‘আজ থেকে bKash লেনদেন বন্ধ করলাম’

মাহফুজ সবুজ

প্রকাশিত : আগস্ট ১২, ২০১৮

‘বিকাশ মোবাইল ফাইনান্সিং সার্ভিস’টি যখন এদেশে শুরু হয়, তখন সবার সঙ্গে আমিও বেশ উৎফুল্ল হয়েছিলাম। এটি নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল। পরে এর পথ ধরে আরো অনেকে এসেছে বাজারে।

কিন্তু দুঃখের বিষয়, তারা এখনো সেই পুরনো ধারণা আর নিয়মনীতিতে আবদ্ধ। ভাবখানা এমন, ‘আমরা এখন ব্যবসা সফল।’ সেবার থেকে যখন ব্যবসাটাই মুখ্য হয়, সে ব্যবসা বেশি দূর এগোয় না প্রতিযোগিতার বাজারে। যাদের কাছে গ্রাহকের গুরুত্ব নেই, তাদের প্রতিষ্ঠানও তেমন গ্রহকদের কাছে গুরুত্ব পাবে না। গ্রাহকেরা তখন খুঁজবেন বিকল্প। আর সে বিকল্প এখন বাংলাদেশে অনেক।

যথারীতি মোবাইল নম্বরটি দিয়ে যখন একটি বিকাশের দোকানে টাকা দিই, ভুল করে দোকানের স্টাফ অন্য নম্বরে টাকা পাঠায়। সঙ্গে সঙ্গে সেই নম্বরে কথা বললে নানা বাহানায় টাকা ফেরত দিতে সে অস্বীকার করে।

আমি বিকাশের সার্ভিস সেন্টারে ১৬২৪৭ নম্বরে ফোন করে জানতে চাইলাম, এ ব্যাপারে আপনারা কিছু করতে পারবেন কীনা? ওখান থেকে বলা হলো, ‘এটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার, ব্যক্তিগতভাবেই এটা আপনাকে সমাধান করতে হবে, এখানে বিকাশ কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই।

আমি বললাম, ওই নম্বরে যে টাকা গেছে সেটি আপনাদের সিস্টেমে আছে কীনা, এবং আমি সে তথ্য পাবো কীনা। উত্তরে ওই ভদ্রলোক বললেন, হ্যাঁ, সে তথ্য দেয়া যাবে। কিন্তু সেজন্য আপনাকে ‍কিছু তথ্য দিতে হবে। যেমন, যে নম্বর থেকে পাঠানো হয়েছে তার রেজিস্ট্রেশনের কাগজ ইত্যাদি এবং তাকেও বিকাশ অফিসে আসতে হবে।

এখন আমার প্রশ্ন হলো:
১. কেন এ ব্যপারে বিকাশ কিছু করতে পারবে না? এটা কেন শুধু একজন গ্রাহকের ব্যক্তিগত ব্যাপার হবে? তাহলে এই প্রতিষ্ঠানটির দায়বদ্ধতার জায়গা কোথায়?

২. কেন আমাকে এতগুলো ডকুমেন্ট এবং ওই ব্যক্তি যে ভুল করে টাকা পাঠিয়েছে তাকে নিয়েই হাজির হতে হবে? এমনকি সামান্য কোনো ব্যপারেও? যেখানে তাদের সিস্টেমেই সব তথ্য আছে।

কেউ তো বড় ধরণের কোনো আার্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এবং হয়েছেও। সেটা ভুল কিংবা অসচেতনতাবশত যে কোনো ভাবেই হতে পারে। আর যার নম্বরে ভুলে টাকা যায় সে লোক যে সৎ হবে, সেটাও নিশ্চিত করে বলা যায় না।

যে অভিযোগগুলো উপস্থাপন করলাম, সেটি বিকাশের বিরুদ্ধে নতুন কিছু নয়। কিন্তু সমাধানের ব্যাপারে তারা সব সময়ই একই উত্তর দিয়েছে। বিকাশ কর্তৃপক্ষ কি সবগুলো অ্যাকাউন্টকে একটি জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারে না? একটি নির্দিষ্ট রেগুলেশনের আওতায় এনে জনভোগান্তি কমাতে পারে না? তাহলে কি তাদের প্রতি গ্রাহকদের বিশ্বাস ও আশ্বস্ত হওয়াটা আরো বেড়ে যেত না?

অন্য অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে তো তেমন কোনো অভিযোগ নেই। এক্ষেত্রে সরকারের রেগুলেটরগুলোর কি দায়িত্ব আছে? আামি আজ থেকে বিকাশ-লেনদেন বন্ধ করলাম।