ত্রাণ দেওয়ার ফাঁদে ফেলে গাজায় ৪৯ ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জুন ২৫, ২০২৫

ত্রাণ দেওয়ার ফাঁদে ফেলে গাজায় ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে ৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া গাজার বিভিন্ন স্থানে নিহত হয়েছে ৭৯ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছে ২৮৯ ফিলিস্তিনি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইজরায়েরি হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছে লাখ ৩১ হাজার ৮৪৮ ফিলিস্তিনি। হতাহতদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

দুই মাসের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার আগেই ১৮ মার্চ গাজায় আবার হামলা শুরু করে ইজরায়েল। এর পর থেকে ইজরায়েলি হামলায় ৫ হাজার ৭৫৯ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৯ হাজার ৮০৭ ফিলিস্তিনি আহত হয়।

হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, ওয়াদি গাজার দক্ষিণে সালাহ আল-দিন সড়কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে ত্রাণ নিতে গিয়ে ইজরায়েলের সেনাদের গুলিতে ২৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৪০ ফিলিস্তিনি আহত হয়। এদের মধ্যে ৬২ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন।

এছাড়া দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের আলতিনা সড়কে ত্রাণ নিতে গেলে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করে ইজরায়েলি সেনারা। উত্তরের গাজা নগরী ও দক্ষিণের রাফায় ত্রাণ নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদেরও হত্যা করা হয়। সব মিলিয়ে ত্রাণ নিতে গিয়ে মঙ্গলবার ৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ত্রাণ নিতে গিয়ে ১ মাসে ইজরায়েলি বাহিনীর গুলি ও গোলাবর্ষণে অন্তত ৫১৬ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩  হাজার ৭৯৯ ফিলিস্তিনি আহত হয়।

যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইজরায়েল। এতে গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র জিএইচএফ প্রতিষ্ঠা করে ইজরায়েলি বাহিনীর সহায়তায় কিছু এলাকায় ত্রাণ দিচ্ছে, যা ২১ লাখ বাসিন্দার উপত্যকাটির অর্ধাহার-অনাহারে থাকা মানুষের চাহিদার তুলনায় খুবই কম।

দাতব্য সংস্থাগুলোকে বাদ দিয়ে এভাবে ত্রাণ দেওয়ার সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলেছে, গাজায় ত্রাণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন দেশ ও সমালোচনার মুখে মে মাসের শেষ দিকে জিএইচএফ ত্রাণ দেওয়া শুরুর পর থেকে ত্রাণ নিতে প্রতিদিনই ইজরায়লি সেনাদের গুলিতে কয়েক ডজন করে ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি মঙ্গলবার জার্মানির বার্লিনে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “কথিত ত্রাণ দেওয়ার এই ব্যবস্থা একটি ঘৃণ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।” সূত্র: আল জাজিরা ও এপি