ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন কাতারের

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : এপ্রিল ২৪, ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে দেশ পুনর্গঠনে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জাসেম আল সানি। আজ বৃহস্পতিবার দোহায় নিজ কার্যালয়ে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আশ্বাস দেন।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমি ঘনিষ্ঠ একজন সহযোগীকে দায়িত্ব দেব। আমরা আপনার ধারাবাহিক নেতৃত্বের ওপর ভরসা করি। আমার আশা, সংস্কার ও পুনর্গঠনের এ প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।”

প্রধান উপদেষ্টা কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কাছে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কূটনৈতিক, আর্থিক ও বিনিয়োগ সহযোগিতা চান। তিনি দেশের প্রায় ১৮ কোটি জনগণ, বিশেষ করে তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমাদের তরুণদের স্বপ্নের দেশ গড়ে তুলতে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

কাতারের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে বিস্তৃত সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করতে একটি কারিগরি দল পাঠানোর অনুরোধ জানান। বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটও আলোচনায় উঠে আসে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “রোহিঙ্গারা যাতে সম্মানজনকভাবে নিজ দেশে ফিরতে পারে, সেজন্য সব ধরনের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিত করা জরুরি।”

তিনি আর্থনা সামিটের ফাঁকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সংলাপ আয়োজনে সহায়তার জন্য কাতারের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের ভূমিকাকে সাধুবাদ জানান এবং এই সংকট সমাধানে আরও আন্তর্জাতিক সহায়তা আহ্বান করেন। তিনি বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা ও এ সংকটের টেকসই সমাধানে কাতারের অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস দেন।

বৈঠকে গাজা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গাজাবাসীর দুর্দশা নিয়ে বিশ্ব এখনো অনেকটাই নীরব। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থানকে সাধুবাদ জানান কাতারের প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশের নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামো গড়ে তুলতে কাতারের সহায়তা কামনা করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যা শেখ মোহাম্মদ সানন্দে গ্রহণ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা ২৩ এপ্রিল আল জাজিরা পরিদর্শন করেন এবং গাজা সংকট নিয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও রিপোর্ট করা অব্যাহত রাখায় তিনি আল জাজিরাকে ধন্যবাদ জানান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদসহ অন্যরা।