (১৯৫৬-৬১), সিলেট এমসি কলেজ (১৯৬২-৬৮) এবং চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে (১৯৬৪-৬৭) অধ্যাপনা করেন।
তিনি ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন এক বছর (১৯৭৪-৭৫) এবং পরবর্তীকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। পেশাগত জীবনে মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাসে সংস্কৃতি উপদেষ্টা, শিক্ষা সচিব, সংস্কৃতিবিষয়ক বিভাগ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭০ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ঈশ্বরগুপ্তের জীবন ও কবিতা বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৯ সালের ৩ জুলাই শুক্রবার রাতে ঢাকার উত্তরায় নিজ বাসভবন রত্নদ্বীপে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন।
আলাউদ্দিন আল আজাদ ছিলেন বাস্তব জীবনের রূপকার। বাস্তবতার রূপ পরিগ্রহ করেছে তার ভাষা নির্মাণে। সংস্কৃতাশ্রয়ী শব্দ তিনি পরিহার করেছেন বলা চলে। তিনি প্রধানত মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের রূপকার। তার গল্প নাতিদীর্ঘ।
আলাউদ্দিন আল আজাদ লিখিত বইগুলো হচ্ছে: তেইশ নম্বর তৈলচিত্র, শীতের শেষরাত বসন্তের প্রথম দিন, কর্ণফুলী, ক্ষুধা ও আশা, খসড়া কাগজ, শ্যাম ছায়ার সংবাদ, জ্যোৎস্নার অজানা জীবন, যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, স্বাগতম ভালোবাসা, অপর যোদ্ধারা, পুরানা পল্টন, অন্তরীক্ষে বৃক্ষরাজি, প্রিয় প্রিন্স, ক্যাম্পাস, অনূদিত অন্ধকার, স্বপ্নশীলা, কালো জ্যোৎস্নায় চন্দ্রমল্লিকা, বিশৃঙ্খলা, জেগে আছি, ধানকন্যা, মৃগণাভি, অন্ধকার সিঁড়ি, উজান তরঙ্গে, যখন সৈকত, আমার রক্ত স্বপ্ন আমার, মানচিত্র, ভোরের নদীর মোহনায় জাগরণ, সূর্য জ্বালার স্বপন, লেলিহান পান্ডুলিপি, নরকে লাল গোলাপ, এহুদের মেয়ে, মরোক্কোর জাদুকর, ধন্যবাদ, মায়াবী প্রহর, সংবাদ শেষাংশ, শিল্পের সাধনা, ফেরারী ডায়েরী
১৯৬৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৬৫ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার, ১৯৭৭ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৯৮৩ সালে আবুল কালাম শামসুদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে আবুল মনসুর আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে লেখিকা সংঘ পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে রংধনু পুরস্কার, ১৯৮৬ সালে অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৬ সালে একুশে পদক, ১৯৮৭ সালে শেরে বাংলা সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে নাট্যসভা ব্যক্তিত্ব পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে কথক একাডেমী পুরস্কার এবং ১৯৯৪ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ স্বর্ণ পদক।