
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তর আজ জন্মদিন
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : জুন ২৬, ২০২৫
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তর আজ জন্মদিন। ১৮৮৭ সালের ২৬ জুন পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার পাতিলপাড়ায় মাতুলালয়ে তার জন্ম। পৈতৃক নিবাস পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় শান্তিপুরের অদূরে হরিপুর গ্রামে।
১৯১১ সালে হাওড়ার শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে তিনি স্নাতক পাশ করেন। এরপর ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে নদীয়া জেলা বোর্ড ও পরে কাশিমবাজার রাজ স্টেটে কাজ করেন।
পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন প্রকৌশলী। নদীয়া জেলা বোর্ড ও কাশিমবাজার স্টেটে ওভারসীয়ার হিসেবে কাজ করেন। বাংলা কাব্যকে সনাতন ভাবালুতা ও রহস্যময়তা থেকে মুক্ত করতে যত্নবান ছিলেন যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত।
কাব্যকে অবাস্তব কল্পনার জগৎ থেকে কঠোর বাস্তবে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তার অবদান অপরিসীম। বোধগম্যতার কারণেই তার কাব্যে ব্যাঙ্গের সুর তীব্র এবং কাব্যের নামকরণও তাই ভিন্নধর্মী।
যতীন্দ্রনাথের কাছে কবিতা ছিল শিল্পকর্ম। তার কাব্য রাচনার মূল আধারই ছিল মানবপ্রেম। সমাজের সর্বহারা, বঞ্চিত, নিপীড়িত, অত্যাচারিত মানুষের জীবনযন্ত্রণাই ছিল তার কাব্যের মুল বিষয়। তর্ক, কটাক্ষ, প্রচ্ছন্ন পরিহাস ছিল তার রচনার বৈশিষ্ট্য।
তার কাব্যগ্রন্থগুলির নামকরণেও জীবনের কঠোর বান্তব চিত্রই ফুটে ওঠে। ১৯২৩ সালে ৩৬ বহুর বয়সে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ মরু মরিচীকা প্রকাশ পায়।
যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত দৈনিক `বসুমতী’ পত্রিকায় ‘বিপ্রতীপ গুপ্ত’ ছদ্মনামে লিখতেন। তার রচিত ‘হাট’ কবিতাটি বাংলা কাব্য সম্ভারে একটি অন্যতম জনপ্রিয় কবিতা যা পরবর্তীকালে বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে অস্তর্ভুক্ত হয়।
যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা কাব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অনুপূর্বা (১৯৪৬), মরুমায়া (১৯৩০), সায়ম (১৯৪০), ত্রিযামা (১৯৪৮), কাব্য পরিমিতি (১৯৩১), মরীচিকা (১৯২৩), মরুশিখা (১৯২৭) ও নিশান্তিকা (১৯৫৭)।
জীবনের শেষ সময়ে তিনি ম্যাকবেথ, হ্যামলেট, ওথেলো, শ্রীমদ্ভগবদগীতা, কুমারসম্ভব ইত্যাদি গ্রন্থের অনুবাদে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৫৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান।