
কবি যতীন্দ্রপ্রসাদ ভট্টাচার্যের আজ মৃত্যুদিন
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : মার্চ ১৪, ২০২১
কবি যতীন্দ্রপ্রসাদ ভট্টাচার্যের আজ মৃত্যুদিন। ১৯৭৫ সালের ১৪ মার্চ ৮৫ বছর বয়সে কলকাতায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ১৮৯০ সালের ২৭ মে রাজশাহীর নওগাঁ মহকুমার বালিহার গ্রামে তার জন্ম।
পিতা রোহিণীপ্রসাদ ভট্টাচার্য। যতীন্দ্রপ্রসাদের প্রথম ছাত্রজীবন কাটে পিতার কর্মক্ষেত্র ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। ১৯০৮ সালে তিনি কাশীপ্রবাসী পিতামহের কাছে চলে যান এবং সেখানে তিন-চার বছর পড়াশোনা করেন।
এখানেই তার কবিত্বের উন্মেষ ঘটে। পরে পড়াশোনার জন্য কলকাতায় থাকার সময় সে সময়কার উদীয়মান কবি-সাহিত্যিকদের সাথে পরিচয় ঘনিষ্ঠতর হয় এবং `ভারতবর্ষ`, `প্রবাসী`, ‘মানসী`,` ভারতী` প্রভৃতি পত্রিকায় কবিতা লিখতে থাকেন।
কর্মজীবন শুরু করতে তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ফিরে যান। তখন গৌরীপুরের জমিদার ছিলেন সংস্কৃতি অনুরাগী অতুল বিত্তশালী ব্রজকিশোর রায়চৌধুরী। তিনি ছিলেন রোহিণীপ্রসাদের কনিষ্ঠ সহোদর রজনীপ্রসাদ ভট্টাচার্য।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরের জমিদার-পত্নী বিশ্বেশ্বর দেবী তাকে দত্তক নেন এবং নাম হয় ব্রজকিশোর রায়চৌধুরী। তারই কাছারিতে প্রধান নায়েব বা সদর নায়েব হিসাবে কর্মরত ছিলেন। এই সময় তিনি ধনশালী অথচ সংস্কৃতি অনুরাগী জমিদারের সান্নিধ্য পাওয়ার ফলে শিক্ষা, সংস্কৃতি সম্পর্কে স্বাধীন ও উদার মত পোষণের সুযোগ পান।
পূর্ববাংলার পল্লী প্রকৃতি সহজ সৌন্দর্য তার সহজ সরল শিশুসুলভ চরিত্রে প্রভাব বিস্তার করে। তিনি রবীন্দ্র প্রভাবিত যুগে জন্মগ্রহণ করে ভাবে ও রূপে বাংলা কাব্যে যে স্বকীয়তা দেখান, সেজন্য তাকে কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের `উত্তরসাধক` হিসাবে তুলে ধরেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডক্টর আশুতোষ ভট্টাচার্য।
কেবল নির্দিষ্ট সীমার মাঝে থাকায় তিনি পরিচিতি তেমন পাননি। ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান সরকার জমিদারিস্বত্ব অবলুপ্ত করে দিলে তিনি নায়েবপদ থেকে অবসর নিতে বাধ্য হন। এরপর সপরিবারে কলকাতায় চলে আসেন।
তার রচিত কাব্যগ্রন্থগুলি হলো, মর্মগাথা, হাসির হল্লা, ছায়াপথ, রামধনু ও নভোরেণু। ১৯২৪ সালে `বঙ্গবাসী` পত্রিকার জ্যৈষ্ঠ সংখ্যায় `লেনিন` শীর্ষক কবিতা প্রকাশ হলে তিনি সরকারের বিরাগভাজন হন। রাজরোষ প্রশমনের উদ্দেশ্যে `ব্রিটন-বীর্য` কবিতা রচনা করেন।
তবে পরবর্তীকালে তার `লেনিন` কবিতা তাকে যথেষ্ট খ্যাতি এনে দ্যায় এবং কবিতাটি রাশিয়ায় ১৬/১৮টি প্রাদেশিক ভাষায় অনূদিত হয়।