এহসান হাবীবের আত্মগদ্য ‘স্কুল পালানো জীবন’

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২

প্রথম কখন স্কুল থেকে পালিয়ে গিয়েছিলাম, তা আজ আর মনে নাই। আমাদের গ্রামে বিশাল বিশাল বাঁশঝাড়ের জঙ্গল ছিল। জঙ্গলের পিছনে সুতোর মতো ছোট্ট সুরিয়া নদী। সারা বছর নদীতে পানিতে থাকতো। হাঁটু পানি না, মোটামুটি গলা পানিই থাকতো। বর্ষাকালে একেবারে কূল উপচিয়ে দিত। আমি পড়তাম শাহগঞ্জ প্রাইমারি স্কুল। ক্লাশ টু-থ্রিতে পড়ার সময় আমি প্রায় সময়ই এক দুই ক্লাশ করে পেছন থেকে পলায়ে যেতাম। তারপর বাঁশঝাড় ঘুরাঘুরি করে নদীতে দাপাদাপি করতাম। প্রায় সময় আম্মা খবর পেয়ে যেতেন যে, আমি স্কুল পালাইছি। আম্মা আমারে ঠিক খুঁজে খুঁজে বের করে ফেলতেন। তারপর বেদম মাইর। এমনও হইছে যে, আম্মা বাড়ি নেয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন না। বাঁশঝাড় পর্যন্ত এসেই উনি শুরু করে দিতেন। বাঁশঝাড় লাগোয়া একটা ছোট্ট নালা ছিল। শুকনার সময়ে ওই নালা দিয়ে সেচের পানি যেত। ও-ই নালার কাছে এসেই আম্মা শুরু করে দিতেন। কারণ, ওখানে প্রচুর বাঁশের কঞ্চি পড়ে থাকতো। ওই কঞ্চি দিয়াই শুরু করতেন। তারপর আমি নালায় পড়ে গোঙাতে থাকতাম।

একবার তো আম্মা, আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমাকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়েছিলেন। আমার বয়স তখন সাত/আট হবে। কিন্তু আম্মার রাগ আর কমে না। আমার স্কুল পালানোর উদ্যোমও কমে না। যখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি তখন আমি নিজেকে বড় একটা কিছু করার জন্য তৈরি করতে থাকি। গ্রাম ছেড়ে তখন আমরা গৌরিপুর চলে আসি। সরযুবালা প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে পড়ার সময় আমার জেলে বাচ্চাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। আমি প্রায় প্রতিদিন স্কুলে না গিয়ে জেলে বাচ্চাদের সাথে খেলা করে দিন পার করি। ওদের সঙ্গে আমি ধুতুরার ফল দিয়ে খেলি। কাঁটাযুক্ত একটা ফল। ফলটাকে শূন্যে ছুড়ে দিয়ে যখন নিচে নেমে আসতে থাকে তখন হাত মুষ্টিবদ্ধ করে তালুর উল্টোপিঠ দিয়ে ব্যাট চালানোর মতো করে ফলটাকে মারতে হবে। ফলের কাটাগুলো চামড়া ফুটো করে দেয় তারপর সজোরে হাত ঘুরাতে ঘুরাতে ফুটোর জায়গা দিয়ে অল্প অল্প করে রক্ত বের হতে থাকে। যে বেশি রক্ত বের করতে পারবে, সেই জয়ী। এই খেলায় আমি প্রায় সময়ই হারতাম কিন্তু জেতার অদম্য ইচ্ছায় দিনের পর দিন স্কুল ফাঁকি দিয়ে খেলাটা চালিয়ে নিয়ে যেতে লাগলাম।

