
বইমেলায় আসছে আবু তাহের সরফরাজের ‘ছোটদের পদার্থবিজ্ঞান’
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২২
কবি ও কথাসাহিত্যিক আবু তাহের সরফরাজের শিশুশিক্ষার বই ‘ছোটদের পদার্থবিজ্ঞান’ প্রকাশিত হয়েছে এবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। বইটি মূলত ছোটদের উপযোগী পদার্থবিজ্ঞানের প্রাথমিক পাঠ। স্কুল-পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য।
কবিতা ও গল্প-উপন্যাস লেখার পাশাপাশি বিজ্ঞানবিষয়ক লেখালেখির তেমন একটা প্রচলন আমাদের দেশে নেই। কিন্তু সরফরাজকে এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে দেখা গেল। স্কুলপর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপযোগী ভাষায় লেখা ছোটদের পদার্থবিজ্ঞান। খটোমটো শব্দ নেই, বক্তব্যেও নেই জড়তা।
স্কুলের বিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তকের পদার্থ বিষয়ক পাঠ বুঝতে এই বইটি খুদে শিক্ষার্থীদের বিশেষ সহায়ক হবে। মুখস্থ করে নয়, পদার্থ বিষয়ক পাঠ সহজভাবে জেনে ও বুঝেই তারা স্কুল পরীক্ষায় লিখে দিয়ে আসতে পারবে। বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে পদার্থের গঠন, চরিত্র, ধর্ম, পরমাণুর নিউক্লীয় বল পর্যন্ত অবস্থা, আইসোটোপ, তেজস্ক্রিয়তা, প্রতীক ও যোজ্যতা।
ধারণা দেয়া হয়েছে পারমাণবিক বল, ভর, সংখ্যা ও শক্তি সম্বন্ধে। এই পাঠ পদার্থবিজ্ঞানের প্রাথমিক পাঠ, যা সাধারণত স্কুলপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। পদার্থবিজ্ঞানের বিস্তৃত পাঠ নেয়ার বয়েস খুদে পাঠকের নয়। এজন্য বিস্তৃত পরিসরে পদার্থবিজ্ঞানের আলোচনা বইটিতে নেই। তবে পদার্থবিজ্ঞানকে ভালোভাবে বুঝতে ও জানতে তাদের কৌতূহলকে উসকে দেয়া হয়েছে।
এরই অংশ হিশেবে বইটিতে ১১৮টি মৌলিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য, জৈবিক ভূমিকা, উৎস, ব্যবহার ও আইসোটোপ বর্ণনা করা হয়েছে। মৌলিক পদার্থ দিয়ে তৈরি জিনিসপত্র প্রতিমুহূর্তে আমরা ব্যবহার করে চলেছি, অথচ ওইসব পদার্থ বিষয়ে তেমন কিছুই জানি না। বইটি পাঠে খুদে শিক্ষার্থীদের সেই জানাটাও হয়ে যাবে।
বইটির বিষয়ে আবু তাহের সরফরাজ বলেন, “আমি বিজ্ঞান লেখক নই, সাহিত্যিক। বিজ্ঞানের প্রতি ঝোঁক কখনো ছিল না। সাহিত্যচর্চা করেই এতদিন আনন্দ পেয়েছি। জীবন অভিজ্ঞতায় বুঝেছি, সাহিত্য আসলে মানুষের রুচি তৈরি করে। এর বাইরে সাহিত্যের তেমন আর কাজ নেই। জগতে যে যত রুচিমান, সে তত উন্নত চরিত্রের মানুষ। মানুষ যখন রুচিমান হয়ে ওঠে, এরপর তার দরকার হয় জ্ঞান। জীবন ও জগৎ বিষয়ক জ্ঞান।”
তিনি আরও বলেন, “বিজ্ঞান, দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব হচ্ছে জ্ঞানের উৎস। জীবন ও জগৎ জিজ্ঞাসার তৃষ্ণা নিয়ে আমি বিজ্ঞানপাঠ আরম্ভ করি। পাশাপাশি দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব। এই পাঠ আর শেষ হওয়ার নয়। যত পড়ছি, জ্ঞানের দরজাগুলো ততবেশি খুলে যাচ্ছে।”
আবু তাহের সরফরাজ বলেন, “ছোটদের পদার্থবিজ্ঞান লেখার অনুপ্রেরণা পাই কন্যা ছায়াবীথি শ্যামলিমাকে চতুর্থ শ্রেণির বিজ্ঞান বইটি পড়াতে গিয়ে। দেখি যে, লেখাগুলো সাবলীল নয়। ছায়াবীথি সহজভাবে ও আনন্দের সঙ্গে পাঠ বুঝতে পারছে না। ঝামেলায় পড়ে যাই। তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান বইগুলো কয়েকদিন পড়লাম। প্রতিটি শ্রেণিতে পদার্থবিজ্ঞানের পাঠ একটু একটু করে দেয়া।”
তিনি আরও বলেন, “আমার ভাবনায় এলো, পদার্থবিজ্ঞানের পাঠ প্রতিটি শ্রেণির বইতে না দিয়ে একটাই বই যদি হতো! বইটার নাম হতে পারত, ছোটদের পদার্থবিজ্ঞান। জানি যে, রাষ্ট্রীয় শিক্ষাব্যবস্থায় এরকমটা কখনো হবে না। না হলেও ক্ষতি নেই। পদার্থবিজ্ঞানের তথ্যগুলো একসঙ্গে করে সহজ ও সাবলীল ভাষায় ছোটদের উপযোগী পদার্থজ্ঞিানের একটা বই তো লেখাই যায়। এতে খুদে শিক্ষার্থীদের সুবিধেই হবে। আর তাছাড়া যে ১১৮টি মৌলিক পদার্থ রয়েছে সেগুলোর বৈশিষ্ট্য, জৈবিক ভূমিকা, উৎস, ব্যবহার ও আইসোটোপ জানা থাকলে প্রকৃতি ও বিশ্বজগৎ বিষয়ে খুদে শিক্ষার্থীর ধারণা স্বচ্ছ হবে।”
বইটি প্রকাশ করেছে বিদ্যাপ্রকাশ। দাম রাখা হয়েছে ৩৩৫ টাকা। প্রচ্ছদ এঁকেছেন ধ্রুব এষ। বইমেলার প্রথম দিন থেকেই পাওয়া যাবে বিদ্যাপ্রকাশের স্টলে। স্টল নম্বর ৫৭-৫৮-৫৯-৬০