‘দেশের ৫৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ কৃষি জমির টেকসই ব্যবহার হচ্ছে না’

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জুন ৩০, ২০২৫

দেশের ৫৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ কৃষি জমি উৎপাদনশীল ও টেকসইভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। উৎপাদনশীল ও টেকসই কৃষি জরিপ ২০২৫ এর প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। আজ সোমবার প্রথমবারের মতো করা জরিপটির ফলাফল প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস সম্মেলন কক্ষে এই প্রকাশনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

বিবিএস-এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আকতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুবুল হক পাটোয়ারী এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব  মোহাম্মদ মাসুদ রানা চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, টেকসই কৃষি পরিসংখ্যান (এসএএস) প্রকল্পের পরিচালক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

বক্তব্য দেন বিবিএসের এগ্রিকালচার উইং এর পরিচালক আলাউদ্দিন এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দীপঙ্কর রায়।

জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৭৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ কৃষি জমি ৩ বছর অর্থাৎ ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে অন্তত একটি বছর লাভজনকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এসব জমিতে কৃষকেরা উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রকৃত অর্থে আয় করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রায় এক তৃতীয়াংশ কৃষক এখনো কৃষি জমির সুরক্ষার বাইরে আছে। এদিকে ৬৯ দশমিক ১৬ শতাংশ কৃষি জমি এমন কৃষক পরিবারের হাতে রয়েছে যারা কোনো না কোনোভাবে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সুবিধার আওতায় রয়েছে। অর্থাৎ কৃষি ঋণ গ্রহণ, কৃষি বীমা কভারেজ ও খামারের বৈচিত্র্যায়ন ইত্যাদি সুবিধা পায়।

মাটির অবক্ষয়ের বিস্তৃতির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, দেশের ৭২ দশমিক ৭৫ শতাংশ কৃষি জমি এমন পরিবারের কাছে রয়েছে যাদের জমির অন্তত ৫০ শতাংশ মাটির অবক্ষয়ের শিকার। এটি জমির গুণগত মানের অবনতি ও দীর্ঘমেয়াদী উৎপাদনের জন্য হুমকি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৮১ দশমিক ৮৬ শতাংশ কৃষি জমি পর্যাপ্ত সেচের পানি পাচ্ছে। এছাড়া ৫৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ কৃষি জমি এমন পরিবারের হাতে রয়েছে যারা সার ব্যবহারের প্রস্তাবিত ৮টি পদ্ধতির মধ্যে দুটি পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। এর থেকে দেখা যায় একটি বড় অংশ এখনো রাসায়নিক সার ব্যবহারের সচেতন নয়।

জমিতে ৫১ দশমিক ৩৭ শতাংশ কৃষি জমিতে কীটনাশক ব্যবহারে টেকসই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা হয়। এখানে একটি বড় অংশ অসচেতনভাবে কীটনাশক ব্যবহার করে। এটা আশঙ্কাজক।

জরিপে দেখা যায়, ৬০ দশমিক ১২ শতাংশ কৃষি জমি এমন অঞ্চলে অবস্থিত যেখানে অদক্ষ শ্রমিকেরা জাতীয় কৃষি মজুরির চেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পায়। যদিও সংখ্যাটি মাঝারি। তবুও কৃষি মজুরি কিছু এলাকায় ভালো পাচ্ছে।

জরিপে আরো দেখা যায়, ৯৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ কৃষি পরিবার গত বছর খাদ্যের ঘাটতি বা সংকটে ছিলেন না। এছাড়া ৮৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ কৃষি জমি এমন কৃষক পরিবারে রয়েছে যারা জমির স্থায়ী মালিক।