ভুল বিশ্বাস প্রচারকারী মতবাদগুলো

পর্ব ৩

মুযাফফর বিন মুহসিন

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৮

কাদেরিয়া তরিকা
এটি আব্দুল কাদের জিলানীর (১০৭৮-১১৬৬ খ্রিস্টাব্দ) নামে প্রচলিত তরিকা। যদিও তিনি কোনও তরিকার প্রবর্তন করেননি। তার বংশের গাউছ জিলানী নামের এক ব্যক্তি ১৪৮২ খ্রিস্টাব্দে এই তরিকার প্রচলন করেন। আর তথাকথিত ভক্তরা ওই তরিকার দোহাই দিয়ে আব্দুল কাদের জিলানীর নামে অসংখ্য মিথ্যে ও বানোয়াট কাহিনি তৈরি করে সমাজে বাজারজাত করেছে। তার মর্যাদাকে এভাবে তারা ক্ষুণ্ণ করেছে। অথচ এ সমস্ত নোংরামির সাথে তার প্রকৃত আকিদা ও আমলের কোনও মিল নেই।

চিশতিয়া তরিকা
উত্তর ভারতের মুঈনুদ্দীন চিশতীর (১১৪২-১২৩৬) নামে এ তরিকার জন্ম হয়। এ তরিকা দু’ভাগে বিভক্ত। চিশতিয়া ছাবেরিয়া ও চিশতিয়া নিজামিয়া তরিকা। মাওলানা আশরাফ আলী থানভী ও রশীদ আমহাদ গাঙ্গুহি চিশতিয়া তরিকার অনুসারী ছিলেন। আর চরমোনাইয়ের পির চিশতিয়া ছাবেরিয়া তরিকার অনুসারী।

নকশাবন্দিয়া তরিকা
তুর্কিস্তানের শায়খ বাহাউদ্দিন নকশাবন্দ (১১৪২-১২৩৬) এ তরিকার প্রবর্তক ছিলেন। তার প্রধান শিষ্য খাজা বাকাবিল্লাহ তুর্কিস্তান থেকে দিল্লিতে হিজরত করেন। ১৬০৩ সালে দিল্লিতে তিনি মারা যান। উল্লেখ্য, প্রকৃত পির সৈয়দ আহমাদ কারামত আলীকে নকশাবন্দিয়া তরিকা প্রচারের অনুমতি দেন। ফুরফুরার পিরকে মুজাদ্দেদিয়া তরিকা প্রচারের নির্দেশ দেন।

মুজাদ্দেদিয়া তরিকা
ভারতের পাঞ্জাবের অন্তর্গত সরহিন্দ শহরে ৯৭১ হিজরিতে আমহাদ বিন আব্দুল আহাদ সারহিন্দি ওরফে মুজাদ্দিদে আলফে সানির (৯৭১-১০৩৪/১৫৬৪-১৬২৪) নামে এ তরিকার নামকরণ। প্রথমে তিনি তার পিতার কাছ থেকে চিশতিয়া তরিকার ওপর বায়’হাত গ্রহণ করেন। জীবদ্দশায় তিনি ষাট ব্যক্তিকে খেলাফত দিয়ে যান। ১০৩৪ হিজরিতে তিনি মারা যান। বাংলাদেশে পরিচিত ফুরফুরার খান্দান মুজাদ্দেদিয়া তরিকার অনুসারী।

পর্যালোচনা: এগুলো সবই মানুষের তৈরি ধর্ম। ইসলামের সাথে এগুলোর কোনও সম্পর্ক নেই। তরিকাপন্থীদের কাছে আল্লাহর দেয়া অভ্রান্ত দ্বীনের কোনও মূল্য নেই বলে তারা এসমস্ত নিত্যনতুন তরিকার আবিষ্কার করেছে।

মাইজভাণ্ডারী
বাংলা ১২৩৩ সালে ১ মাঘ চট্টগ্রামের মাইজভাণ্ডার গ্রামে আহমাদুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির জন্ম হয়। তিনি কলিকাতা আলিয়া মাদরাসায় কিছু দিন পড়াশুনা করেন। কিছু দিন কাজির পদে চাকরি করার পর শিক্ষকতা পেশাকে বেছে নেন। ১৯০৬ সালে বাংলা ১৩১৩ সালের ১০ মাঘ রাত একটার পর তিনি মারা যান।

মাইজভাণ্ডারীর কতিপয় ভ্রান্তনীতি
এক. গান-বাজনার আসর বসানো। দুই. কাশফ বা গায়েবি কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং অদ্ভুত কারামত দেখানো। তিন. মানুষর আয়ু বাড়ানো ও মৃত্যু দান করা। এ ধরনের আরও অনেক কোরআন বিরোধী কুফরী কার্যক্রম তাদের রচিত বইগুলোতে উল্লেখ করা হয়েছে। মাইজভাণ্ডারীর বাণী হিসেবে প্রচার করা হয় যে, যে কেহ আমার কাছে সাহায্য চাহিবে, আমি উন্মুক্ত সাহায্য করিব। আমার সরকারের এই প্রকৃতি হাশর তক্ জারি থাকিবে।

চলবে...


মুযাফফর বিন মুহসিনের ‘ভ্রান্ত আকিদা বনাম সঠিক আকিদা’ বই থেকে পুনর্মুদ্রণ করা হলো