অশ্বিনীকুমার দত্তের আজ জন্মদিন

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৫, ২০২১

লেখক ও রাজনীতিবিদ অশ্বিনীকুমার দত্তের আজ জন্মদিন। ১৮৫৬ সালের ২৫ জানুয়ারি বরিশালের গৌরনদীর বাটাজোর গ্রামে তার জন্ম। পিতা সাব-জজ ব্রজমোহন দত্ত।

কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অশ্বিনী এফএ পাশ করেন। এরপর ১৮৭৯ সালে এলাহাবাদ থেকে ২৩ বছর বয়েসে বিএল পাশ করেন। ওই বছর তিনি শ্রীরামপুরের চাতরা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।

বরিশালে বিভিন্ন সমাজহিতৈষী ও কল্যাণমূলক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি সুপরিচিত ছিলেন। জাতীয়তাবাদী রাজনীতি, জনকল্যাণ ও উন্নয়নমূলক কাজকর্মের জন্যে তাকে মহাত্মা অশ্বিনীকুমার বা আধুনিক বরিশালের রূপকার বলে অভিহিত করা হতো।

দুর্নীতি, সামাজিক গোঁড়ামি, কুসংস্কার ইত্যাদির বিরুদ্ধে ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন তিনি। দুর্ভিক্ষে অতুলনীয় সেবাকাজে, চা বাগান শ্রমিকদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রান, ক্লান্তিহীন নেতা।

চারণকবি মুকুন্দ দাস ও রাজনীতিবিদ আবুল কাশেম ফজলুল হকের খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠায় তার সর্বাত্মক অবদান ছিল। বরিশাল শহরে নিজের দান করা এলাকায় পিতার নামে ব্রজমোহন বিদ্যালয় ও ব্রজমোহন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

গভীর নিষ্ঠার সঙ্গে কুড়ি বছর বিনা বেতনে কলেজে শিক্ষাদান করেন। তিনি বরিশাল শহরে স্ত্রী শিক্ষার্থে একটি বালিকা বিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯০৫-১৯১১ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় জাতীয় নেতার স্থান লাভ করেন তিনি।

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের মাদ্রাজ অধিবেশনে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেন। জাতীয় কংগ্রেসকে প্রাসাদ রাজনীতি থেকে সাধারণ জনগণের মধ্যে নিয়ে আসার প্রথম কারিগর অশ্বিনীকুমার দত্ত।

তার প্রতিষ্ঠিত স্বদেশ বান্ধব সমিতির স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্যে বরিশালকে স্বদেশি আন্দোলনের শক্তিশালী কেন্দ্রে পরিণত করে। জেলার সর্বত্র এর ১৬০টিরও বেশি শাখা ছিল। ব্রিটিশ পুলিশ তাকে বরিশালে গ্রেফতার করে ও ১৯০৮ সালে তার সমিতি নিষিদ্ধ করে।

তাকে ১৯১০ সাল পর্যন্ত লক্ষ্মৌ জেলে বন্দি রাখা হয়। ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধী প্রথম বরিশালে এসে অশ্বিনীকুমার দত্তকে জেলার অদ্বিতীয় নেতা হিসেবে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। কলকাতায় রাজনারায়ণ বসুর প্রভাবে ব্রাহ্মধর্মে আকৃষ্ট হন ও ১৮৮২ সালে বরিশালে ব্রাহ্মসমাজের সদস্যপদ গ্রহণ করেন।

১৯২৩ সালের ৭ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার লেখা বইগুলো হচ্ছে, ভক্তিযোগ, কর্মযোগ, প্রেম, দুর্গোৎসবতত্ত্ব, আত্মপ্রতিষ্ঠা ও ভারতগীতি।