অলঙ্করণ: রিফাত বিন সালাম

অলঙ্করণ: রিফাত বিন সালাম

সত্যের ধারণা সবসময়ে নিঃসঙ্গ ও স্বৈরাচারী

অতনু সিংহ

প্রকাশিত : জানুয়ারি ০১, ২০১৮

সত্যের ধারণা সবসময়েই নিঃসঙ্গ ও স্বৈরাচারী। এর কোনও গণতান্ত্রিক দায় নাই। যেমন শিবের ইমেজ। সারা দেহে ভস্ম মেখে আদাড়ে-বাদাড়ে তিনি ঘুইরা বেড়ান। সোসাইটি তারে রিজেক্ট করে। সে-ও সোসাইটির পৃথকে। অথচ শিবলিঙ্গই আসলে ল্যাঙ্গুয়েজের বিদ্যা!
আজ ভোরে এসব আলাপ করছিলেন কবি ফরহাদ মজহার। আবার তিনি আরও বলছিলেন, ইন্দ্রিয় ছাড়া ঈশ্বরচিন্তা আসলে শুধুই বৌদ্ধিক বিমূর্ত চর্চা। যে চর্চায় শঙ্করচার্যের চিন্তা আর ওয়াহাবি চিন্তা এক সারিতে মিশে যায়। কিন্তু বৌদ্ধতন্ত্র হয়ে তার থেকে নানা পৃথকীকরণে চৈতন্য, নদীয়া ও লালনের নানা আলাপ ইন্দ্রিয়চেতনে ইন্দ্রিয়ের গভীর আমিকে শনাক্ত করার নানা পথ তৈরি করেছে। যেখানে দেহ আসলে বাসস্থানের জায়গা। তবে দেহ মানে দেহসর্বস্বতা নয়। ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ব্যতীত যে জ্ঞান তা যেমন ব্রাহ্মণ্যবাদী শঙ্করাচার্য ও ওয়াহাবি দক্ষিণপন্থী ইসলামকে এক সারিতে দাঁড় করায়, তেমনই ইন্দ্রিয়হীন কেবল বৌদ্ধিক জ্ঞান আসলেই জ্ঞানের বিকার অর্থে বিজ্ঞান। যা পশ্চিমা সভ্যতা থেকে এসেছে। বৌদ্ধরা ইন্দ্রিয়হীন জ্ঞানকে বিশেষ জ্ঞান নয়, জ্ঞানের বিকার অর্থে বিজ্ঞান বলে গেছেন।
এসব কথা থেকে মনে মনে ভাবি, জ্ঞান বা প্রজ্ঞা বা সত্য এসবই পরম ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য, কিন্তু আত্মের সকল ইন্দ্রিয়কে জানার সাধন করতে হয়। সে সাধনা বড় একাকিজনের। নিঃসঙ্গতার। অথবা পরমসঙ্গের সাধনা। যেমন শিব ও শিবানী। প্রকৃতি ও পুরুষ। পুরুষকে সাবমিশন জানতে হয় প্রকৃতির কাছে। গৌরীর কাছে। যেভাবে পাগল বিজয় সরকার গেয়ে গেছেন, তুমি মোর জীবনের সাধনা বন্ধু রে...

লেখক: কবি ও সাংবাদিক, জন্ম পশ্চিমবঙ্গে