গ্রামের চেয়ে গৌরিপুরে একটা সুবিধা ছিল যে, এখানে যখন তখন আম্মা আমাকে ধরে ফেলার জন্য থাকতেন না। আম্মা সকালে শাহগঞ্জে তার স্কুলে চলে যেতেন, ফিরতেন সন্ধ্যায়। সারাদিন আমি রাজা। কিন্তু বাধ সাধলেন নাসিমা আপা। সরযুবালা স্কুলের শিক্ষিকা। তিনি কীভাবে যেন খবর পেলেন, স্কুলে না গিয়ে আমি সারাদিন এই করি। সেদিন বোধহয় আমরা দিয়াশলাই বাক্সের প্যাকেট দিয়ে নই খেলছিলাম। এটা বাচ্চাদের জুয়া এবং এটা তখন ভয়াবহ রকমের অপরাধ ছিল। তিনি সেদিন আমার খেলার মজলিশ থেকে আমাকে ধরে আনলেন। কানে ধরে অনেকক্ষণ আমাকে ক্লাসে দাঁড় করিয়ে রাখলেন। বকতে বকতে বললেন, তোমার মাকে বলবো, তোমাকে যেন বিয়ে করিয়ে দেন। বিয়ের কথা শুনে আমি ফিক করে হেসে ফেলি। নাসিমা আপা আবার বলছেন, আবার দেখো, বিয়ের কথা শুনে হাসে। তারপর আম্মার কানে গেল এই ঘটনা। যথারীতি একটা বেদম মাইর জুটলো কপালে। সেবার বোধহয় আমার পিঠে বড়সরো একটা ক্ষত হয়েছিল। সেই দাগ পিঠে এখনো আছে। আদ্রিতা আমাকে মাঝেমধ্যে জিজ্ঞেস করে, বাবা, এটা কিসের দাগ? আমি বলি, তোমার দাদি আমাকে মেরেছিল। আদ্রিতার তখন দাদীর প্রতি খুব রাগ হয়। বলে, দাদি ভালো না, তোমাকে মারে। আমি বলি, নারে মা, তোমার দাদি খুব ভালো, তোমার বাবা খুব দুষ্টু ছিল।

আদ্রিতা তখন ফের জিজ্ঞেস করে, তুমি দুষ্টু ছিলে কেন? আমি হাসি। হাহাহা। এর উত্তর কী জানি? এরপর আমি ভাবতে থাকি এবার দূরে কোথাও পালাতে হবে। কিন্তু কীভাবে? একদিন আমি স্টেশনে গেলাম একা একা। বাহ্ রে! স্টেশন কত সুন্দর! কত মানুষ! ট্রেন আসে ট্রেন যায়। কত মানুষ ওঠে, নামে। এরপর আমি নিয়মিতই স্টেশনে যাই। গিয়ে বসে থাকি। ট্রেনের আসা যাওয়া দেখি আর ভাবতে থাকি, এই ট্রেনে করেই একদিন পালিয়ে যাব। যাব কেন? আজই কেন যাচ্ছি না? আমি মোহনগঞ্জগামী একটা ট্রেনে উঠে পড়ি। সেদিন বোধহয় বৃহস্পতিবার ছিল। আমি সন্ধ্যার দিকে একটা স্টেশনে নামি। স্টেশনের নাম ঠাকরোকোনা। নেত্রকোনা পার হয়ে যেতে হয়। ঠাকরোকোণা নেমে এখানে সেখানে হাঁটি। কী করা যায়? স্টেশনের বাইরে বাজার মতো এলাকায় হাঁটি। ভাবি, এখানে কোনো একটা ভাতের হোটেলে চাকরি নেব। খুঁজতে খুঁজতে একটা দোকান পেয়ে যাই। দোকানের ক্যাশবাক্সে যে লোকটা বসে ছিল তার কাছে গিয়ে বললাম, আমাকে আপনাদের দোকানে রাখবেন? আমি আপনাদের কাজ করে দিব। লোকটা আমাকে জিজ্ঞেস করলো, তোমার বাড়ি কোথায়?  আমি বললাম, গৌরিপুর। তোমার বাবা-মা কী করে? আমি বলি, আমার মা-বাবা বেঁচে নেই। তখন আরো কিছু লোক আমার চারপাশে জড়ো হয়।

