‘পাঁচ সচিবকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করতে হবে’

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : মে ১০, ২০২৫

স্বৈরাচারের দোসর ৫ সচিবকে অবাঞ্ছিত করে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই তাদেরকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

এই ৫ সচিব হচ্ছেন: পানিসম্পদ সচিব মো. নাজমুল আহসান, কৃষি সচিব ড. মো. ইমদাদ উল্লাহ মিয়ান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জায়েদা পারভীন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুল ইসলাম এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন (চলতি দায়িত্ব)।

৫ সচিবের দপ্তর ঘেরাও করে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে সংগঠনটি। স্বৈরাচারের দোসরদের চাকরি থেকে অপসারণ এবং চুক্তিভিত্তিক কর্মে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছে তারা। উল্লিখিত দাবি আদায়ে মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যাবেন সংগঠটির নেতারা। সংগঠনের ৮ মে অনুষ্ঠিত সভায় এ ধরনের ১৪টি সিদ্ধান্ত নেওয় হয়।

সাবেক সচিব ও বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি এবিএম আব্দুস সাত্তার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা, কমিশন, সংস্কার কমিশন ও জনপ্রশাসনে বিভিন্ন পদে নিয়োগ পাওয়া বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে সংগঠনটি উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করবে। অবাঞ্ছিত ৫ সচিবকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করা হবে। পর্যায়ক্রমে সংগঠনটি তাদের দপ্তর ঘেরাও করে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত বিতর্কিত কর্মকর্তা, স্বৈরাচারের দোসর দুর্নীতিবাজরা প্রশাসনে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। তারা দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারায় লিপ্ত। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া এবং স্বৈরাচারের দোসরদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে। ১৫ মে সকাল ১১টায় প্রেস ক্লাব থেকে দৈনিক বাংলা পর্যন্ত কালো পতাকা মিছিল করবে ফোরামের সদস্যরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সচিবালয়ের নন-ক্যাডার সহকারী সচিব পদে যোগ্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এও) এবং পার্সোনাল অফিসারদের মধ্যে থেকে যোগ্য কর্মকর্তাদের জন্য তিনশোটি সুপারনিউমারি পদ সৃজন করে পদোন্নতি দিতে হবে। সচিবালয়ে ও মাঠ প্রশাসনে কর্মরত সব নন-ক্যাডার কর্মচারিকে রেশন সুবিধা দিতে হবে। জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য বদলি ও পদোন্নতি বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি বাতিল করতে হবে। ওই কমিটি বাতিল না করলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত বছর ৫ আগস্টের আগে পদোন্নতি পাওয়া দুর্নীতিবাজ আওয়ামী দোসর যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিবদের সচিব কিংবা সংস্থা প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। ৫ আগস্টের পর ওএসডি ও অপসারণ হওয়া কোনো কর্মকর্তাকে আবার নিয়োগ পদায়ন দেওয়া যাবে না। দেওয়া হলে জড়িত কর্মকর্তা ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই আন্দোলনের পর ৫০০টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ১৩০ পুলিশ সুপারকে বিভিন্ন দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। তারা ঢাকায় একত্রিত হয়ে সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের ক্ষেত্র বিশেষ বাধ্যতামূলক অবসর কিংবা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পদায়ন করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জেলা প্রশাসক নিয়োগে ঘুস লেনদেনের সঙ্গে জড়িত যুগ্মসচিব কেএম আলী আজম ও ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে কালবিলম্ব না করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া ৩ উপদেষ্টার সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। পদোন্নতির ক্ষেত্রে এনএসআইয়ের প্রতিবেদন নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, তারা স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিভিল প্রশাসনে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ডিজিএফআইয়ের প্রতিবেদন নিতান্তই অবান্তর। পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংস্থাটির প্রতিবেদন না নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২৪তম ব্যাচের ১৮৪ জন বঞ্চিত কর্মকর্তার পদোন্নতির রিভিউ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। এরই মধ্যে যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) প্রত্যাহার করে তাদের জায়গায় ২৫ ও ২৭ ব্যাচের দল নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে।