ছয় মাসের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে নৌবাহিনী

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জুলাই ০২, ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনায় সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আগামী ৬ মাস বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। আজ বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “মঙ্গলবার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের থেকে যেটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, ফাইন্যান্সিয়াল অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর বিধি মোতাবেক প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনো সময় অপারেটর নিয়োগ করতে পারবে, অপারেটরের সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের সঙ্গে সাইফ পাওয়ার টেক অনেকগুলো বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছিল। তাদের চুক্তির মেয়াদ শেষে আমরা ৬ মাস বাড়িয়েছিলাম। সেই ৬ মাস শেষ হবে ৭ জুলাই। আমরা তাদের আর মেয়াদ বাড়াচ্ছি না। বন্দর এখন নিজেই পরিচালনা করবে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। বন্দরের যে অন্যান্য কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কারণ লোক তো একই।”

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, “এসব বিবেচনা করে আমরা এতদিন মিটিং করলাম। এখন বন্দরকে অথরাইজ করা হয়েছে বিধি-বিধান ও অর্থনৈতিক সুবিধা বিবেচনা করে তারা ৬ মাস বা এর বেশি সময়ের জন্য অপারেটর নিয়োগ করতে পারবে। বন্দরের এরিয়ায় নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড রয়েছে। সেটি তারা বন্দরের মধ্যেই সম্প্রসারণ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “নৌবাহিনী বন্দর পরিচালনার জন্য বেশি অভিজ্ঞ। তাদের অপারেটর আছে। এখন একটা চিঠি দিয়ে বন্দর পরিচালনার জন্য নৌবাহিনীর সঙ্গে বন্দরের (চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ) চুক্তি হবে। সাইফ পাওয়ার টেক ১৬-১৭ বছর বন্দরে কাজ করছিল। তাদের সহযোগিতা যাতে নৌ-বাহিনী পায়, সেজন্য তারা কাজ করবে বলে আমাকে বলেছে।”

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বন্দর পরিচালনার দায়িত্বে যেই আসুক না কেন বন্দরের কারও চাকরি যাচ্ছে না। যে যেই পদে ছিলেন সেই পদেই কাজ করবে। কাউকে বাদ দেওয়া হবে না। আশা করি সবাই সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করবে। বন্দর পরিচালনার জন্য আমি কি অন্য কোন অপারেটরকে দিতে পারবো না।”

তিনি আরও বলেন, “বাইরের কোনো লোক, আন্তর্জাতিক কোনো কোম্পানি যদি আসতে চায় বিনিয়োগ করতে চায়-তাহলে কি তাকে আমি দিতে পারবো না। এতে কি পোর্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। পোর্টের দায়িত্ব তো কোর্ট অথরিটির কাছেই আছে। আজকে আমি নৌবাহিনীকে দিলাম, নৌবাহিনী না থাকলে পরে আমাকে আরেকজনকে দিতে হবে। তবে দেওয়ার ক্ষেত্রে আমি দেখবো আমার সুবিধা হচ্ছে কি হচ্ছে না।”

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, “যদি দেখি সুবিধা হচ্ছে,  এটার মধ্যে আগের সরকার কি করেছে সেটা ভুলে যান। আমি পরিষ্কার করে বলি, এখনো আলোচনা চলছে। আমার উপরেও কিন্তু একটা নেগোসিয়েশন চলছে। আমাদের ক্ষতি হয় এমন কোন চুক্তি হবে না। আমি যদি এখানে বসে থাকতে থাকতে চুক্তি হয়। অনেকের অনেক রকম সন্দেহ আছে।”

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “তাদের (ডিপি ওয়ার্ল্ড) বলেছি, যদি তোমাদের লোক প্রয়োজন হয় তবে তোমরা উপমহাদেশ থেকে কোন লোক নিতে পারবে না। লোক নিতে হলে বাংলাদেশ থেকে, নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে নিতে হবে। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, তারা একটা বড় বিনিয়োগ নিয়ে আসছে। তারা বর্তমানে ৮৫টি আন্তর্জাতিক বন্দর পরিচালনা করছে।”