তাদের মধ্যে একজন আমাকে ভালো করে দেখলো। তারপর বললো, তুমি কীভাবে এখানে এসেছো?  আমি বললাম ট্রেনে করে। বললো তোমার মা-বাবা কবে মারা গেছে। আমি উত্তর গুলিয়ে ফেলি। লোকটা বোধহয় বুঝতে পেরেছিল, আমি মিথ্যা বলছি। লোকটা আমাকে আদর করে ভাত খাওয়ায় তারপর খুব নরম করে বলে, তোমার জন্য তোমার বাবা-মা মনে হয় কান্না করছে। তুমি বাড়ি থেকে রাগ করে চলে এসেছো, না? এবার আমার বাবার কথা মনে পড়ে। আজকে আব্বার তাড়াইল থেকে আসার কথা। আব্বা তখন, তাড়াইল চাকরি করেন। প্রতি বৃহস্পতিবার তিনি গৌরিপুর আসেন। আব্বার কথা মনে হতেই আমার খুব কান্না আসে। আমি খুব কাঁদছি আর লোকটা আমাকে আদর করছে। কিচ্ছু হবে না। আমি তোমাকে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করছি। তিনি আমাকে ফেরার ট্রেনে তুলে দিলেন। আমি বাড়ি ফিরি ভোরবেলায়। আব্বা সারারাত ধরে আমাকে খুঁজে বারান্দায় বসে আছেন। আর আম্মা বাবাকে বলছেন, কিচ্ছু হবে না, দেখো ও ঠিক চলে আসবে। আমার ধারণা ছিল, বাড়ি ফিরলে বেদম মাইর খেতে হবে। কিন্তু এবার তা হয়নি। তারা আমাকে পেয়ে মহাখুশি। আব্বা আর আম্মা আমাকে ধরে চুমু খাচ্ছে। এরপরর আমি অনেকদিন সুবোধ ছিলাম। কিন্তু, ওই যে? সুবোধ তুই পালিয়ে যা। কানের কাছে কে যেন মন্ত্র পড়ে?

গৌরিপুরে আমার বন্ধুত্ব হয়েছিল দর্পনের সঙ্গে। দর্পনের বাবা খাদ্যগুদামে চাকরি করতেন। তারা বদলি হয়ে গেল ফুলপুরে। আমিও একদিন কাউকে কিছু না বলে ফুলপুর চলে গেলাম। তারপর কোনো খবর নাই। তখন তো মোবাইর ছিল না। তবু আমার মা পাঁচদিন পরে ঠিকই ফুলপর থেকে আমাকে ধরে নিয়ে আসেন। এইবার অবশ্য মাইরের হাত থেকে বাঁচি নাই। এইটা ক্লাস সেভেনের ঘটনা। আমি ক্লাশ এইট পাশ দেয়ার পর আমরা ময়মনসিংহে চলে আসি। ক্লাশ নাইনে ময়মনসিংহ জিলা স্কুলে ভর্তি হই। নাইনে ভর্তি হওয়ার পর আম্মা আমাকে একটা সাইকেল কিনে দেন। আমার বন্ধু হিরা আর সোহেল। সোহেলের একটা সাইকেল ছিল। আমরা তিনজন সারাদিন সাইকেলে করে ঘুরি। জিলা স্কুলে ক্লাশ ফাঁকি দেয়ার সুযোগ কম ছিল। কারণ মেইন গেট বন্ধ থাকতো। স্কুলে একবার ঢুকে গেলে ছুটির ঘণ্টা বাজার আগে আর বের হওয়া যেত না। আবার স্কুল কামাই করলে ক্লাসটিচার বেদম মাইর দিতো। এসবের ফাঁকে ফাঁকে তবু আমরা সাইকেল নিয়া ঘুরে বেড়াই। এইসব দেখে আম্মা বার্ষিক পরীক্ষার আগে সাইকেল বেঁচে দিল। আমার বেজায় মন খারাপ। আম্মা বললেন, আবার জানুয়ারি মাসে কিনে দেব। এখন ভালো করে ফাইনাল পরীক্ষা দে। দিলাম। কোনো বিষয়ে ফেল করি নাই। এতেই বিরাট খুশি আমি।

জানুয়ারিতে আম্মা আবার সাইকেল কিনে দিল। এবার সোহেল, আমি আর হিরা মিলে একটা জিনিস আবিষ্কার করি সেটা হলো, স্কুলের পেছনের দেয়ালে সিঁড়ির মতো একটা জায়গা আছে যেটা দিয়ে সহজেই দেয়াল টপকানো যায়। আমি সোহেলকে বললাম, কাল থেকে আমরা সাইকেল স্কুলের ভেতর রাখবো না। বাইরে রানার গ্যারেজে রেখে আসবো। আর প্রথম ক্লাসে যখন স্যার রোলকল করবে তখন আমরা কেউ উপস্থিতি দেব না। আমরা টিফিনের পর পেছনের দেয়াল টপকে বেরিয়ে যাব। ফলে, টিফিনের পরে রোলকলের সময় আমাদের আর ধরতো পারবে না। এই করে আমরা পুরো বছরটা পার করে দিলাম। কিন্তু ধরা পড়লাম টেস্ট পরীক্ষার আগে। কারণ প্রিটেস্টে আমি তিন বিষয়ে ফেল করেছিলাম তার উপর সারা বছর আমার ক্লাসে উপস্থিতি ছিলো মাত্র তিনদিন। ক্লাসটিচার আম্মাকে ডাকলেন। আমার আমলনামা দেখালেন। আমি প্রতিবাদ করলাম। স্যার, আপনি তো আমারে ক্লাসে দেখছেন, তাহলে আমার উপস্থিতি মাত্র তিনদিন কেন? কামাল স্যার, আমাদের ইংরেজি পড়াতেন। উনি ছিলেন প্রথম ক্লাসের টিচার। বাচ্চাদের বেদম পেটানোর জন্য উনার নামডাক ছিল। উনি তো পুরাই কনফিউজড। ঘটনা তো সত্যি। এইটা কেমনে হলো? যাই হোক উনি আম্মাকে বললেন, আপনার ছেলে যদি, টেস্ট পরীক্ষায় কোনো বিষয়ে ফেল করে তাহলে কিন্তু ফরম ফিলাপ করতে দিব না। এ বিষয়ে আপনি কোনো অনুরোধ করতে পারবেন না। এটা আপনাকে লিখে দিতে হবে। নাহলে ও টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।

আমি আম্মাকে বলেছিলাম, তুমি লিখে দাও আম্মা। আমি পাশ করবো। আমার স্কুলজীবন এভাবে শেষ হয়ে গেল। এরপর তো আমি স্বাধীন হয়ে যাই। স্বাধীনতার পুরোটা সময় আমি এক ধরনের পালানোতেই ছিলাম। তবু আরো একবার পালিয়েছিলাম আমি। সেবার আমি সুমনের বাসায় আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে ছিলাম। সুমন আর ইলিয়াস কমল আমাকে হাসপাতালে নিযে গিয়েছিল। হাসপাতালে আমাকে ওয়াশ দেয়া হয়েছিল। ওয়াশের সময় আমার ঠোঁটের দুইপাশ মারাত্মক জখম হয়েছিল।  আমি হাসপাতাল থেকে লুঙ্গি পড়ে বেরিয়ে আর হাসপাতাল বা বাড়ি কোথাও ফিরিনি। আমি ট্রেনে করে ভৈরব হয়ে সিলেট চলে গিয়েছিলাম। সিলেট স্টেশনে ভোরবেলা নামি। আমার খুব খিদে পেয়েছিল। কিন্তু পকেটে কোনো টাকা ছিল না। আমার ভিক্ষা করতে ইচ্ছে করছিল না। আমি অনেক আগে আম্মার সাথে প্রথম সিলেট আসি। আম্মা আমাকে সিলেটের মাজার, বিমানবন্দর, ক্যাডেট কলেজ ঘুরে দেখিয়েছিলেন। আমার মনে পড়ে, ক্বিনব্রীজ পার হয়ে আমরা কোথাও গিয়েছিলাম, ক্বিনব্রীজে অনেক ছেলেদের দেখোছি তারা ওখানে রিক্সার পেছন দিক থেকে ঠেলে রিক্সা উপরে তুলে দিতেন। ব্রীজটা অনেক উঁচু হওয়ায় রিকশাচালকের একার পক্ষে এতো উপরে রিকশা চালানো সম্ভব হতো না। এ কারণে ছোট ছোট বাচ্চারা ওখানে রিকশা ঠেলতো। বিনিময়ে রিকশাচালক ওদের একটাকা দুই টাকা দিতো।

