
নিয়োগ-পদোন্নতিতে রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই প্রথা বাতিলের সুপারিশ
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : জুলাই ১৬, ২০২৫
সরকারি চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাওয়ার প্রথা বাতিলের সুপারিশ করেছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
রোববার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত সুপারিশ বাস্তবায়ন বিষয়ক দ্বিতীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
আলোচ্য সূচির পুলিশ ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত আলোচনায় বিগত সভার সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনায় বলা হয়, পদোন্নতির ক্ষেত্রে পুলিশ বা কোনো গোয়েন্দা বিভাগের কাছে রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাওয়ার প্রথা বাতিল করার জন্য সুপারিশ করা হলো। কারণ জনপ্রশাসনের রাজনীতিকরণ স্তর থেকেই শুরু হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পূর্বে কোনো প্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন করা যাবে না।
এতে বলা হয়, বিসিএস পরীক্ষায় কৃতকর্য হওয়ার পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ বিভাগের কাছে শুধু সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা আছে কিনা সে সম্পর্কে প্রতিবেদন চাইবে। প্রয়োজনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রতিবেদন চাইতে পারে।
পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরিবর্তে প্রার্থীর যোগদানকৃত মন্ত্রণালয় কর্তৃক সম্পাদিত হবে। এছাড়া পাসপোর্ট, দ্বৈত নাগরিকত্ব, সমাজসেবা সংস্থা বা এনজিওর বোর্ড গঠন ইত্যাদি নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম বাতিল করার জন্য সুপারিশ করা হলো। একজন নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র থাকলে তার বিষয় নিষ্পত্তি করা যেতে পারে।
সভায় এ বিষয়ে দুটি সিদ্ধান্ত হয়। চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাওয়ার প্রথা বাতিল করতে হবে। বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্বৈত নাগরিকত্ব ব্যতীত সব ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রথা এরই মধ্যে বাতিল করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাওয়ার প্রথা বাতিলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ এবং সুরক্ষা সেবা বিভাগ।
সভার সভাপতি এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া শুরুতে বলেন, সংস্কার কমিশন কর্তৃক আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশমালা বাস্তবায়নে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যৌথভাবে কাজ করছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান যে কোনো সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত সুপারিশ সময়ের মধ্যে ১৮টি সুপারিশ আসু বাস্তবায়নযোগ্য বিবেচনা করে ঐকমত্য কমিশন সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের প্রস্তাব করে।
এ লক্ষ্যে ১৬ জুন একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং সভায় প্রাথমিকভাবে ৮টি সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অবশিষ্ট ১০টি সুপারিশ নিয়েও আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে সভায় জানানো হয়। পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিষয়টি অবশিষ্ট ১০টি সুপারিশের মধ্যে একটি।