পরিণতি

উপন্যাস ৮

সুলতানা পারভীন

প্রকাশিত : জুলাই ১৮, ২০১৮

এই বীথি, তোমার মোবাইলটা দাও তো।
কেন?
কেন কি? দরকার আছে। দাও না?
হুঁম। কি দরকার?
একটা কল করব। মোবাইলের সব টাকাই তোমরা দুই ননদ-ভাবিতে মিলে শেষ করে দিলে।
ও, সরি।
আরে ধুর পাগলি। সরি কিসের? এখন মোবাইলটা দাও।
মোবাইল? মোবাইলটা কোথায় সেটা তো জানি না।
তো কে জানে?
আমি কী জানি!
বীথি?
উুঁ?
মোবাইলে কি সমস্যা?
কোনো সমস্যা নেই। মনে পড়ছে না কোথায় রেখেছি।
আচ্ছা আমি নেহাকেই বলি। ও দেখুক খুঁজে।
তুমি ল্যান্ডলাইন থেকেও কল করতে পারবে তো।
কেন?

বীথি চুপ করে গেল। আমি ওর দিকে এবার একটু অবাক হয়ে তাকালাম। এই মেয়েটা কিছু একটা লুকাচ্ছে। কিন্তু সেটা কি? আর মোবাইলে কি আছে সেটা এখন দেখতেই হচ্ছে। নেহাকে বলতেই ও মোবাইলটা খুঁজে বের করে আমাকে দিল। আমি হসপিটালে কল করে জানালাম, আসতে একটু দেরি হবে। এবার মোবাইলের কললিস্টটা একটু ঘাটাঘাটি করলাম। সব সমস্যার গোড়া বোধ হচ্ছে এখানেই।

আমি ভেবেছিলাম, আমার কোনো বন্ধু বীথির সাথে বাঁদরামি করার জন্য বা আমার সাথে ঝগড়া বাঁধিয়ে দেয়ার জন্য কল করেছে। এক-একটা যে হারে বদমাইশ, একটারেও বিশ্বাস নাই। কিন্তু কল লিস্টে যে নামটা দেখলাম সেটা দেখব স্বপ্নেও কল্পনা করিনি। বাবা! বাবা বীথিকে কল করেছিলেন? বাবা? কিন্তু কেন? কি বলেছেন? কেনই বা বলেছে? বীথি আমাকে সত্যিই সবার থেকে কেড়ে নেবে, এটা সত্যিই বাবা বিশ্বাস করেন?

বীথি আমকে সবার থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে, আলাদা করে নিচ্ছে, সংসারটা ছিন্নভিন্ন করে দেবে, এসব বাবা বলেছে বীথিকে? আর কি বলেছে? বীথিটা তাই এমন পাগলের মতো বিভেইভ করছে? কাকে জিজ্ঞেস করব কথাগুলো? বীথিকে? নাকি বাবাকে? কল ডিউরেশনটা দেখলাম। ৩০ মিনিট। ৩০ মিনিটে বাবা বীথিকে কী এমন বলেছে যে, মেয়েটা প্রায় মরতে বসেছিল? আমাকে পাগলের মতো ভালোবেসে কি এতই বড় অন্যায় করে ফেলেছে মেয়েটা? এতই বড় অপরাধ যে, সেটা জীবন দিয়ে শোধ না করলেই নয়?

চলবে