ভাবলাম, ওখানে যাই, রিকশা ঠেলি, কিছু টাকা পেলে খেতে পাব। আমি হেঁটে হেঁটে ওখানে যাই। একে তো হাসপাতাল ফেরত বিধ্বস্ত আমি তার উপর ক্ষুধার্ত। আমি কাজটা করতে পারি নাই। বরং কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি বমি করি। বমিতে শুধু পানি। কোনো খাদ্য কণা নাই। কী করি? ভাবতে থাকি। হঠাৎ মনে পড়ে, সিলেটে দীন ভাই আছে। কবি মোস্তাক আহমাদ দীন। দীন ভাইয়ের সাথে আমার পত্রালাপ ছিল। জিন্দা বাজারে বইপত্র নামে ওনার বইয়ের একটা দোকান ছিল। আমি আবার হেঁটে হেঁটে জিন্দা বাজার যাই। বইপত্র খুঁজে বের করি। গিয়ে দেখি দীন ভাই দোকানে নাই। দোকানে যে লোকটা ছিল, সে হয়তো আমাকে ডিরেল কোনো ভিক্ষুক ভেবেছিল। আমি বইপত্রের সামনের ফুটপাথে অনেকক্ষণ বসেছিলাম। দীনভাই যখন এলেন তখন আমি ভেতরে গিয়ে আমার পরিচয় দেই। দীন ভাই এক পলক আমাকে দেখলেন তারপর বসতে দিলেন। নানরুটি, কাবাব আর মাম পানির ঠাণ্ঠা একটা বোতল আনালেন। আমি রাক্ষসের মতো খেলাম। অনেকক্ষণ ওখানে বিশ্রাম নিয়ে আমি দীন ভাইকে বললাম, দীন ভাই আপনার কাছে কিছু হিসেব আছে। আমি শূন্য আর ময়মনসিংহ জং পাঠিয়েছিলাম। দীন ভাই হিসাব নিকাশ করে আমাকে তিনশো টাকা দিলেন। উনি বোধহয় একটু বেশিই দিয়েছিলেন। সেই টাকা নিয়ে আমি বিয়ানীবাজার চলে গেলাম।

বিয়ানীবাজার ঘুরছি, ফিরছি একদিন কি দুইদিন পরে হঠাৎ রাস্তার ধারে হিরার সঙ্গে দেখা। ওই যে আমার স্কুল পালানো বন্ধু হিরা। হিরা আমাকে দেখে অবাক। হিরা ওখানে চাকরি করে।  সে আমাকে তার বাসায় নিয়ে গেল। তারপর হিরার সঙ্গে আমি ময়মনসিংহে ফিরে আসি। কোনোবারই আমি ঠিকঠাক পালাইতেও পারি নাই। তবে আমি এখনো তক্কে তক্কে থাকি কখন পলায়া যাব। পূর্ণিমার রাতে পাহাড়ের ওপরে চাঁদ উঠলে পাহাড়ের নিঝুম ওইপাড় আমাকে ডাকে, আয়! আয়!! আর আমি ভাবি, ঠিক ঠিক আমি একদিন পালাতে পারবো। নিশ্চয়ই পারবো।

লেখক: কবি